কলকাতা ও হলদিয়া: তৃণমূলে যোগ দিতে চান নন্দীগ্রাম-কাণ্ডের ‘নায়ক’ লক্ষ্মণ শেঠ। সোমবার ছিল লক্ষ্মণ শেঠের ৭২তম জন্মদিন। আর সেই জন্মদিনের অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নিজের এই মনবাঞ্ছার কথা প্রকাশ্যে এনেছেন তিনি৷ বলেছেন, “তৃণমূলে যোগদানের ইচ্ছে আছে। আমার ইচ্ছের কথা আমি জানিয়েছি।” তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শের পক্ষে। জনকল্যাণ মূলক কাজের প্রতি তিনি খুবই উদ্যোগী।” বলেছেন, ‘‘নেত্রী চাইলে আমি তৃণমূলে যোগ দিতে তৈরি!’’
বস্তুত, প্রায় দেড় দশক আগে হলদি নদীর পাড়ে নন্দীগ্রামে ঘটা হত্যাকাণ্ডের অন্যতম প্রধান নায়ক হিসেবে অভিযুক্ত লক্ষ্মণ শেঠ৷ সোমবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হলদিয়া থেকে নিজের এমনই বিস্ফোরক ‘বাসনা’র কথা সামনে এনেছেন সিপিএমের একসময়ের দোর্দণ্ডপ্রতাপ সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠ। লক্ষ্মণবাবুর এহেন বক্তব্য সামনে আসার পরই রাজ্য রাজনীতিতে, বিশেষত পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় জোর তোলপাড় শুরু হয়েছে৷ ইতিমধ্যে তৃণমূলের অন্দরেই নেতা, কর্মীরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন৷ বস্তুত, ২০০৭ সালে সালিম গোষ্ঠীর কেমিক্যাল হাব নির্মাণের জন্য সেই সময় নন্দীগ্রামের উর্বর জমিকে যিনি বেছে দিয়েছিলেন, তার নাম লক্ষ্মণ শেঠ৷ হলদিয়া ডেভলপমেন্ট অথিরিটির তৎকালীন চেয়ারম্যান তথা তমলুকের সাংসদ ছিলেন লক্ষ্মণ৷ অভিযোগ, রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ অমান্য করে জোর করে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে৷
এমনকি ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ গভীর রাতে নন্দীগ্রামে পুলিশ ঢোকানোর ব্লু প্রিন্টও ছিল লক্ষ্মণর৷ সিপিএমের অন্দরে ঢুঁ মারলেই এমন কথা এখনও শোনা যায়৷ ওই দিন রাতের পুলিশ অভিযানে ১৪ জন নিরীহ আন্দোলনকারীর মৃত্যু রাজ্য রাজনীতিতে পালাবদলের ক্ষেত্রে বড়সড় ভূমিকা নিয়েছিল বলেই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের৷ পরে একাধিকবার তৎকালীন বাম মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য দাবি করেছিলেন, ‘‘নন্দীগ্রামে পুলিশ ঢোকার কথা তিনি জানতেন না৷’’ এহেন লক্ষ্মণ শেঠ দলে ঢুকলে তৃণমূলের অন্দরে বিদ্রোহ কোন পর্যায়ে পৌঁছাবে তা নিয়েই চলছে চর্চা৷