সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমের হাতে আসা নতুন উচ্চ-রেজোলিউশনের স্যাটেলাইট চিত্রে পাকিস্তানের মুরিদ বিমানঘাঁটির একটি গুরুত্বপূর্ণ কমান্ড ও কন্ট্রোল ভবনে ব্যাপক পুনর্নির্মাণ কার্যক্রম দেখা গিয়েছে। গত ১০ মে ভোরের দিকে অপারেশন সিন্দুর চলাকালীন ভারতীয় বিমানবাহিনী দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিল এই জায়গাটি।
এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ভ্যান্টর থেকে প্রাপ্ত ছবিটি ১৬ ডিসেম্বরের এবং এতে দেখা যাচ্ছে একটি বড় লাল ত্রিপল দিয়ে ভবনটি ঢাকা রয়েছে। এটি একটি বড় কমপ্লেক্সের পাশে অবস্থিত যেখানে পাকিস্তান মনুষ্যবিহীন বিমান (ইউএভি) পরিচালনা করে। ধারণা করা হচ্ছে, ভারতীয় বিমানবাহিনীর হামলায় ভবনের ছাদের কিছু অংশ ধসে পড়েছে, ব্যাপক কাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে এবং সম্ভবত অভ্যন্তরেও ধ্বংসযজ্ঞ ঘটেছে। এই বছরের জুন মাসের হামলার পরবর্তী ছবিগুলোতে দেখা যায়, সেই সময়ে ভবনের একটি অংশ একটি ছোট সবুজ ত্রিপল দিয়ে ঢাকা ছিল। এখন পুরো কাঠামোটি একটি বড় ত্রিপলের নিচে মেরামত বা পুনর্নির্মাণের অধীনে রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। সামরিক বাহিনীগুলো সাধারণত মেরামত কাজ, ধ্বংসাবশেষ অপসারণ বা সংবেদনশীল ক্ষতি স্যাটেলাইট নজরদারি থেকে আড়াল করার জন্য ভারী ত্রিপল ব্যবহার করে।
মুরিদে ভারতীয় বিমানবাহিনীর হামলার প্রাথমিক ছবিগুলোতে ছাদের নির্দিষ্ট কিছু অংশ ধসে পড়তে দেখা গিয়েছিল। যদিও ভারতীয় বিমানবাহিনী নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার জন্য ব্যবহৃত অস্ত্রের বিষয়ে কখনও কিছু প্রকাশ করেনি। তবে মুরিদের হামলার পরবর্তী চিত্রগুলো ছাদ ভেদকারী ওয়ারহেডযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র, যেমন বিলম্বিত ফিউজ পেনিট্রেটর বহনকারী নির্ভুল নির্দেশিত ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়। পেনিট্রেটর অস্ত্রগুলো সাধারণত একটি শক্ত বা আধা-শক্ত কাঠামোর ছাদে উচ্চ গতিতে আঘাত হানে, এবং এর গতিশক্তির মাধ্যমে কংক্রিট বা ধাতব ছাদ ভেদ করে। ভবনের ভেতরে প্রবেশ করার পর একটি উচ্চ-বিস্ফোরক পেলোড বিস্ফোরণের আগে এটি শক্তি এবং শক্ত খোলস ব্যবহার করে। এটি কাঠামোর অভ্যন্তরে ক্ষয়ক্ষতিকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যায়।
২০২৫ সালের মে মাসে পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতের সময় ভারত এই ভবনটিকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল বলে খবর। সেই সময় স্যাটেলাইট চিত্রে এর ছাদে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি দেখা গিয়েছিল। পাকিস্তান প্রাথমিকভাবে শুধুমাত্র ক্ষতিগ্রস্ত অংশগুলিতেই ত্রিপল দিয়ে ঢেকেছিল। কারণ তখন কাঠামোগত এবং ক্ষতির মূল্যায়ন চলছিল। স্যাটেলাইট চিত্র বিশেষজ্ঞ ড্যামিয়েন সাইমন একথা জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, "এখন ভবনটি নতুন ত্রিপল এবং নির্মাণ জাল দিয়ে সম্পূর্ণরূপে আবৃত থাকায়, সম্ভবত পুনর্নির্মাণের কাজ অবশেষে শুরু হয়েছে। ভবনটির চারপাশে সুরক্ষার ব্যাপকতা থেকে এটাও বোঝা যায় যে, আগে যা ধারণা করা হয়েছিল তার চেয়ে সাইটটিতে অভ্যন্তরীণ ক্ষতি সম্ভবত বেশি হয়েছিল।"

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন