ধানখেতে সদ্যজাত, পালিত সন্তান হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা

ধানখেতে সদ্যজাত, পালিত সন্তান হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা

মালদহ: ধান খেত থেকে উদ্ধার হল সদ্যজাত সন্তান। প্রায় দু মাসের মাথায় একই ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মালদহের রতুয়ার দেবীপুর এলাকাজুড়ে।স্থানীয়দের চিন্তার বিষয়, আগেকার মতো এবারও সদ্যজাত উদ্ধার হয়েছে দেবীপুর অঞ্চলের বাহিরকাপ পুলবান্ধা এলাকায়। তবে এবার কন্যা সন্তান নয় উদ্ধার হয়েছে পুত্র সন্তান। বিগত ১০ দিন ধরে সেই সন্তানকে লালন পালন করছিলেন পুলবান্ধা গ্রামের সন্তান হীন এক গৃহবধূ। পুরো বিষয়টি জানতেন গ্রামবাসী। তবুও প্রশাসনকে কেউ জানায়নি। বৃহস্পতিবার ওই সদ্যোজাতকে পোলিওর টিকা দেওয়ার জন্য স্থানীয় সব-সেন্টারে নিয়ে যেতেই গোটা ঘটনা প্রকাশ্যে আসে।

গত ২৭ জানুয়ারি পুলবান্ধা গ্রামের একটি ভুট্টাখেত থেকে মা পরিত্যক্তা এক সদ্যোজাত কন্যা সন্তান উদ্ধার হয়েছিল। চিকিৎসকদের হস্তক্ষেপে সেই সন্তান চাইল্ড লাইনের হেপাজতে যায়। ঠিক দুই মাসের মাথায় একই জায়গা থেকে একটি ধানখেত থেকে আবার উদ্ধার হয়েছে সদ্যোজাত পুত্র সন্তান। গোটা গ্রামে খবর ছড়িয়ে পড়ে। সেই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন পুলবান্ধা গ্রামের গৃহবধূ আয়েশা খাতুন। তার স্বামী জিয়ারুল কলকাতার একটি স্টিল ফ্যাক্টরিতে কাজ করেন। তাদের ১০ বছর বিয়ে হলেও কোনো সন্তান হয়নি। সেই মা পরিত্যাক্তা পুত্র সন্তানকে বুকে জড়িয়ে বাড়ি নিয়ে আসেন এবং সাত দিন পর আকিকা (মুখেভাত) অনুষ্ঠান কোরান। সন্তানের নামকরণও করেছিলেন আব্দুর রহমান। তবে তার এই আনন্দ বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। বৃহস্পতিবার নির্দিষ্ট সময়ে পোলিও টিকা দেওয়ার জন্য সদ্যোজাতকে নিয়ে যান স্থানীয় সব-সেন্টারে তখনই তার জীবনে বিপত্তি নেমে আসে। সদ্যোজাতের কোন জন্ম শংসাপত্র না থাকার আশা কর্মীদের সন্দেহ হয়। তারা আয়েশাকে থানা থেকে জন্ম শংসাপত্র লিখে আনতে বলেন। তাদের কথা শুনে আয়েশা শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদ রতুয়া থানা গেলে পুলিশের সন্দেহ হয়। পুলিশের কাছে গোটা ঘটনা স্বীকার করেন তিনি। শুক্রবার রাতেই রতুয়া থানার পুলিশ বাচ্চা সহ আয়েশাকে নিয়ে যায় রতুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে।

পুলিশকর্মীরা বাচ্চাটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। যে মহিলা ১০ দিন ধরে বাচ্চাটিকে লালন-পালন করেছেন ওই বাচ্চাটিকে তিনি দত্তক নিতে চাইছেন। আমরা এভাবে কারো হাতে বাচ্চা তুলে দিতে পারি না, তাই আমরা গোটা ঘটনা উপরমহলে জানিয়েছি, আইন মেনে জেলা চাইল্ড লাইনের খবর দিয়েছি। তবে বারবার একই জায়গায় এমন ঘটনা ঘটায় আমরা ভীষণ চিন্তিত। রতুয়া গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসক অর্ণব রায় বলেন, পুলিশ হেফাজতে বাচ্চাটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে বাচ্চাটি পুত্রঙ সন্তান এখন সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে। পুলবান্ধা গ্রামের এক মহিলার কাছে সেই সদ্যজাত শিশু ছিল। তিনি ১০ দিন ধরে বাচ্চাটিকে লালন পালন করছিলেন। পোলিও টিকাকরণের জন্য স্থানীয় সব-সেন্টারে বাচ্চাটিকে নিয়ে গেলে সেখানেই বিষয়টি জানাজানি হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − ten =