চালকল থেকে পেট্রল পাম্প! কোথায় কোথায় কত সম্পত্তি রয়েছে অনুব্রতর নামে?

চালকল থেকে পেট্রল পাম্প! কোথায় কোথায় কত সম্পত্তি রয়েছে অনুব্রতর নামে?

কলকাতা: মুদি দোকানি থেকে মাছ বিক্রেতা৷ সেখান থেকে বীরভূমের বেতাজ বাদশা অনুব্রত! কী ভাবে সম্ভব? বরাবরই তাঁর দিকে আঙুল তুলেছেন বিরোধীরা৷ কিন্তু, তৃণমূলের একাংশের দাবি, সবটাই মিথ্যে দাবি৷ সত্যিটা  আসলে কী তা এখনও প্রমাণিত নয়৷ তবে সিবিআই-এর দাবি, কেষ্টর বিরুদ্ধে যথেষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণ রয়েছে তাঁদের হাতে৷ তার ভিত্তিতেই বৃহস্পতিবার বোলপুরের বাড়ি থেকে বীরভূমে তৃণমূল জেলা সভাপতিকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তাকারী সংস্থার অফিসাররা৷ 

আরও পড়ুন- বাড়িতে ঝুলছে তালা, ‘দুর্গা পুজোয় আসবে তো কেষ্ট?’ সংশয়ে অনুব্রতর গ্রামবাসীরা

কয়েক মাস আগে গ্রেফতার হন অনুব্রতর দেহরক্ষী সায়গল হোসেন৷ বিভিন্ন জায়গায় সায়গলের বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির হদিশ পায় সিবিআই৷ বিরোধীদের দাবি, বিপুল সম্পত্তির মালিক অনুব্রতও৷ সিবিআই সূত্রে খবর, বীরভূমে এবং বর্ধমানে বেশ কয়েকটি রাইস মিল রয়েছে কেষ্টর। দেহরক্ষী সায়গলের ফোন থেকেই এই রাইস মিলগুলির মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন তৃণমূলের এই দোর্দণ্ডপ্রতার নেতা৷ ফোনে কথা বলেই এই রাইস মিলগুলির মালিকানার নির্দিষ্ট অংশ নিজের নামে করেছিলেন তিনি৷ রাইস মিল ছাড়াও ছয়টি পেট্রল পাম্পের মালিকের সঙ্গে একই ভাবে অনুব্রত যোগাযোগ ছিল কিনা, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে সিবিআই। তদন্তকারী অফিসারদের একাংশের অনুমান, এই পাম্পগুলির মালিক খাতায় কলমে অন্য ব্যক্তি হলেও, এগুলির সঙ্গে জড়িত ছিলেন অনুব্রতও৷ তবে বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষ বলেও জানাচ্ছেন তদন্তকারী অফিসাররা। 

এছাড়াও সিবিআই নজরে বীরভূমের একটি মেডিক্যাল কলেজ, জমি, বাংলো, হোটেল, গেস্ট হাউস এবং একাধিক ডাম্পারের মালিকানা৷ সরকারি নথিতে এই সম্পত্তিগুলির একটিরও মালিক নন অনুব্রত৷ কিন্তু, কোনও না কোনও ভাবে এই সম্পত্তিগুলির সঙ্গে জড়িয় রয়েছেন কেষ্ট৷ তেমনই সন্দেহ গোয়েন্দাদের৷ এই দিকটিও খতিয়ে দেখছেন তাঁরা। এখনই এই সকল সম্পত্তি নিয়ে নির্দিষ্ট কোনও তথ্য দিতে নারাজ সিবিআই। 

বৃহস্পতিবার গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার করা হয় অনুব্রত মণ্ডলকে। সিবিআই সূত্রে দাবি, গরু পাচার চক্রের মূল পাণ্ডা এনামুলের সঙ্গে কোটি কোটি টাকার ডিল হত কেষ্টর৷ অঙ্কটা নেহাত কম নয়৷ বছরে  ২৪ কোটি টাকা৷ বৃহস্পতিবার সকালে গ্রেফতার করার পর গভীর রাতে অনুব্রতকে নিয়ে আসা হয় নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে। জানা গিয়েছে, শুক্রবার দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাঁকে। এদিন স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাঁকে নিয়ে আসা হয় কমান্ড হাসপাতালে। 

এদিকে, অনুব্রতর গ্রেফতারির পর থেকেই থমথমে বোলপুর৷ বাবার গ্রেফতারির পর থেকে কেঁদেই চলেছেন অনুব্রত কন্যা সুকন্যা। অনুব্রত মণ্ডলের এক প্রতিবেশীর কথায়, ” সারাদিনই কান্নাকাটি করছে ও৷ ঠিক মতো খাওয়া-দাওয়াও করছে না। আপাতত ওর পাশে নিকট আত্মীয়রা রয়েছে। তাঁরাই সুকন্যাকে শান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে।”