হাজারো অজানা জবার মেলা, বি গার্ডেনে খুলল ‘হিবিস্কাস গার্ডেন’

হাজারো অজানা জবার মেলা, বি গার্ডেনে খুলল ‘হিবিস্কাস গার্ডেন’

 কলকাতা: একসঙ্গে ফুটে রয়েছে কয়েকশো জবা। তাদের মধ্যে রয়েছে আবার এমন কিছু জবা রয়েছে যা সচরাচর কেউ চোখেই দেখেন নি। রূপ-রঙ বর্ণে তারা প্রত্যেকেই যেন একে অপরের সঙ্গে সুন্দরী প্রতিযোগিতায় নেমেছে। কথা হচ্ছে শিবপুরের বোটানিক্যাল গার্ডেনের হিবিস্কাস গার্ডেনের যেখানে ফুল প্রেমীদের জন্য রাখা রয়েছে কয়েকশো ধরনের জবা ফুলের গাছ। বি গার্ডেনের সেকশন ফোরের এই হিবিস্কাস গার্ডেন আসলে একটি জবা ফুলের সংগ্রহশালা। যেখানে গার্ডেন কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি ২৫০ ধরনের জবা ফুটিয়ে ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডে যিনি নাম তুলেছেন সেই প্রদীপ চক্রবর্তীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে উদ্যানটি তৈরি করেছেন। গার্ডেন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় এবং দীপ চক্রবর্তী একক প্রচেষ্টাতেই গড়ে উঠেছে এই হিবিস্কাস গার্ডেন। আর তাই প্রকৃতিপ্রেমী তথা ফুল প্রেমীদের আকর্ষণ বাড়াতে এবার এই জবার দেশের দরজাই সর্বসাধারণের জন্য খুলে দিল বোটানিক্যাল গার্ডেন কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যেই এই হিবিস্কাস গার্ডেন বোটানিক্যাল গার্ডেনের সেকশন ফোরের অন্যতম আকর্ষণে পরিণত হয়েছে। অদেখা এবং নাম-না-জানা বহু প্রকারের জবা একত্রিত করেই বোটানিক্যাল গার্ডেনের প্রায় দু কাঠা জমি জুড়ে তৈরি হয়েছে এই হিবিস্কাস তথা জবার দেশ।

 সাধারণত জবা খুবই সহজলভ্য একটি ফুল। তাই ফুল প্রেমিক এবং গাছ প্রেমীদের আকর্ষণের তালিকায় খুব একটা জবা ফুলের নাম দেখা যায় না। কিন্তু সিঙ্গুরের বাসিন্দা দীপ চক্রবর্তীর বছর বছর ধরে করে আসা প্রচেষ্টায় এমন কিছু জবার জন্ম হয়েছে যা না দেখলে বিশ্বাসই করা যাবে না। অন্যদিকে এই সমস্ত বিরল প্রজাতির জবার নামগুলোও একেবারেই অজানা। আর তাই এই অজানা, অদেখা নতুন প্রজাতির জবাগুলিকে দেখতেই ভিড় করছেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু এখন প্রশ্ন হলো এমন অনন্য এবং আলাদা ধরনের জবা দীপবাবু তৈরি কি করে করলেন? এর উত্তরে তিনি জানান, বহু দেশ-বিদেশে জবার মধ্যে পরাগ সংযোগ ঘটিয়ে নতুন কিছু জবা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। আর তাই খুব অল্প কিছুদিনের মধ্যেই দেশে তো বটেই বিদেশের মাটিতেও তিনি হয়ে উঠেছেন জনপ্রিয়। পড়াশোনা রামকৃষ্ণ মিশন স্কুলে। ছাপোষা মধ্যবিত্ত এই সাধারণ বাঙালি পড়ুয়া আজ অব্দি প্রায় ২৫০টি বিরল জবা সৃষ্টি করেছেন। পরবর্তীতে যাতে এই সংখ্যা আরো বাড়ে তার জন্যও ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে রিসার্চ, পরিকল্পনা।

দীপ চক্রবর্তীর এই উদ্যোগ প্রসঙ্গে বোটানিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার দিরেক্টর ডাঃ এএ মাওয়ের কথায়, ‘ দীপ এক অভাবনীয় কাজ করছে। যে জায়গায় সে এই উদ্যানটি তৈরি করেছে সেই জায়গাটা খালি পড়েছিল। আগাছা পরিষ্কার করে ওই জায়গাটি আমরা দীপের জবার উদ্যান করার জন্য তার হাতে তুলে দিয়েছিলাম। ওইটুকু জায়গাতেই প্রায় একশো ধরনের জবা ফুল ফুটিয়ে দীপ সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে এবং এখন চার নম্বর সেকশনের এই জবার উদ্যানে সবথেকে বড় আকর্ষণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 5 =