কলকাতা: রাত তখন পৌনে তিনটে হবে৷ আচমকা ঘরে ঢুকে এল জনা ছয় লোক৷ ঢুকেই তাদের দাবি, খিদে পেয়েছে৷ খাবার চাই৷ এদিকে ঘুমের মধ্যে আচমকা আগুন্তুকের উদয়ে বাড়ির সদস্যদের তখন চক্ষু ছানাবড়া৷ এদিকে হিন্দিভাষী ওই আগুন্তুকদের তখন পেটে খিদের আগুন৷ তাই বাড়ির লোকদের জন্য অপেক্ষা না করে নিজেরাই রেফ্রিজারেটর খুলে টপাপট মুখে পুড়ে দিল রসগোল্লা৷ তারপর ঠাণ্ডা পানীয়ের বোতল সাবার করেই বার করল আগ্নেয়াস্ত্র৷ মাথায় বন্দুকের নলে ঠেকিয়ে টাকা-পয়সা, গয়না লুট করে পালায় দুষ্কৃতীর দল৷ না, কোনও সাধারণ গৃহস্থ বাড়ি নয়৷ গতকাল রাতে চোর ঢুকেছিল খোদ শাসক দলের ব্লক সভাপতির বাড়িতে৷
আরও পড়ুন- কেন বারবার মুখ্যমন্ত্রীর বিমান বিভ্রাট? কেন্দ্রের কাছে হলফনামা তলব হাইকোর্টের
তৃণমূল নেতা সুকুমার ভট্টাচার্য জানান, শনিবার রাতে পশ্চিম বর্ধমানের অন্ডালের বাড়িতে ডাকাতি করে পালায় দুষ্কৃতীরা৷ তৃণমূলের জামুড়িয়া-২ ব্লক সভাপতি তথা ইসিএলের কর্মী সুকুমার অন্ডালে সংস্থার ছোড়া রিজিয়নাল হাসপাতালের কর্মী আবাসনে থাকেন। তিনি জানান, শনিবার নিজের আদি বাড়ি জামুড়িয়ার কেন্দা গ্রামে গিয়েছিলেন তিনি। আবাসনে ছিলেন স্ত্রী শ্রাবণী ও ছেলে অনীক।
একাদশের পড়ুয়া অনীক জানান, রাত পৌনে ৩টে নাগাদ মাফলারে মুখ ঢেকে ঘরে ঢুকে আসে জনা ছ’জন লোক। তাদের মধ্যে চার জনের হাতে ধরা ছিল আগ্নেয়াস্ত্র৷ অনীক বলেন, “ঘরে ঢুকেই সবার আগে বাবার খোঁজ নেয় দুষ্কৃতীরা৷ তার পরেই এক জন খাবার চায়।” এর পর সটান রেফ্রিজারেটর খুলে রসগোল্লার পাত্র বার করে খেতে শুরু করে তারা। কেউ একটি, কেউ বা দু’টি রসগোল্লা মুখে ভরে দেয়৷ আটটি রসগোল্লা খেয়ে, বাকি দু’টি নির্দিষ্ট পাত্রে রেখে দেয়৷ এমনকী ফ্রিজ খুলে ওই রসগোল্লার পাত্রটি নির্দিষ্ট জায়গাতেও রেখে দেয় চোরের দল। এর পরে, এক লিটারের ঠান্ডা পানীয়ের একটি বোতল বার করে এনে তা ভাগেযোগে খতম করে দেয়৷ শ্রাবণী ও অনীককে সামনে বসিয়েই এই সমস্ত কাণ্ড ঘটায় তারা৷
শ্রাবণী জানান, খাওয়া শেষ হতেই বেরিয়ে পরে তাদের স্বমূর্তি৷ ভয়ে অনীক ওদের হাতে চাবি তুলে দেয়৷ এর পর আলমারি খুলে টাকা-পয়সা, গয়নাগাটি সব বার করে পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা৷ ওরা ঘর থেকে বেরতেই ফোনে সুকুমারকে গোটা ঘটনাটি জানান শ্রাবণী৷ পুলিশ জানায়, আবাসনের শৌচাগারের জানলার গ্রিল কেটে ঘরে ঢুকেছিল দুষ্কৃতীরা।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>