কলকাতা: করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যগুলোর সঙ্গে সমন্বয় রক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অমিত শাহ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। রাজ্যের পরিস্থিতি কেমন তা জানতে চেয়ে শুক্রবার সকালে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।একইভাবে রাজ্যের বাইরে আটকে থাকা মানুষদের নিরাপদে রাজ্যে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থাপনা নিয়ে এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গেও মুখ্যমন্ত্রীর দীর্ঘক্ষণ কথা হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে।
২১ দিনের লকডাউনের মধ্যে দিয়ে চলছে দেশ। এই সময় রাজ্যের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জানতে চান প্রধানমন্ত্রী মোদী।পাশাপাশি করোনা রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা পরিকাঠামো তৈরিতে রাজ্যের কী ধরণের সাহায্য প্রয়োজন সে ব্যাপারেও তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জানতে চান। গত সপ্তাহে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্স করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসনিক সূত্রে খবর তারপর এদিনই দু'জনের মধ্যে সরাসরি কথা হয়েছে ।মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার অভিযোগ করেছেন করোনা মোকাদবিলায় কেন্দ্রের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ বা পরিকাঠামোগত সহায়তা পাওয়া যাচ্ছে না। সেই নিরিখে এদিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সরাসরি কথোপকথন তাত্পর্যপূর্ণ।
নবান্ন সূত্রের খবর রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েই খোঁজ নেন প্রধানমন্ত্রী। রাজ্যের প্রয়োজন নিয়েও কথাবার্তা হয় দু'জনের।পাশাপাশি রাজ্যে বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা , করোনা মোকাবিলায় রাজ্যের ‘প্ল্যান অফ অ্যাকশন’ নিয়েও কথা হয়েছে দুপক্ষের। মুখ্যমন্ত্রীও প্রধানমন্ত্রীর কাছে কেন্দ্রীয় সহায়তা, করোনা নির্ণায়ক কিট-সহ একাধিক পরিকাঠামো ও সহায়তা চান। যা তিনি আগেও চেয়ে পাননি বলেই অভিযোগ। একইসঙ্গে রাজ্যের বাইরে আটকে পড়া মানুষদের কী করে রাজ্যে ফেরানো যায় তাই নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গেও এদিন কথা হয় মুখ্যমন্ত্রীর। এর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গেও এদিন সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা কথা বলেছেন বলে জানা গিয়েছে।
করোনা মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই ১ লক্ষ ৭২ হাজার কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছে কেন্দ্র৷ প্যাকেজে চিকিৎসক-সহ সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ৫০ লাখ টাকা বিমা ঘোষণা করা হয়েছে। ৮০ কোটি গরিবের জন্য 'প্রধানমন্ত্রী অন্ন যোজনা'-র আওতায় আগামী তিন মাস বিনামূল্যে চাল বা গম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । একইসঙ্গে এক কেজি ডাল দেওয়া হবে। ৮ কোটি ৬৯ লক্ষ কৃষকের জন্য এপ্রিলের শুরুতে ২ হাজার টাকা করে দগেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। ১০০ দিনের কাজে মজুরি ১৮২ টাকা বাড়িয়ে করা হয়েছে ২০২ টাকা। এর ফলে উপকৃত হবেন ৫ কোটি শ্রমিক।অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রীও বর্তমান পরিস্থিতিতে গরীব-খেটে খাওয়া মানুষকে সুরাহা দিতে ২০০ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছে।
