‘যে মন্তব্য করেছেন তা দুর্ভাগ্যজনক’, রামপুরহাটকাণ্ডে রাজ্যপালকে চিঠি ক্ষুব্ধ মমতার

‘যে মন্তব্য করেছেন তা দুর্ভাগ্যজনক’, রামপুরহাটকাণ্ডে রাজ্যপালকে চিঠি ক্ষুব্ধ মমতার

কলকাতা: রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে গণহত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। একটি ভিডিয়ো বিবৃতি দিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি৷ সেই সঙ্গে মুখ্যসচিবের থেকে রিপোর্ট তলব করেন রাজ্যপাল৷ এছাড়াও তিনি দাবি করেন, রাজ্যে হিংসার রাজনীতি চলছে৷ আইনশৃঙ্খলার ভেঙে পড়েছে৷ তাঁর এই মন্তব্যে একেবারেই খুশি নন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি রাজ্যপালকে চিঠি দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

আরও পড়ুন-  তৃণমূল নেতা খুনে অগ্নিগর্ভ রামপুরহাট, পর পর বাড়িতে আগুন, ১০ জনের ঝলসানো দেহ উদ্ধার

রামপুরহাট কাণ্ডে রাজ্যপালকে চিঠি দিয়ে মমতা জানান, ”আপনি যে ধরণের মন্তব্য করেছেন তা দুর্ভাগ্যজনক। আপনার মন্তব্য নিরপেক্ষ তদন্তে বাধা হতে পারে। সাংবিধানিক পদে থেকে এই ধরণের মন্তব্য করা অসাংবিধানিক।” এই মন্তব্য করেই থেমে যাননি মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, বিজেপি শাসিত রাজ্য সহ দেশের অন্যান্য হিংসার ঘটনায় তিনি নীরব থাকেন। সেই ব্যাপারে কিছুই বলেন না। কিন্তু বাংলাতে কিছু হলেই তিনি প্রশ্ন তোলেন, আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে কথা বলেন। আসলে রাজ্যপাল মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘রামপুরহাটের ভয়াবহ নৃশংসতায় আমি মর্মাহত ও বিব্রত। ডিজিপি’র জানিয়েছেন এই ঘটনায় ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা যে একেবারেই ভেঙে পড়েছে তা এই ঘটনা থেকে স্পষ্ট৷’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি আগেও বারবার বলেছি, রাজ্যে এমন অরাজকতা আমরা মেনে নিতে পারি না। প্রশাসনকে রাজনৈতিক বিভাজনের ঊর্ধ্বে উঠতে হবে।”

letter

সোমবার রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে বোমা হামলায় মৃত্যু হয় তৃণমূল নেতা ভাদু শেখের৷ তিনি রামপুরহাট এক নম্বর ব্লকের বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ছিলেন। তিনি ছিলেন বগটুই গ্রামের৷ গতকাল গ্রামে জাতীয় সড়কের পাশে একটি চায়ের দোকানে বসেছিলেন ভাদু। সেই সময় তাঁকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ে এক দল দুষ্কৃতী। ঘটনায় গুরুতর জখম হন ভাদু৷ রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ভাদুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এর পরেই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে বগটুই৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × 5 =

রাজ্যপালের কোচবিহার ‘সফর’ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মমতা, লিখলেন চিঠি

রাজ্যপালের কোচবিহার ‘সফর’ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মমতা, লিখলেন চিঠি

কলকাতা: বিধানসভা নির্বাচনের চতুর্থ দফায় মারাত্মক ঘটনা ঘটে গিয়েছিল কোচবিহারের শীতলকুচিতে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হয়েছিল ৪ জন ভোটারের। সেই মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি কম হয়নি। ভোটের পরেও শীতলকুচি নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। এবার সেই এলাকা পরিদর্শন করতে যাওয়ার কথা রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের। কিন্তু এই ‘সফর’ নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রেক্ষিতে একটি চিঠিও লিখলেন তিনি। 

রাজ্যপালের কোচবিহার সফর প্রসঙ্গে মমতার মূল বক্তব্য, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী রাজ্যপালের সফরসূচি স্থির করবে তাঁর সচিব। সেক্ষেত্রে সচিব এ ব্যাপারে সরকার এবং যে এলাকায় রাজ্যপাল যাচ্ছেন সেখানকার কমিশনার বা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে নেবেন। কিন্তু রাজ্যপালের এই কোচবিহার সফর প্রসঙ্গে এমন নিয়ম মানা হয়নি। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ ব্যাপারে জানতে পেরেছেন বলে জানিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে রীতিমতো তাকে কটাক্ষ করে মমতার বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা নিয়ম তোয়াক্কা করছেন না রাজ্যপাল। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই ওই ঘটনায় তদন্তের প্রেক্ষিতে সেইদিন নির্দিষ্ট বুথে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের তলব করেছে রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থা। জানা গিয়েছে, তাদের থেকে সেই দিনের ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ চান তদন্তকারী অফিসাররা। জোড়পাটকির ১২৬ নম্বর বুথে থাকা সিআইএসএফ অফিসার সহ ৬ জনকে তলব করা হয়েছে সিআইডির তরফে।

এদিকে, আবার জানা গিয়েছে, নির্বাচন পরবর্তী হিংসায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখতে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় আগামী শুক্রবার অসম যাচ্ছেন। সেখানে তিনি রানপাগলী ও শ্রীরামপুর শিবির দুটি পরিদর্শন করবেন বলে আজ এক টুইটে জানিয়েছেন। সেখানে এই দুই শিবিরে রাজ্যে হিংসায় ক্ষতিগ্রস্ত বেশকিছু মানুষ তাদের নিরাপত্তার জন্য আশ্রয় নিয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। আগামীকাল কোচবিহার সফরের পরে পরশুদিন তিনি বিএসএফের হেলিকপ্টারে সকাল পৌনে দশটা নাগাদ রণপাগলি পৌঁছাবেন বলে জানিয়েছেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

14 + nineteen =