নোবেল জয়ী অধ্যাপক ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার শুক্রবার সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের ওপর সাম্প্রতিক সহিংসতা ও হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। সরকার নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, দেশের সংকটময় রাজনৈতিক পরিস্থিতি চলছে। এই সময় দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাওয়া উগ্রপন্থীরা যে ধরনের জনরোষমূলক কর্মকাণ্ড করেছে তা প্রতিহত করার জন্য আবেদন জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
শুক্রবার দুপুরে জারি করা এক বিবৃতিতে সরকারের তরফে বলা হয়েছে, তারা সব ধরনের হিংসা, ভয়ভীতি প্রদর্শন, অগ্নিসংযোগ এবং সম্পত্তি ধ্বংসের ঘটনার “তীব্র ও দ্ব্যর্থহীন” নিন্দা জানাচ্ছে। বিবৃতিতে জোর দিয়ে বলা হয়েছে যে বাংলাদেশ বর্তমানে একটি ঐতিহাসিক গণতান্ত্রিক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এটি কোনোভাবেই বিশৃঙ্খলা বা ঘৃণার দ্বারা ব্যাহত হতে দেওয়া যাবে না। আসন্ন নির্বাচন ও গণভোটের কথা উল্লেখ করে সরকার বলেছে, এগুলো কেবল রাজনৈতিক অনুশীলন নয়, বরং একটি “পবিত্র জাতীয় অঙ্গীকার”। এটি সেই আদর্শের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত যার জন্য ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদী নিহত হয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তার আত্মত্যাগকে সম্মান জানাতে হলে সংযম, দায়িত্বশীলতা এবং সম্মিলিতভাবে সহিংসতা প্রত্যাখ্যান করা প্রয়োজন।
গণমাধ্যমের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে সরকার বলেছে, তারা দ্য ডেইলি স্টার, প্রথম আলো এবং নিউ এজ-এর সাংবাদিকদের পাশে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া যাদের কার্যালয় ও কর্মীরা এই অস্থিরতার সময় হামলার শিকার হয়েছে তাদের প্রতিও সহানুভূতি জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আপনারা যে সন্ত্রাস ও হিংসার শিকার হয়েছেন, তার জন্য আমরা গভীরভাবে দুঃখিত।” এতে আরও বলা হয়, সাংবাদিকদের ওপর হামলা মানে সত্যের ওপরই হামলা। সরকার এই ঘটনার জন্য দায়ীদের পূর্ণাঙ্গ বিচারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিবৃতিতে ময়মনসিংহে একজন হিন্দু ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনারও নিন্দা জানানো হয়েছে এবং এটিকে একটি জঘন্য অপরাধ বলে বর্ণনা করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে যে “নতুন বাংলাদেশে এ ধরনের সহিংসতার কোনো স্থান নেই।” এতে বলা হয়েছে, দায়ীদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে সরকার নাগরিকদের প্রতি সহিংসতা, উস্কানি এবং ঘৃণা প্রত্যাখ্যান করে এবং শান্তি, গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের পক্ষে দাঁড়িয়ে হাদীর স্মৃতিকে সম্মান জানানোর আহ্বান জানিয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন