চার্টার্ড বিমানে দিল্লি গিয়েও লাভ হল না যাদের…

চার্টার্ড বিমানে দিল্লি গিয়েও লাভ হল না যাদের…

কলকাতা: বাংলার নির্বাচনের আগে কম নাটক হয়নি। যদি শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপি যোগ সবচেয়ে বড় ধাক্কা হয় তৃণমূলের জন্য, তাহলে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে বৈশালী ডালমিয়া, রথীন চক্রবর্তীরা দিল্লি গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে আরো ধরাশায়ী করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু যারা চার্টার্ড বিমানে দিল্লি গিয়ে বাংলা জয়ের স্বপ্ন দেখলেন তাদের সবার কী হল? নির্বাচনের ফলাফল বলছে যারা তৃণমূল কংগ্রেসকে ধরাশায়ী করার জন্য দিল্লি গিয়েছিল তারা নিজেরাই কুপোকাত হয়ে গিয়েছে। টিমটিম করে জ্বলছে খালি একজন, বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়। যদিও তিনি বিমানে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দেননি। 

রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে বৈশালী ডালমিয়া, প্রবীর ঘোষাল থেকে শুরু করে রথীন চক্রবর্তী এবং পরবর্তী ক্ষেত্রে রুদ্রনীল ঘোষ, প্রত্যেকেই চাটার্ড বিমানে করে দিল্লি গিয়ে অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তৃণমূল ত্যাগীদের দিল্লি নিয়ে যাওয়ার জন্য বিজেপি বিশেষ এই বিমানের ব্যবস্থা করেছিল। যারা বিমানে চেপে গিয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে ছিলেন মুকুল রায়ও। আজ নির্বাচনের ফল বলছে তিনি একাই নিজের মান রাখতে পেরেছেন। বাকিরা কার্যত ভ্যানিশ হয়ে গেছেন! ভোটের ফলাফল বলছে, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ডোমজুড়ে বিরাট ব্যবধানে হেরেছেন। একই রকম অবস্থা বালি এবং উত্তরপাড়ার বিজেপি প্রার্থী বৈশালী ডালমিয়া এবং প্রবীর ঘোষালের। হাওড়া শিবপুরে এবং কলকাতার ভবানীপুরের বিজেপি প্রার্থী রথীন চক্রবর্তী এবং রুদ্রনীল ঘোষও বিশ্রী ভাবে পরাজিত। শুধু মুকুল রায় এবং রানাঘাট পুরসভার পদত্যাগী প্রশাসক পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় ছাড়া প্রত্যেকে ধরাশায়ী হয়েছেন। আদতে চাটার্ড বিমানে দিল্লি গিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়ে লাভ হয়নি কারোর।

নির্বাচন শুরুর অনেক আগে থেকেই বিজেপি স্লোগান তুলেছিল যে, “আবকি বার, বাংলায় ২০০ পার”। প্রত্যেক দফার নির্বাচন হওয়ার পরে বিজেপির নেতৃত্ব ‘বড় বড়’ কথা বলেই গেছেন। কিন্তু নির্বাচনের ফলাফল বলছে, গত ২০১৬ বিধানসভার থেকেও ভালো ফল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। উল্টে তারাই ২০০ পার করে ফেলেছেন। তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া নেতাদের অধিকাংশ পরাজিত হয়েছেন বিশ্রীভাবে। বাংলায় এত বড় হারের মধ্যেও অবশ্য বিজেপির একটাই স্বস্তি নন্দীগ্রাম নিয়ে। যদিও সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরাজয় নিয়েও এখন বিপুল চর্চা। অনেক কানাঘুষোয় শোনা যাচ্ছে রাজ্য এবং দেশের সর্বত্র। মোটকথা, বাংলার বিধানসভা নির্বাচন বিজেপিকে প্রত্যাশিত স্বস্তি দেওয়া তো দূর, কার্যত বড় শাস্তি দিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × one =