কলকাতা: ৯৪ বছর বয়সে প্রয়াত স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ তথা ভারতের কৃত্রিম প্রজনন বিদ্যার অন্যতম পথপ্রদর্শক বৈদ্যনাথ চক্রবর্তী। বিগত কিছু দিন ধরেই রোগে ভুগছিলেন তিনি। ভর্তি ছিলেন দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে। আজ সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে শোকের ছায়া বাংলা তথা দেশের চিকিৎসক মহলে। ইতিমধ্যেই শোকজ্ঞাপন করে বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন- বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কোর্টের সামনে আইনজীবীদের বিক্ষোভ, ঘেরাও
মার্চ মাস থেকে একাধিক রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন চিকিৎসক বৈদ্যনাথ চক্রবর্তী। শুরুতে সেরিব্রাল স্ট্রোক, তারপর নিউমোনিয়া, শেষ কোভিডও হয়েছিল তাঁর। জানা গিয়েছে, গত বছর মূত্রনালিতে সংক্রমণও ধরা পড়েছিল চিকিৎসকের। কিন্তু পরে কিছুটা সুস্থ হয়ে তিনি বাড়ি ফিরেছিলেন। করোনার আক্রআন্ত হওয়ার পরেও তিনি প্রাথমিকভাবে সুস্থ হন। কিন্তু সেই সুস্থতা বেশিদিন থাকেনি। কয়েকদিন আগে শারিরীক অসুস্থতা বাড়তে থাকায় আবার হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। সেখান থেকে আর ফিরে আসতে পারলেন না। শুক্রবার সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন এই স্বনামধন্য চিকিৎসক।
তাঁর প্রয়াণে ইতিমধ্যেই শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শোকবার্তায় তিনি লিখেছেন, কৃত্রিম উপায়ে প্রজনন অর্থাৎ নলজাতক গবেষণা ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন পথপ্রদর্শক। তাঁর মৃত্যুতে চিকিৎসা ও গবেষণা জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল। বৈদ্যনাথ চক্রবর্তীর আত্মীয়-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছেন তিনি। চিকিৎসক মহলও তাঁর মৃত্যু মেনে নিতে পারছে না সহজে। অনেকেই বলছেন, তাঁর থেকে অনেক কিছু শিখেছেন, আরও অনেক কিছু শেখা বাকি ছিল।
আরও পড়ুন- ‘ধর্ষণ করেছে তৃণমূল নেতার ভাগ্নে, ছেলে ফেঁসে গিয়েছে’ হাঁসখালি কাণ্ডে ফাঁস বিস্ফোরক অডিয়ো
দেশজুড়ে আইভিএফ চিকিৎসার অন্যতম পরিচিত নাম ছিল এই বৈদ্যনাথ চক্রবর্তী। ১৯৮৬ সালে বাংলায় প্রথম তাঁর হাত ধরে টেস্ট টিউব বেবির জন্ম হয়। এছাড়াও সেই বছর তাঁর হাত দিয়ে তৈরি হয় ‘ইনস্টিটিউট অফ রিপ্রোডাকটিভ মেডিসিন (আইআরএম)’। বছর তিনেক আগে আইসিএমআর-এর হাতে ওই প্রতিষ্ঠানটি তুলে দেন তিনি। কৃত্রিম উপায়ে প্রজনন অর্থাৎ নলজাতক নিয়ে গবেষণা এবং চিকিৎসার জন্য ‘ইনস্টিটিউট অব রিপ্রোডাকটিভ মেডিসিন’ প্রতিষ্ঠান গড়েন বৈদ্যনাথ চক্রবর্তী। ২০১৯ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে ‘বিশিষ্ট চিকিৎসা সম্মান’ (লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড)-এ ভূষিত করে।