মিনাখা: বলা হয়, গর্ভে থাকা শিশুকে গর্ভাবস্থায় মা মানুষ করার ক্ষমতা রাখেন। গর্ভের খুদে বুঝতে পারে মায়েরও মন। মিনাখা রেবাকা খাতুন নজির গড়লেন তাঁর সদ্যোজাতোর কাছেই। কারণ, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী রেবেকা খাতুনের গর্ভ যন্ত্রণা শুরু হয় মাধ্যমিক পরীক্ষার একদিন আগেই। সন্তান জন্ম দেওয়ার পরই আর বিশ্রাম নয়। সার্বিক শারীরিক যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালের বেডে বসেই পরীক্ষা দেওয়ার সাহস দেখালেনম রেবেকা। পুলিশি নিরাপত্তায় চিকিত্সকদের নজরদারিতে রেবেকা খাতুন পরীক্ষা দিলেন। পাশেই খুদে চোখের সদ্যোজাত। যার মা তার সামনে রাখছে এক অসাধারণ নজির।
মাধ্যমিক মাদ্রাসা বোর্ডের আরবি পরীক্ষার ঠিক আগেই প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয় রেবেকার। দক্ষিণ চোব্বিষ পরগণা র কাশিপুর থানার সাতুলিয়ার সিনিয়র মাদ্রাসার ছাত্রী রেবেকা। সন্তান জন্ম দেওয়ার পরই পরীক্ষা দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন নাবালিকা মা। তখনই শ্বশুর বাড়ির উদ্যোগেই রেবেকার স্কুলের সঙ্গে যোগাযাগ করা হয়। রেবেকারা ইচ্ছেকে গুরুত্ব সহকারে দেখে স্কুল কর্তৃপক্ষ।শিক্ষকদের তত্পরতায় মিনাখার হাসপাতালের বেডে বসেই পরীক্ষা দিলেন রেবেকা।
দেড় বছর আগে বসিরহাটের মিনাখাঁ থানা এলাকার যুবকের সঙ্গে বিয়ে হয় রেবেকা খাতুনের। স্কুলে পড়ার মাঝে বিয়ে, শ্বসুর বাড়ির সম্পূর্ণ সহযোগিতায় রেবেকার পড়াশোনা চালাতে কোনওরকম বাধা আসেনি। তাই এবারও সদ্য মা রেবেকার পাশে দাঁড়াল তাঁর দুই পরিবার। পরীক্ষা দিলেন রেবেকা। তাঁর এই সাহস ও উদ্যমকে কুর্ণিশ জানিয়েছেন তাঁর শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে সহপাঠীরা। পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া শুধু নয়, খুব দর্পের সাথে জানান দেওয়া লেখাপড়ার প্রয়োজনীয়তা, এই অনুধাবন করেই রেবেকা এগোচ্ছেন। তাঁর সদ্য শিশু সেই শিক্ষা নিয়েই উদযাপন করছে তার মায়ের কোল আলো করে আসা। শিক্ষার আলো থাক, মায়ের মনে সেই শিক্ষার আলো মেখে নেওয়ার শক্তি থাক।