কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলেই কি নির্বিঘ্নে শেষ হবে পঞ্চায়েত ভোট? কী হবে নির্বাচনে? প্রমাদ গুণছেন ভোটাররা

কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলেই কি নির্বিঘ্নে শেষ হবে পঞ্চায়েত ভোট? কী হবে নির্বাচনে? প্রমাদ গুণছেন ভোটাররা

নিজস্ব প্রতিনিধি: পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন পর্ব থেকেই অশান্তি চরম আকার নিয়েছে। শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে মনোনয়ন। আর সেদিন থেকেই বহু জেলায় মনোনয়নকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামে ফুলচাঁদ শেখ নামে এক কংগ্রেস কর্মীকে খুনও হতে হয়েছে। আর মঙ্গলবার দিনভর ভাঙড়ে মনোনয়ন পেশকে কেন্দ্র করে যা চলল তাতে পঞ্চায়েত ভোট কতটা শান্তিতে হবে তা নিয়ে প্রমাদ গুণছেন শান্তিপ্রিয় ভোটাররা। এই আবহের মধ্যে স্পর্শকাতর সাতটি জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে আদালত জানিয়েছে, প্রয়োজনের তুলনায় রাজ্য পুলিশের সংখ্যা কম পড়লে অন্যান্য স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার করতে পারবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এছাড়া প্রত্যেকটি বুথে সিসিটিভি এবং ভিডিওগ্রাফি করার কথাও জানিয়েছে আদালত।

 

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এই ধরনের ব্যবস্থা অতীতেও ছিল রাজ্যের বিভিন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। তবে তাতেও ভোটে অশান্তি দূর করা যায়নি। ভোট বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীকে কীভাবে ব্যবহার করা হবে সেটা পুরোপুরি ঠিক করবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। বিরোধীদের অভিযোগ, অধিকাংশ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বাহিনী জওয়ানদের বাইরে রেখে দেওয়া হয়। তাদের প্রয়োজন মতো ব্যবহার করা হয় না। ভোট নির্বিঘ্নে তখনই হবে যখন বুথের ভিতরে বিরোধী এজেন্টরা উপযুক্ত নিরাপত্তা পাবেন। সেই জায়গা থেকে জেলায় জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলেও ভোট কতটা শান্তিপূর্ণভাবে হবে সেটা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা বিরোধীরা মনোনয়নপত্র পেশ করতে গিয়েই সমস্যায় পড়ছেন। তাই সব আসনে মনোনয়নপত্র জমা না দিতে পারলে সেখানে একতরফা ভাবে জিতে যাবে শাসক দল। তাই নির্বাচনের দিন কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকল না রাজ্য পুলিশ থাকল, তাতে কিছু যায় আসবে না। 

 

এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন কতটা শান্তিপূর্ণভাবে হবে তা নিয়ে প্রমাদ গুণছেন সাধারণ মানুষ। তুলনামূলকভাবে উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তাই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে চ্যালেঞ্জ দক্ষিণবঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট করা। কিন্তু প্রতিদিন যে সমস্ত ঘটনা ঘটছে, যেভাবে বিরোধী দলের প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকরা আক্রান্ত হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠছে, তাতে ভোটের দিন কি হবে তার একটা আন্দাজ পাওয়া যাচ্ছে। ভোট বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন অনলাইন নমিনেশনের ব্যবস্থা থাকলে অনেকটাই সমস্যার সমাধান হতো। তাতে মনোনয়নকে কেন্দ্র করে ক্রমাগত ঘটে যাওয়া হিংসার ঘটনা এড়ানো যেত। কিন্তু সেই ব্যবস্থা রাখেনি কমিশন। আদালতও বিরোধীদের সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। সবমিলিয়ে মনোনয়ন পেশকে কেন্দ্র করে জটিল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই আবহের মধ্যে পঞ্চায়েত ভোট কতটা শান্তিতে হয় সেটাই দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 × five =