কলকাতা: ‘বিচারব্যবস্থার এক শতাংশকে’ নিশানা করে মন্তব্য করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ। সেই অভিযোগেই আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়েছিল হাইকোর্টে। এবার সেই মামলা খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী দত্ত জানান, জরুরি ভিত্তিতে এই মামলার শুনানির কোনও প্রয়োজন নেই। সোমবার সকালে দুই আইনজীবী স্বতঃপ্রণেদিত প্রণোদিত মামলা দায়ের করার আরজি জানান। মামলকারীর দাবি, বিচারপতিকে নিয়ে মন্তব্য করাটা অন্যায়৷ সেই কারণেই অভিষেকের বিরুদ্ধে আদালত স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করুক। কিন্তু সেই আবেদনই এবার খারিজ করে দিল হাইকোর্ট৷
গত শনিবার ঘটনার সূত্রপাত। হলদিয়ার জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে সরাসরি রাজ্যের বিচারব্যবস্থার ‘এক শতাংশ’ নিয়ে মন্তব্য করেন অভিষেক। শনিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমার বলতে লজ্জা লাগে বিচারব্যবস্থায় ১-২ জন এমন আছেন, যাঁরা সম্পূর্ণ যোগসাজশ করে তল্পিবাহক হিসাবে কাজ করছেন। এটা ১ শতাংশ হবে। কিছু হলেই সিবিআই দিচ্ছে। খুনের মামলায় স্থগিতাদেশ দিচ্ছে। শুনেছেন কোনওদিন? আদালত নিরাপত্তা দিতে পারে। অধিকার আছে। তা বলে স্থগিতাদেশ? আপনার যদি মনে হয় সত্যি কথা বলার জন্য ব্যবস্থা নেবেন তো নিতে পারেন। আমার তাতে কিছু যায় আসে না। ক্যামেরার সামনে সত্যি কথা ২ হাজার বার বলব। ১০ হাজার বার বলব। সত্যি বলতে আমার বিবেকে বাধে না।’
রবিবার এই ঘটনার তীব্র প্রতিক্রিয়া দেন রাজ্যপাল। বাগডোগরা বিমানবন্দরে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, এক সাংসদ প্রতিষ্ঠানিক বিচারব্যবস্থাকে আক্রমণ করেছেন। এই ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয় বলেও তিনি উল্লেখ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, সাংসদ বিচার ব্যবস্থাকে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। রাজ্যপালের এই মন্তব্যের কয়েকঘণ্টার মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিক্রিয়া দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লেখেন, ‘আমি সব সময় সত্যি কথা বলতে পছন্দ করি। কলকাতা হাইকোর্টের এক শতাংশ কয়েকজনকে রক্ষা করার জন্য কাজ করছে। কলকাতা হাইকোর্টের এক শতাংশ কেন্দ্রের সঙ্গে কাজ করছে। কীভাবে এই কাজ হচ্ছে, গতকাল সেকথাই বলেছিলাম।’ এই অভিষেকের এই মন্তব্যের জেরে দায়ের হাওয়া মামলাই খারিজ হয়ে গেল কলকাতা হাইকোর্টে৷