কলকাতা: মাত্র এক মাস আগেই বিয়ে হয়েছিল তাঁর। মনের মানুষের সঙ্গেই ঘর বেঁধেছিলেন তিনি। কিন্তু, বিবাহিত জীবন সুখের হয়নি। পরিবারে নিত্য অশান্তি লেগেই থাকত৷ শুক্রবার রাতে বহুতল থেকে পড়ে মৃত্যু হল তিতাস নন্দী (২৮) নামক এক যুবতীর৷ দুর্ঘটনার পর তড়িঘড়ি তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও, শেষ রক্ষা হয়নি৷ চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন৷ ঘটনাটি বাগুইআটি আমবাগান এলাকার৷
আরও পড়ুন- প্রিজন ভ্যান থেকে নামতেই পুলিশের সামনে ‘দুষ্কৃতীকে’ গুলি! আতঙ্কে চুঁচুড়ার ইমামবাড়া হাসপাতাল
জানা গিয়েছে, এক মাস আগে কৌস্তব সরকার নামে এক যুবকের সঙ্গে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে হয় তিতাসের৷ এর পর থেকেই কৌস্তবের সঙ্গে ওই বহুতলের একতলায় ভাড়া থাকতে শুরু করেন তিতাস৷ প্রতিবেশীদের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে নিত্য অশান্তি লেগেই থাকত৷
ওই বহুতলেরই এক বাসিন্দা তিতাসের আত্মীয়া বলেন, “ওঁদের মধ্যে ঝামেলা-অশান্তি লেগেই থাকত। শুক্রবার সকাল থেকেই ঝগড়া চলছিল। আমি শুনতেও পেয়েছিলাম। তারপরেই তিতাস ওঁর বাবা-মায়ের কাছে চলে যান। কিন্তু, বিকেলের দিকে ফের ফ্ল্যাটে ফিরে আসে। ফেরার পরেও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়।’’ তিনি আরও জানান, শুক্রবার রাতে ছেলেকে টিউশন থেকে নিয়ে বাড়ি ঢোকার সময় তিতাসের দেহ পড়ে থাকতে দেখেন৷
এই ঘটনার পরই তিতাসের পরিবার জানায়, মাঝেমধ্যেই স্ত্রীয়ের ওপর অত্যাচার চালাতেন কৌস্তভ। সেই তাঁকে ঠেলে ফেলে দিয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশের হাতে বেশ কিছু তথ্যপ্রমাণ এসেছে৷ যার ভিত্তিতে অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করে নাগেরবাজার থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রক্রিয়া চলছে। এরই মধ্যে আজ দুপুরে ওই তরুণীর বাড়ির লোকের তরফে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। তাতে স্পষ্ট বলা হয়, তিতাসকে ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে মেরে ফেলা হয়েছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ (বি) ধারা (বধূ হত্যা), ৪৯৮ (এ)(বধূ নির্যাতন) এবং ৩০২ (খুন)- এই তিন ধারায় নাগেরবাজার থানায় এফআইআর দায়ের করে৷ গ্রেফতার করা হয় তিতাসের স্বামীকে৷ ময়নাতদন্তের জন্য তরুণীর দেহ আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে।
অন্যদিকে রহস্যজনকভাবে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করল আরও এক নববধূ৷ গত এপ্রিল মাসেই বিয়ে হয়েছিল তাঁর৷ ভালোবেসেই বিয়ে করেছিলেন ওই তরুণী৷ তাঁদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ ছিল না বলেই শ্বশুরবাড়ির দাবি৷ যদিও এই ঘটনায় খুনের অভিযোগ তুলেছে ওই তরুণীর পরিবার৷ ঘটনাটি ছাতনার জিড়রা গ্রামের৷
প্রতিদিনের মতো এদিনও ওই তরুণীর স্বামী ভোরবেলায় কাজে বেরিয়ে গিয়েছিলেন৷ অভিযোগ, এর পরেই নির্মীয়মান শৌচাগারে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন সমাপ্তি মন্ডল। মৃতার শাশুড়ি জানান, সকাল থেকে সমাপ্তিকে দেখতে না পেয়ে তাঁর খোঁজ শুরু করেন তাঁরা৷ শৌচাগারে গিয়ে দেখেন বউয়ের ঝুলন্ত দেহ৷ তিনি এবং তাঁর স্বামীই মৃতদেহ নামিয়ে আনেন। এদিকে, ঘটনা জানাজানি হতেই তাঁদের বাড়িতে এসে পৌঁছয় ঝাঁটিপাহাড়ি ফাঁড়ির পুলিশ। শুরু হয়েছে তদন্ত।
সদ্য বিবাহিতা সমাপ্তির বাপের বাড়ি পুরুলিয়ার হুড়া থানার অন্তর্গত কলাবনি গ্ৰামে। খবর পেয়েই ছুটে আসে তাঁর পরিবারের লোকজন৷ তাঁদের অভিযোগ, তাঁদের মেয়েকে মেরে ফেলা হয়েছে। যদিও কোনরকম পারিবারিক সমস্যার কথা তাঁরা জানাননি৷ কিন্তু মেয়ের মৃত্যুর জন্য দায়ী করেছেন জামাই ও জামাই-এর মাকে।
সমাপ্তির জামাইবাবু পবিত্র মন্ডল জানিয়েছেন, গত বৈশাখ মাসে প্রেম করেই বিয়ে করেছিল দু’জনে৷ তাঁর দাবি, আত্মহত্যা নয় মেরে ফেলা হয়েছে তাদের মেয়েকে। মৃতার স্বামী রমেন মন্ডল জানান, তিনি বেসরকারি কারখানায় কর্মরত৷ ভোরবেলা কাজে বেরিয়ে যেতে হয়৷ বাড়ি থেকে ফোন করে তাঁকে এই ঘটনা সম্পর্কে জানানো হয়৷ রমেন জানান, কেন সমাপ্তি এই পদক্ষেপ করল তা বুঝতে পারছেন না তিনি৷ ময়নাতদন্তের জন্য দেহটিকে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখছে ছাতনা থানার পুলিশ৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>
