মোদীর এই টেলিকম বেচে দেওয়ার সিদ্ধান্তে দেশের নিরাপত্তা অটুট থাকবে?

মোদীর এই টেলিকম বেচে দেওয়ার সিদ্ধান্তে দেশের নিরাপত্তা অটুট থাকবে?

নয়াদিল্লি: নতুন টেলিকম বিষয়ক সিদ্ধান্ত কী? মোদি সরকার বলছে দেশে বিশাল পরিবর্তন আসবে। টেলিকম সেক্টর ১০০ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগ। কিন্তু বিরোধীরা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এককাট্টা। কেন? কী এমন অসুবিধা? দেশের টেলিকম ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগ আনতে সক্ষম হবে মোদি সরকার। অসুবিধা ঠিক এই জায়গাতেই।

অনেকেই প্রশ্ন করতে পারেন, বিদেশি বিনিয়োগে অসুবিধা কোথায়? এর আগে কী বিদেশি বিনিয়োগ হয়নি? বিনিয়োগ হলে দেশে কর্মসংস্থান বাড়বে। এক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্তের যারা বিরোধিতা করছেন, তাদের যুক্তি ঠিক কী? কিছুদিন আগেই উঠেছিল ‘পেগসাস’ ইস্যুটি। ইজরায়েলি পেগসাস সফটওয়ার ব্যবহার করে দেশের বিরোধী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বিরোধী রাজনৈতিক কন্ঠ, সমাজকর্মী থেকে বিশিষ্ঠ সাংবাদিক – অনেকেরই ফোনে আড়ি পাতা এবং নজরদারির কাজ সহজভাবেই করে মোদি সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন এজেন্সি। দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে নজরদারি বন্ধ করতে এবং তা জানাতে নারাজ মোদি সরকার। কিন্তু, টেলিকম ব্যবস্থায় ১০০% বিদেশি বিনিয়োগ মেনে নিতে রাজি তারা। এতে নিরাপত্তা রক্ষার্থে কোনও সমঝোতা চোখে পড়ছে না সরকারের। ভেবে দেখুন একবার, ভোদাফন, জিও, এয়ারটেল বা অন্যান্য মোবাইল সার্ভিস প্রোভাইডারদের কিনে নিতে পারে বিদেশি সংস্থা। সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার বা রিজার্ভ ব্যাংকের অনুমতি নেওয়ারও প্রয়োজন নেই। সেক্ষেত্রে ভারতই একমাত্র দেশ হবে, যেখানে টেলিকম ব্যবস্থা পরিচালনা করবে বিশ্বের বড় বড় টেলিকম সংস্থা। দেশের অভ্যন্তরীন নিরাপত্তার ব্যাপারে কী ভেবে দেখলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদি?

বছর চার আগের কথা। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাস। কেন্দ্রীয় সরকার ৪২টি চিনা app কে ‘ভয়ঙ্কর’ ঘোষণা করেছিল। প্রধান কারণ – সুরক্ষা ও নিরাপত্তা। ২০২০ সালের ১৫ জুন গালওয়ানে সীমান্ত সন্ত্রাস ঘটিয়ে ২০ জন সেনার প্রাণ নিয়েছে চিন। ওই ঘটনার ১৫ দিন পর অর্থাৎ ৩০ জুন ৫৯টি ‘ভয়ঙ্কর’ চিনা app কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল মোদি সরকার। সীমান্ত সন্ত্রাস, ২০টি তাজা প্রাণ – বুক ফেটে যাচ্ছে সংবেদনশীল ভারতীয় জনজাতির। এদিকে মোদি সরকার দাবি করছে চিনের উপরে ‘ডিজিটাল সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ হয়েছে। কী অদ্ভুত যুক্তি, যা হওয়ার কথা ছিল তিন বছর আগে, ২০ জন সেনার প্রাণের বিনিময়ে তা আজকে সম্পন্ন হয়েছে। এই তিন বছর ধরে কী ভারতীয় জনজাতির জীবন সুরক্ষিত ছিল? এই তিন বছর ভারতীয়দের মোবাইল ফোন থেকে কত ডেটা (তথ্য) চুরি করেছে টিকটিক, শেয়ারইট, হেলো, ক্যাম স্ক্যানার …। কেন তারা ভারতে ব্যাবসা করার অনুমতি পেল? মোদি সরকার যাকে এক সময় ভয়ঙ্কর বলেছিল, সেই app গুলি তিন বছর ধরে ভারতে ব্যাবসা করল কী ভাবে? কোনও ড্রাগনের ভয়ে লুকিয়েছিল ৫৬ ইঞ্চি ছাতি’র প্রধানমন্ত্রী? গালওয়ানে ২০ সেনা মরতে মরতে প্রধানমন্ত্রীকে সাহস দিয়ে গিয়েছেন কী? এত কিছুর পরেও, টেলিকম সেক্টরে ১০০ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগের কথা ভাবছে মোদি সরকার। কারা দেশের ভাল চায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × four =