কলকাতা: চিকিৎসাবিজ্ঞান অনেক উন্নত হয়েছে। অনেক দুরারোগ্য ব্যাধি এখন নিরাাময়ের দিকে। কিন্তু তারপরেও অনেকক্ষেত্রে মানুষ জ্যোতিশাস্ত্রের দিকে ঝুঁকছে রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে। দিনরাত টেলিভিশনে জ্যোতিষ বিজ্ঞাপণে দাবি করা হচ্ছে, দুরারোগ্য ব্যাধি সেরে যাবে। এর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটক সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে এখনও জ্যোতিষের এই বিজ্ঞাপণ বন্ধ করার কোনও আইন পাস হয়নি। এই ধরনের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করতে আইন পাসের দাবি জানিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা করা হয়। আগামী ৪ জুলাই এই মামলার শুনানি।
টেলিভিশনে মাঝে মাঝে জ্যোতিষের বিজ্ঞাপন দেখা যায়। সেখানে একাধিক প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। সুসময় ফিরিয়ে আনা বা কর্মক্ষেত্রে সাফল্য যোগ, অথবা বিয়ের যোগের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। টেলিভিশনে জ্যোতিষের বিজ্ঞাপণগুলোতে এর পাশাপাশি মারাত্মক দাবি করা হয়। কঠিন থেকে কঠিন রোগ জ্যোতিষ চর্চার মাধ্যমে সারিয়ে দেওয়া সম্ভব বলেও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় টেলিভিশনের বিজ্ঞাপনগুলোতে। চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা অনেকের ক্ষেত্রেই সাধ্যের বাইরে হয়। কিংবা জ্যোতিষের চটকদারি বিজ্ঞাপণে অনেকেই ভুল পথে চালিত হন। তাঁরা দুরারোগ্য ব্যাধি সারাতে জ্যোতিষের শরণাপন্ন হন। এর ফল হয় মারাত্মক। এরই বিরোধিতা করে আদালতে জনস্বার্থ মামলা করা হয়েছে। দাবি জানানো হয়েছে যেন আইন করে টেলিভিশনে জ্যোতিষের বিজ্ঞাপণ বন্ধ করা হয়।
অনেকক্ষেত্রেই সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের অভিযোগ করতে দেখা যায়, রোগ নির্ণয়ের পরে অনেকে চিকিৎসা ছেড়ে জ্যোতিষের শরণাপন্ন হন। কিন্তু রোগীর পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ার কারণে পরে ফের চিকিৎসকদের কাছে তাঁরা ফিরে আসেন। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, বিনা চিকিৎসায় রোগীর অবস্থার অনেকটা খারাপ হয়ে গিয়েছে। সময় মতো চিকিৎসা না করানোর জন্য রোগীদের মৃত্যুর হাত থেকে ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ চিকিৎসকরা। এই ঘটনা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। মানুষের অজ্ঞতাকে হাতিয়ার করে অনেক ক্ষেত্রে জ্যোতিষ ব্যবসা ফেঁদে বসছে। যার ফলে বিনা চিকিৎসায় প্রাণ হারাচ্ছেন বহু রোগী। এই ঘটনা আইন করে বন্ধ করতে উদ্যোগী হয়েছেন রাজ্যের একাংশ।