কলকাতা: মডেলিং-অভিনয় জগত থেকে আচমকাই পার্থ ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠা৷ রাতারাতি বদলে গিয়েছিল অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের জীবন৷ খানিকটা তেমনই আচমকা বদলে যায় অর্পিতার বোন সঙ্গীতার জীবন৷ সামান্য ধূপকাঠি বিক্রেতা থেকে একেবারে শিক্ষা দফতরের চাকরি! এতদিন অবশ্য তাঁর এই উত্থানে কারও মনে সন্দেহ দানা বাঁধেনি৷ কিন্তু, অর্পিতা গ্রেফতার হতেই নজরে সঙ্গীতা। প্রশ্ন, কীভাবে চাকরি পেলেন ষষ্ঠ শ্রেণি পাশ এই তরুণী?
আরও পড়ুন- আইনি জটে একই পোশাকে বেশ কয়েকদিন পার্থ-অর্পিতা, পোশাক দিল না ED
শিক্ষক দুর্নীতি মামলায় অর্পিতা মুখোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পরই উঠে আসে একটি নাম, কল্যাণ ধর। অর্পিতার ব্যবসা সংক্রান্ত বেশ কিছু নথিতেও মেলে কল্যাণের নাম। কে এই কল্যাণ? প্রথমে তাঁর পরিচয় নিয়ে সংশয় থাকলেও, পরে জানা যায় কল্যাণ আদতে সম্পর্কে অর্পিতার ভগ্নিপতী৷ তিনি অর্পিতার বোন সঙ্গীতার স্বামী৷ বেলঘরিয়া কিশোরপল্লি এলাকার বাসিন্দা কল্যাণ দীর্ঘদিন ধরেই অর্পিতার গাড়ি চালাতেন৷ এর পর তদন্তের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে প্রকাশ্যে এসেছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গিয়েছে, একটা সময়ে কল্যাণ ও সঙ্গীতার সংসারে অভাব-অনটন ছিল নিত্য সঙ্গী। পেট চালাতে অন্যের বাড়ি রান্নার কাজ করতেন সঙ্গীতা। বাড়তি উপার্জনের আশায় বিক্রি করতেন ধূপকাঠি। শিক্ষাগত যোগ্যতা- ষষ্ঠ শ্রেণি পাশ।
দিন আনা দিন খাওয়া সংসরে আচমকাই আসে পরিবর্তন৷ শিক্ষা দফতরে চাকরিতে যোগ দেন সঙ্গীতা৷ ভোল বদলাতে থাকে কল্যাণ-সংগীতার জীবনযাত্রার। প্রতিবেশীদের সে ভাবে তাঁরা তোয়াক্কা করতেন না। প্রতিবেশীরা জানানচ্ছেন, চাকরি পাওয়ার পর কিছুদিন ভাড়া বাড়িতেই ছিলেন সঙ্গীতা-কল্যাণ৷ পরে শরিকি জায়গায় নিজেদের অংশে বাড়ি তৈরি করেন। অর্পিতার সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন তাঁরা। রাঁধুনি থেকে রাতারাতি সরকারি চাকরি, জীবনযাত্রার মান বদলে এতদিন প্রতিবেশীদের মনে কোনও খটকা না লাগলেও, তাঁদের নিয়ে এখন জোড় গুঞ্জন৷ তবে কি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দাক্ষিণ্যেই শিক্ষাদফতরে চাকরি পেয়েছিলেন অর্পিতার বোন?
এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে অর্পিতার দুটি ফ্ল্যাট থেকে নগদ প্রায় ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)৷ উদ্ধার হয়েছে বিপুল সোনা-দানা, বিদেশি মুদ্রা৷ অর্পিতার গ্যারাজে ছিল মার্সিডিজ বেঞ্চ, হন্ডা সিটির মতো একাধিক দামী গাড়ি৷ খোঁজ মিলেছে একের পর এক সম্পত্তির৷ যদিও ইডি-র কাছে তাঁর দাবি, এই টাকা তাঁর নয়, সবটাই রেখে যেতেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের লোকজন৷ যে ঘরে টাকা থাকত, সে ঘরে ঢোকার অধিকারও ছিল না তাঁর৷ অন্যদিকে, প্রায় ২৭ ঘণ্টা জেরার পর ২৩ জুলাই গ্রেফতার হন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় । আপাতত ইডি হেফাজতেই রয়েছেন তাঁরা৷ সেখান থেকে তাঁদের ঠাঁই হতে পারে আলিপুর-প্রেসিডেন্সি জেল৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>