নিজস্ব প্রতিনিধি: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্য রাজনীতিতে বিগত কয়েক মাস ধরেই সবচেয়ে চর্চিত বিষয় হয়ে উঠেছেন দুই শিবিরে অন্যতম প্রধান দুই নেতা। প্রতিটি জনসভায় বা সাংবাদিক সম্মেলনে একে অপরের নাম করে বা নাম না করে নিয়মিত নিশানা করে চলেছেন। বিশেষ করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী প্রায় প্রতিদিনই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে নজিরবিহীন আক্রমণ করার পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করছেন। সদ্য শুভেন্দু নাম না করে যথারীতি ‘ভাইপো’ বলে নিশানা করে বলেছেন, নোটবন্দির সময় তিনি নাকি হাজার ও পাঁচশো টাকার নোটে এক হাজার কোটি টাকা দলের নেতা, পুলিশদের দিয়ে বদল করিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে শুভেন্দুর দাবি এই সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য প্রমাণ তাঁর কাছে নাকি আছে। যথারীতি তার পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূল। একই ভাবে প্রত্যেকটি ইস্যুতে তৃণমূলের নেতামন্ত্রী বা দলীয় মুখপাত্ররা বারবার শুভেন্দুকে আক্রমণ করছেন। বস্তুত রাজ্য রাজনীতির সাম্প্রতিক ছবিটা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, যুযুধান দুই পক্ষের নিশানায় মূলত থাকছেন শুভেন্দু এবং অভিষেক। সেখানে রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের পাশাপাশি তৃণমূলের অন্যান্য নেতামন্ত্রীরাও যেন হঠাৎ করে চর্চায় কম আসতে শুরু করেছেন।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন শুভেন্দু। সেদিন মেদিনীপুর কলেজ ময়দানের সভা থেকেই অভিষেককে তীব্র আক্রমণ করেছিলেন তিনি। কথায় কথায় শুভেন্দুকে বলতে শোনা যায় ‘তোলাবাজ ভাইপো হটাও’। পাল্টা অভিষেক কখনও নাম করে বা নাম না করে শুভেন্দুকে ‘চোর’ বলছেন। তৃণমূলের বক্তব্য শুভেন্দুর যদি সৎ সাহস থাকে তাহলে তিনি কেন সরাসরি নাম করে অভিষেককে আক্রমণ করছেন না? কেন আইনি জটিলতার হাত থেকে বাঁচার জন্য ভাইপো বলে নিশানা করছেন?
রাজনীতিতে শাসক বিরোধীর তরজা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে দেখা যাচ্ছে শুভেন্দু-অভিষেকের মধ্যে ব্যক্তি আক্রমণের পালা চলছে। সেখানে রাজনৈতিক কারণের থেকে ব্যক্তি আক্রমণ অনেক বেশি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। যেটা অতীতে বাংলার রাজনীতিতে দেখা যায়নি। পশ্চিমবঙ্গে যে কোনও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড হলেই সেখানে চলে আসছে শুভেন্দু এবং অভিষেকের প্রসঙ্গ। তাই এটা বলাই যেতে পারে যে এই মুহূর্তে রাজ্য রাজনীতির ভরকেন্দ্র হয়ে উঠেছেন শুভেন্দু এবং অভিষেক। পঞ্চায়েত নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে সেই প্রবণতা যে আরও বাড়বে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।