তাইওয়ান: আমেরিকার কংগ্রেসের নিম্ন কক্ষ তথা হাউজ অফ রিপ্রেসেন্টেটিভ স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরকে কেন্দ্র করে এই মুহূর্তে চিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে। ইতিমধ্যেই গত সপ্তাহে চিন আমেরিকাকে কার্যত হুমকির সুরে জানায়, পেলোসির তাইওয়ান সফরের চরম মাশুল দিতে হবে আমেরিকাকে। কিন্তু সেই সমস্ত হুমকি উপেক্ষা করেই মঙ্গলবার রাতে তাইওয়ানের রাজধানী তাই পেইয়ের সংসাং বিমানবন্দরে পৌঁছয় পেলোসির বিমান। আর তারপরেই তাইওয়ানের আকাশে এবং সীমান্তে শুরু হয়েছে চিনা ধরপাকড়।
জানা যাচ্ছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভসের স্পিকার এবং সঙ্গীদের সফর শুরুর আগেই তাইওয়ানের আকাশসীমায় অন্তত ২০টিরও বেশি চিনা ফাইটার জেট অনুপ্রবেশ করেছে। সামরিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, এই ঘটনার মাধ্যমে আদতে তাইওয়ানে সামরিক অভিযান শুরুর বার্তা দিলেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার রাতে তাইওয়ান পৌঁছেছেন পেলোসি এবং আমেরিকার কংগ্রেসের প্রতিনিধিদল। তাঁদের বিমানবন্দরে স্বাগত জানান তাইওয়ানের বিদেশমন্ত্রী জোশেফ য়ু-সহ অন্য সরকারি প্রতিনিধিরা। তবে এক্ষেত্রে আশ্চর্যজনক বিষয় হল পেলোসি পৌঁছতেই বিমানবন্দরের শ্ব আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়।স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, বিমানবন্দরের প্রায় অন্ধকার রানওয়েতে টর্চের আলোয় হেঁটে যাচ্ছেন পেলোসিরা। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, চিনা বিমান হামলার আশঙ্কাতেই কী বিমানবন্দরের অনেক আলো নিভিয়ে ফেলা হয়েছিল?
অন্যদিকে আরও একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমেরিকা-চিন বিবাদ নিয়ে মাথাচাড়া দিয়েছে একগুচ্ছ প্রশ্ন। বুধবার সকালে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘ইয়িন সুরা’ নামক একটি হ্যান্ডল থেকে একটি ভিডিয়ো ক্লিপ পোস্ট করা হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, চিনের ফুজিয়ানের ব্যস্ত রাস্তায় সারি সারি ট্যাঙ্ক পেরিয়ে যাচ্ছে। আরও একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে যেখানে দাবি করা হয়েছে, পেলোসি তাইওয়ান পৌঁছনোর দিন সন্ধ্যাতেই তাইওয়ান সীমান্তের কাছে সেনাবাহিনী নিয়ে জমায়েত করতে শুরু করেছে চিন।
তবে হাত গুটিয়ে বসে নেই আমেরিকাও। জানা যাচ্ছে, চিনা হুমকির প্রতিক্রিয়ার পর তাইওয়ানের পূর্ব সীমান্তে চারটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে হোয়াইট হাউস। অন্যদিকে পেলোসির নিরপত্তার অজুহাতে দক্ষিণ চিন সাগরের দ্বীপরাষ্ট্রে আমেরিকার যুদ্ধবিমানের বহরও ঢুকে পড়েছে। সবমিলিয়ে তাইওয়ানের পরিস্থিতি খুবই গম্ভীর, এমনটাই মত সামরিক বিশেষজ্ঞদের।
