‘ধোলাই হবে, পেটাই হবে’ বেলাগাম অসিত, ‘বদল নয় বদলা’, হুঙ্কার কল্যাণের, সংযমের বার্তা ফিরহাদের

‘ধোলাই হবে, পেটাই হবে’ বেলাগাম অসিত, ‘বদল নয় বদলা’, হুঙ্কার কল্যাণের, সংযমের বার্তা ফিরহাদের

কলকাতা: কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহারের অভিযোগে সোচ্চার তৃণমূল কংগ্রেস৷ জেলায় জেলায় চলছে বিক্ষোভ৷ পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারের মাঝেই হুমকি-হুঙ্কার তৃণমূল নেতাদের৷ তাঁদের চোখা চোখা শব্দ বাণে উত্তপ্ত বঙ্গ রাজনীতি৷ যেখানে তৃণমূল নেতৃত্ব বলছে, দুর্নীতির বিষয়ে জিরো টলারেন্স, সেখানে দলীয় নেতাদের এই হুমকি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে৷

আরও পড়ুন- স্বাধীনতা দিবসের আগে পাল্টে গেল মমতার প্রোফাইল পিকচার, তিরঙ্গার সঙ্গে দিলেন ৩০ বিপ্লবীর ছবি

এদিন সুর চড়িয়ে চুঁচুড়ার সভা থেকে শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মমতাদি একটা ভুল করেছিল৷ উনি বলেছিলেন, ‘‘বদলা নয় বদল চাই৷ আমি বলছি বদল নয়, বদলা চাই৷’’  তিনি আরও বলেন, ‘‘দিদি আপনি যে মানসিকতা নিয়ে বলেছিলেন, সেই মানসিকতা বিরোধী দলের নেই৷ আপনার হৃদয় অনেক বড়৷ আজ সিপিএম-বিজেপি-কংগ্রেস যে নোংরামি করছে, তাতে সেদিনই বলা উচিত ছিল বদলার বদলে বদলা৷’’  

অন্যদিকে, সুর চড়ান চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার৷ কেউ চোর বললে পাল্টা হবে, হুঙ্কার অসিতের৷ রাজনৈতিক উষ্ণতার পারদ চড়িয়ে তিনি বলেন, ‘‘কেউ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অসম্মান করলে পাল্টা দেবেন তো?’’ শনিবার ঘড়িরমোড়ের ওই সভায় তাঁর স্লোগান “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে কুৎসা হলে ধোলাই হবে, পেটাই হবে। অভিষেকের নামে কুৎসা হলে ধোলাই হবে, পেটাই হবে।”  বেলাগাম তৃণমূল বিধায়ক৷

তৃণমূল নেতাদের এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘ক্ষমতায় থাকার মদমত্ততা আমরা দেখেছি৷ বিজেপি কোনও মিছিল বার করলে উনি পাল্টা মিছিলের নির্দেশ দিতেন৷ যে দিক দিয়ে হোক মিছিল বার করে ঝামেলা করাই ছিল লক্ষ্য৷ এমনকী নিজে লাঠি হাতে বিজেপি কর্মীদের উপর চড়াও হয়েছিলেন৷’’ দিলীপের পাল্টা হুঁশিয়ারি, ‘‘পুলিশ সরে গেল গায়ে জামা-কাপড়টাও থাকবে না৷ মানুষ জুতো-চপ্পল ছোড়া শুরু করেছে৷ আর কী কী ছুড়বে তার জন্য অপেক্ষা করুন৷’’  

অন্যদিকে, বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘তৃণমূল নেতারা এটা বুঝে গিয়েছে যত বেশি দাপট দেখাবে, তত বড় নেতা হওয়া যাবে৷ যত বেশি দাপট তত বড় পোস্ট, তত বেশি দিনের জন্য জেলা সভাপতি, তত বেশি দিনের জন্য কোটি কোটি টাকা৷ সেই সাম্রাজ্য এখন কে দখল নেবে তার প্রতিযোগিতা চলছে৷ তৃণমূলের অন্দরে তা নিয়ে লাফালাফি শুরু হয়েছে৷ কিন্তু ওঁরা বুঝতে পারছে না, খুঁটিটা আলগা হয়ে যাচ্ছে৷’’ 

এই রাজনৈতিক ডামাজোলের মাঝেই সংযমের বার্তা দিলেন ফিরহাদ হাকিম৷ তিনি বলেন, ‘‘বিরোধীরা অসভ্যতা করছে, নোংরামী করছে৷  আইন আইনের পথে চলবে৷ তদন্ত নিজের মতো এগোবে৷ কেউ অন্যায় করলে শাস্তি পাবে৷ আমাদের সকলের একটা সামাজিক সম্মান রয়েছে৷ সেই সম্মান হরণের অধিকার ভারতের সংবিধানেও নেই৷ এটা বিরোধী দলের নেতারা বুঝতে পারছেন না৷ সকলের ধৈর্য সমান নয়৷ অনেকেরই ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায়৷ তাও বলব সংযত থাকুন৷ মানুষ ঠিক করবে কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল৷’’