কলকাতা: শুক্রবার প্রাথমিকের একটি মামলার শুনানি চলছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে। শুনানি চলাকালীন বিচারপতির নজর পড়ে দুই মহিলার ওপর যারা একপাশে হাত জড়ো করে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁদের দেখা মাত্রই বিচারপতি জানতে চান তারা কেন এভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। উত্তরে দুজনের মধ্যে এক মহিলা জানান, তিনি তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ, তাঁর কারণেই নিজের বাচ্চার চিকিৎসা করাতে পারছেন তিনি। বিষয়টি শুনে অবাকই হন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন- ২১ ফেব্রুয়ারির প্রতিবাদ কর্মসূচির পর ‘ভাষা বাঁচাও কনভেনশন’, সিদ্ধান্ত নিল সংগঠন
এদিন আদালতে হাজির হয়েছিলেন মিতালি দাস নামের ওই মহিলা এবং তাঁর মা। মিতালি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে জানান, তিনি তাঁর জন্য ভগবান। তাঁর জন্যই নিজের বাচ্চার চিকিৎসা হচ্ছে। কিন্তু বিচারপতি নিজে আসল ঘটনা ভুলে গিয়েছিলেন। তখন মিতালি মনে করান, তাঁর নামে ১৮টি মামলা রয়েছে। তাঁর স্বামী ওই মামলাগুলি করেছে। বিচারপতি বীরভূম জেলার মুখ্য বিচারককে ফোন করে তাঁর বিষয়টি দেখতে বলেছিলেন। তাতেই অনেকটা উপকৃত হয়েছেন তিনি। এই কথা শুনে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় তাঁকে প্রশ্ন করেন, সমস্যা যখন মিটে গিয়েছে তাহলে তিনি আবার আদালতে এসেছেন কেন। এই প্রশ্নের উত্তরে বড় সমস্যার কথা জানান মিতালি।
আরও পড়ুন- হাওড়ার মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে, কী ভাবে হৈমন্তীর ওপর নজর পড়ল গোপাল দলপতির
ওই মহিলা বলেন, ২০১৯ সালে হাইকোর্ট তাঁর শিক্ষক স্বামীকে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু বোলপুরের অতিরিক্ত জেলা বিচারক সুজয় সেনগুপ্ত তা কমিয়ে ৮ হাজার করে দিয়েছেন। এর ফলে বাচ্চার চিকিৎসায় সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মিতালি। এই তথ্য জানার পর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় তাঁকে প্রশ্ন করেন, বিচারক নির্দেশে কোথাও কিছু লিখেছেন কিনা? আর তিনি যেন তাঁকে সব নির্দেশের প্রতিলিপি দেন। মিতালি এদিন আরও জানান, কেন টাকা কমানো হয়েছে সে ব্যাপারে কিছুই জানান হয়নি, এদিক কম টাকার ফলে তাঁর বাচ্চার চিকিৎসার সমস্যা হচ্ছে, সে প্রতিবন্ধী। উলটে তাঁর বিরুদ্ধে আবার অনেক মামলা করেছে স্বামী। সব মিলিয়ে তিনি অসহায় বোধ করছেন।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে কুন্তলের মুখে নতুন নাম! Kuntal Ghosh reveals new name in job scam” width=”853″>
হাইকোর্টকে মিতালি আরও জানিয়েছেন যে, তিনি এই আদালতে আসায় ওই বিচারক অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন! তবে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় তাঁকে আশ্বাস দিয়েছেন যে সব কাগজ তিনি খতিয়ে দেখবেন এবং বিষয়টির সুরাহা করবেন। শেষে মিতালি এবং তাঁর মা কাঁদতে কাঁদতে বিচারপতির পা ছুঁয়ে প্রমাণ করতেও চান। যদিও তা করতে দেননি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।