সাদা খাতা জমা দিয়েও ৫০, ৭০ নম্বর! দুর্নীতির ফরেন্সিক রিপোর্টে হতবাক আদালত

কোনও কোনও প্রার্থী হয়তো আদতে ১ বা ০ পেয়েছেন, ফেল করেছেন। এমনকি ফাঁকা ওএমআর শিট পর্যন্ত জমা দেওয়া হয়েছে

কলকাতা: এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় চাঞ্চল্যকর তথ্য। আদালতে ফরেনসিক রিপোর্ট পেশ করেছিল সিবিআই এবং সেই রিপোর্ট দেখে কার্যত চক্ষুচড়কগাছ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। খালি খাতা জমা দিয়েও নম্বর পেয়েছে অনেকে। তা মাত্র কয়েক নম্বর নয়, ৫০, ৫৩ নম্বর মিলেছে অনেকের! একই সঙ্গে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, গ্রুপ সি-তে ৩ হাজার ৪৮১ জনের এবং গ্রুপ ডি-তে ২ হাজার ৮২৩ জনের নম্বর বদল করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কেউ হয়তো ১ বা কেউ হয়তো ০ পেয়েছিল।

আরও পড়ুন- কয়লা পাচারে লালাকে মদতের অভিযোগ! IPS আকাশ মাঘারিয়ার তলব করল ইডি

আদালতে সিবিআই জানিয়েছে, এসএসসি সার্ভার রুম থেকে ৩টি হার্ড ডিস্ক উদ্ধার হয়েছে। সেই হার্ড ডিস্ক থেকেই এইসব তথ্য তারা জানতে পেরেছে। এক্ষেত্রে তারা সরাসরি আঙুল তুলেছে গ্রেফতার হওয়া উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্যের দিকে। অনিয়মের সময় এসএসসির চেয়ারম্যান পদে তিনিই ছিলেন বলে দাবি। কলকাতা হাইকোর্টে আজ মোট ৪টি রিপোর্ট পেশ করে সিবিআই। রিপোর্টে উল্লেখ, প্রার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর হয়তো ছিল ১ বা ০। নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির নিয়োগ পরীক্ষায় বহু সাদা খাতা জমা দেওয়া হয়েছে। যে অভিযোগ এতদিন ধরে করা হচ্ছিল তার প্রমাণ আদালতে এবার দিল সিবিআই।

গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে এসএসসি সার্ভারে ৯০৭ জন প্রার্থীর নম্বর বদলানো হয়েছে এবং নবম-দশম শ্রেণির ক্ষেত্রে ৯৫২ জনের নম্বর বদলানো হয়েছে। কোনও কোনও প্রার্থী হয়তো আদতে ১ বা ০ পেয়েছেন, ফেল করেছেন! অথচ সার্ভারে ওই প্রার্থীর প্রাপ্ত নম্বর দেখা যাচ্ছে ৫০ বা ৭০। এমনকি ফাঁকা ওএমআর শিট পর্যন্ত জমা দেওয়া হয়েছে। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাশাপাশি এই নিয়োগ দুর্নীতিতে যে শিক্ষা দফতরও জড়িয়ে, সিবিআই রিপোর্টে তার সুস্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে। গোটা রিপোর্ট দেখে চরম বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। অন্যদিকে, অনিন্দিতা বেরা, সাবিনা ইয়াসমিন, লক্ষী তুঙ্গা, ববিতা সরকার মামলাতে সিবিআইকে তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বুধবার সিবিআই চারটি মুখ বন্ধ খামে রিপোর্ট জমা দেয় আদালতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *