তৃণমূল আমলে পঞ্চায়েত ভোটেও কেলেঙ্কারি? সিবিআই তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের! কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে পড়বে না তো?

তৃণমূল আমলে পঞ্চায়েত ভোটেও কেলেঙ্কারি? সিবিআই তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের! কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে পড়বে না তো?

কলকাতা: পঞ্চায়েত নির্বাচনকে ঘিরে কলকাতা হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্ট বহু নির্দেশ দিয়েছে যা নিয়ে আন্দোলিত রাজ্য রাজনীতি। কিন্তু এই সমস্ত কিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার দেওয়া এক নির্দেশ। এক কথায় যাকে বলা হচ্ছে নজিরবিহীন। পঞ্চায়েত নির্বাচনেও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। অভিযোগ উলুবেড়িয়ার বিডিও সিপিএমের দুই প্রার্থীর ফর্ম বিকৃত করেছেন। আর সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্যই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির পাশাপাশি কয়লা পাচার, গরু পাচার মামলায় সিবিআই এবং ইডি বহুদিন ধরেই তদন্ত চালাচ্ছে। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরেও যে কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেবে সেটা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি।

এরপরই চর্চায় একাধিক বিষয় উঠে আসছে। সেটা হল তদন্তকারীদের আতসকাচের নীচে উলুবেড়িয়ার ওই বিডিও থাকার পাশাপাশি আরও কেউ কি চলে আসতে পারেন? ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন বিডিও-র ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শুধু বিডিও কেন, পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত সরকারের একাধিক শীর্ষকর্তার কাজকর্ম নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। তাই সিবিআই উলুবেড়িয়া থেকে তদন্ত শুরু করার পর সেটা যদি আরও দূর পৌঁছে যায় তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। গোটা ঘটনায় রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও রাজ্য সরকার যে চরম অস্বস্তিতে পড়েছে সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার একটাই কারণ যার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তিনি রাজ্য সরকারি কর্মী। তাই বিষয়টি নিয়ে রাজ্য প্রশাসন তদন্ত করলে আসল সত্যিটা সামনে নাও আসতে পারে, এমনটাই আশঙ্কা আদালতের।

স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টি নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে। তাই প্রশ্ন, এবার কি তবে কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে কেউটে বেরিয়ে আসবে? উল্লেখ্য মনোনয়নের শেষ দুটি দিনে তৃণমূল প্রার্থীদের  ফর্ম যেভাবে নিয়েছেন সরকারি কর্মীরা, তাতে প্রশ্ন উঠছে যে এত কম সময়ের মধ্যে কীভাবে সেই কাজ করা সম্ভব হল। বিরোধীদের দাবি এই বিষয়টি নিয়েও তদন্ত করলে আরও বিস্ফোরক তথ্য সামনে আসবে। কারণ একটি মনোনয়নপত্র পরীক্ষা করে জমা নিতে কমপক্ষে ১৫ মিনিট সময় লাগে বলে নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা জানাচ্ছেন। সেই জায়গা থেকে মনোনয়নের শেষ দুই দিনে অর্থাৎ মাত্র আট ঘণ্টার মধ্যে তৃণমূলের ৭৪ হাজারের বেশি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র কীভাবে জমা পড়ে গেল তা নিয়ে প্রশ্ন তো উঠবেই। এই বিষয়টিও সিবিআই তদন্তের আওতায় আসা উচিত বলে বিরোধীদের দাবি। সেক্ষেত্রে ‌আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। সব মিলিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রক্রিয়া যেভাবে নিত্য নতুন বাঁক নিচ্ছে সেখানে এর শেষ কোথায় তা এখনই বলা যাচ্ছে না। একটাই কথা বলতে হয়, পিকচার আভি বাকি হ্যায় মেরে দোস্ত ! আর সেই শেষটা দেখার অপেক্ষাতেই রয়েছেন রাজনীতি সচেতন মানুষজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − 9 =