সিসিটিভি ফুটেজে বড়সড় তথ্য, পরিচিতের মধ্যেই লুকিয়ে দম্পতির খুনি?

সিসিটিভি ফুটেজে বড়সড় তথ্য, পরিচিতের মধ্যেই লুকিয়ে দম্পতির খুনি?

কলকাতা: ভবানীপুরের জোড়া খুন তদন্তের সিসিটিভি ফুটেজে পুলিশের হাতে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। ভবানীপুরের ওই এলাকার সোমবার সন্ধে ছটার দিকে খুনের আগের এবং পরের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে কলকাতা পুলিশ। আর তাতেই ধরা পড়েছে আততায়ীর কিছু গুরুত্বপূর্ণ মুভমেন্ট। যা দেখে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান ভবানীপুরের ওই ফ্ল্যাটের বাসিন্দা অশোক শাহ এবং রেশমি শাহের খুনি পরিচিতদের মধ্যে কেউ হলেও হতে পারে । এ সঙ্গেই জানা যাচ্ছে, মহিলার শরীরে বুলেটের ক্ষত চিহ্ন রয়েছে, পাশাপাশি অশোক শাহের দেহে মিলেছে একাধিকবার ভোতা অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন। এছাড়া দুজনের শরীরেই ধারালো অস্ত্রের কিছু আঘাত রয়েছে।

মঙ্গলবার সকালে মৃত ওই দম্পতির দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। সেই ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলেই জানা যাবে দম্পতির মৃত্যুর আসল কারণ। কিন্তু ইতিমধ্যেই এই খুনের ঘটনা তদন্তের কাজ শুরু করেছেন কলকাতা পুলিশের তদন্তকারী অফিসার এবং ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। মৃত ওই দম্পতির মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে ঘর থেকে বেশ কিছু মূল্যবান সামগ্রী উধাও হয়েছে। অন্যদিকে জানা যাচ্ছে, সোমবার সারাদিনের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখছেন পুলিশ আধিকারিকরা। তাতেই মিলেছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে একেবারে রাস্তার উপর বাড়ি হওয়ায় সারাদিন সদর দরজা বন্ধ রাখা হত। অথচ সোমবার যখন ওই দম্পতিকে মৃত অবস্থায় আবিষ্কার করেন তাদের মেয়ে তখন বাড়ির দরজা হাট করে খোলা ছিল। তবে আততায়ীদের ওই দম্পতিদের মধ্যে কেউ দরজা খুলে দিয়ে ছিলেন কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে তাদের বাড়ির গলির মধ্যে বেশ কিছু সন্দেহজনক মুভমেন্টের ছবি পেয়েছে পুলিশ। সেগুলো বিস্তারিতভাবে পরীক্ষার জন্য লালবাজারে পাঠানো হয়েছে ইতিমধ্যেই।

১৯৯৮-৯৯ সাল নাগাদ হরিশ মুখার্জি রোডের ওই বাড়িতে আসেন মৃত অশোক শাহ এবং তার পরিবার। মেহেতা বিল্ডিংয়ে আগে অশোক শাহের একটি স্টোভের দোকান ছিল। পরবর্তীতে তারা শেয়ার বাজারের বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হন। অশোক এবং রেশমির তিন মেয়ে। দুই মেয়ের বিয়ের আগেই হয়ে গেছে। আরেক মেয়ে তাদের সঙ্গেই ভবানীপুরের ঐ বাড়িতে থাকতেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সেই মেয়েই বাবা-মাকে রক্তাক্ত এবং মৃত অবস্থায় আবিষ্কার করে। প্রাথমিক জেলা পুলিশের অনুমান লুটের উদ্দেশ্যে খুন করা হয়েছে ওই গুজরাটি দম্পতিকে। তবে অন্যান্য সম্ভাবনার কথাও একেবারে উড়িয়ে দিতে পারছে না পুলিশ আধিকারিকরা। খুনের ঘটনাকে লুটের ঘটনা হিসেবে সাজানো হয়েছে কিনা সে বিষয়েও তদন্ত করে দেখছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।

এদিকে খুনের ঘটনায় সোমবার রাতে প্রকাশ্যে আসতেই শহরজুড়ে ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির অনতিদূরেই এই ঘটনা ঘটায় সোমবার সন্ধ্যেতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছান কমিশনার প্রবীণ ত্রিপাঠি। তার কিছুক্ষণ পরেই ঘটনাস্থলে যান মেয়র ফিরহাদ হাকিম। অন্যদিকে উত্তরবঙ্গ সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনার বিস্তারিত তথ্য জানতে পুলিশ কমিশনারকে ফোন করেন বলে জানা যাচ্ছে। এর সঙ্গেই তিনি সিভিকে নির্দেশ দেন যত দ্রুত সম্ভব দোষীদের গ্রেফতার করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

14 + three =