কলকাতা: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় শুক্রবার তার বাড়িতে হানা দেয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। বেশ কয়েক ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর দুপুরেই কলকাতা হাইকোর্টে হাজিরা দেন চন্দন মণ্ডল ওরফে রঞ্জন। তিনি হাজিরা দিতেই তাকে একাধিক প্রশ্ন করে আদালত এবং বিশেষ নির্দেশ দেন বিচাপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এদিন আদালত জানতে চায় তিনি কে। জবাবে রঞ্জন বলেন, ‘আমি চন্দন মণ্ডল’। পরে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদের ব্যাপারে জানতে চাইছে তিনি বলেন, সিবিআই তাকে দু’বার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এরপর কোর্ট নির্দেশ দেয়, তিনি যেন অনুমতি ছাড়া এজলাসের বাইরে না যান।
আরও পড়ুন- কয়লা পাচার মামলায় CBI-এর দ্বিতীয় নোটিসে সাড়া, নিজাম প্যালেসে শওকত মোল্লা
এরপর আদালতের সঙ্গে চন্দনের এই ইস্যুতে প্রশ্নোত্তর শুরু হয়। আদালত প্রশ্ন করে, ‘চন্দন মন্ডল, আপনি জানেন আপনার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ আছে? আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ আপনি টাকা নিয়ে চাকরি দিতেন।’ চন্দন দাবি করেন, ‘আমি কারোর কাছ থেকে টাকা নেইনি। চাকরিও দিইনি।’ এদিকে, সিবিআইয়ের উদ্দেশ্য আদালত প্রশ্ন করে যে তাঁরা কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করবেন কিনা চন্দনকে। জবাবে সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, চন্দন সিবিআই তদন্তের কোনও অসহযোগিতা করেননি। এদিকে, সিবিআইয়ের তদন্ত নিয়ে ভরা এজলাসে তীব্র সমালোচনা করেন প্রাক্তন সিবিআইয়ের জয়েন্ট ডিরেক্টর উপেন বিশ্বাস। যা নিয়ে আদালতে প্রতিবাদ করেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। যে কারণে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে বাদানুবাদ বেঁধে যায় এবং সিবিআইয়ের আইনজীবী এজলাস ছেড়ে বেড়িয়ে যান।
অন্যদিকে, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সিবিআইয়ের অবসরপ্রাপ্ত কর্তা উপেন বিশ্বাস এদিন মুখ বন্ধ খামে আদালতে কিছু তথ্য জমা দিয়েছেন। এতে প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় সিবিআইয়ের তদন্তে সুবিধে হবে বলে মনে করছে আদালত। জানা গিয়েছে, নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনায় কে বা কারা যুক্ত রয়েছে তাঁর যাবতীয় তথ্য রয়েছে এই খামে। আগামীকাল সিবিআইয়ের আধিকারিকদের হাতে এটি তুলে দেওয়া হবে। উল্লেখ্য, বছরখানেক আগে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী উপেন বিশ্বাসের একটি ভিডিও বার্তায় এই রঞ্জনের নাম পাওয়া যায়। নিয়োগ দুর্নীতিতে অতপ্রতভাবে জড়িয়ে তিনি এমনটাই জানা যায়। কিন্তু এতদিন ধরে তাকে ‘খুঁজে পাওয়া’ যাচ্ছিল না। এদিন অবশেষে তার বাড়িতে হানা দেয় ইডি।