লোকালে চড়েছে ঘোড়া! জানেন কি ভাড়া দিয়ে উঠতে পারে উট-হাতির মতো বড় প্রাণীও

লোকালে চড়েছে ঘোড়া! জানেন কি ভাড়া দিয়ে উঠতে পারে উট-হাতির মতো বড় প্রাণীও

কলকাতা: লোকাল ট্রেনের কামরায় ভেসে এসেছে আস্তাবলের ঘ্রান৷ বৃহস্পতিবার রাতে ভিড়ে ঠাসা ডায়মন্ড হারবার লোকালে মানুষের সহযাত্রী হয়েছিল ঘোড়া৷ ছুটন্ত ট্রেনে নিশ্চল ঘোড়ার সেই ছবি ভাইরাল হতেই শোরগোল পড়ে যায়৷ ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন ঘোড়ার মালিক৷ কিন্তু, অনেকেই হয়তো জানেন না ভারতীয় রেলে পশুদের সওয়ার হওয়ার নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে৷ পোষ্য বিড়াল, কুকুরই নয়, ট্রেনে উঠতে পারে ঘোড়া, উট, হাতির মতো বড় প্রাণীও৷ তবে প্রাণীর জাত এবং ওজন অনুযায়ী নির্দিষ্ট ভাড়া রয়েছে।  সেই নিয়ম উপেক্ষা করে লোকাল ট্রেনে ঘোড়া তুলে অবশ্য ঠিক করেননি গফুর আলি মোল্লা৷ 

আরও পড়ুন- মধ‍্যপ্রদেশে সাংবাদিক নিগ্রহ, প্রতিবাদে গান বাঁধলেন শিল্পী স্বপন দত্ত

এক সময় এই বাংলাতেই ট্রেনে হাতি তোলার প্রচলন ছিল। শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখার গোবরডাঙা স্টেশনে লোক মুখে ফেরে সেই ‘এলিফ্যান্ট’ প্লাটফর্মের কথা। জানা যায়, গোবরডাঙার জমিদার বাড়ির সংগ্রহে ছিল বিভিন্ন দেশের হাতি। একবার নাকি, ট্রেনে চাপিয়ে বাংলাদেশের খুলনায় হাতি পাঠিয়েছিলেন গোবরডাঙার জমিদাররা৷ 

ভারতীয় রেলের আইনে ৭৭-এ ধারায় বলা হয়েছে, ট্রেনে পশুদের জন্য নির্ধারিত কামরায় তাদের নিয়ে যাওয়া যায়। এর জন্য আলাদা করে ভাড়াও গুণতে হয়৷ যেমন কুকুরের ভাড়া ৩০ টাকা৷ একই ভাড়া ধার্য হয়েছে ছাগল, ভেড়া, গাধা, বাঁদর ও বিভিন্ন পাখির রেল যাত্রার ক্ষেত্রে। গরু, মহিষের মতো শিংওয়ালা প্রাণীদের ক্ষেত্রে ভাড়াটা কিন্তু অনেকটাই বেশি৷ ২০০ টাকা। এই তালিকাতেই রয়েছে উট ও খচ্চর। এদের চেয়ে ঘোড়ার ভাড়া অনেকটাই বেশি। ৭৫০ টাকা। আর হাতি হলে এরও দ্বিগুণ৷ যাত্রীদেড় হাজার টাকা। তবে বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী এই ভাড়ার পরিমাণ অনেকটাই কম। কারণ,  এই ভাড়া ধার্য হয়েছে ১৯৭৮ সালের আইনে। সেই সঙ্গে আরও একটা বিষয় স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, ট্রেনে সফরের সময় পশুদের কোনও ক্ষয়ক্ষতি হলে তার দায় নেয় না রেল।

সাধারণভাবে যাত্রীরা তাঁদের পোষ্য কুকুরকে নিয়েই ট্রেনে বেশি যাতায়াত করে৷ তবে সেক্ষেত্রে তাঁদের বাতানুকুল বা সাধারণ প্রথম শ্রেণিতে চড়তে হবে৷ যাত্রীদের আপত্তি না থাকলে ছোট কুকুর নিয়ে ট্রেনে সফর করা যেতেই পারে৷ কিন্তু, আপত্তি জানালে প্রিয় পোষ্যকে রেল গার্ডের ভ্যানে পাঠিয়ে দিতে হবে৷ এক্ষেত্রে জেনে নেওয়া প্রয়োজন, এসি স্লিপার ক্লাস, এসি চেয়ার কার, সাধারণ স্লিপার ক্লাস, সেকেন্ড এসি ক্লাসে কুকুরের প্রবেশ নিষেধ।  

কুকুরকে ট্রেনে চাপাতে যাত্রীকে পার্সেল অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। ছোট কুকুরের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট বাক্স রয়েছে৷ কুকুরের ওজন এবং আকারের উপর বাক্সের দাম নির্ধারিত হয়৷ ডগবক্সের ন্যূনতম দাম ১০ টাকা। বড় আকারের কুকুরকে অবশ্য ব্রেক ভ্যানেই যেতে হয়। একটি ঘোড়ার এবং একটি বড় আকারের কুকুরের ক্ষেত্রে নিয়ম এক৷  

ট্রেনে কুকুর নিয়ে সফরের আগে আরও একটি নিয়ম জেনে নেওয়া দরকার৷ প্রথম শ্রেণির বগিতে কোনও মহিলা যদি ১২ বছরের নীচে একটি শিশুর সঙ্গে সফর করেন, তবে তিনি ডগ বক্সে ছোট্ট পোষ্য কুকুরটিকে সঙ্গে রাখতে পারেন। তবে এখানেও একটা শর্ত রয়েছে। ওই বগিতেই যদি অন্য কোনও মহিলা যাত্রী সিঙ্গেল সফর করেন, তবে তাঁর অনুমতি নিতেই হবে৷