গ্রেফতার হওয়ার আগে ‘পরমাত্মীয়’কে ফোন করতে চেয়েছিলেন পার্থ, বার তিনেক চেষ্টা, ধরলেন না তিনি

গ্রেফতার হওয়ার আগে ‘পরমাত্মীয়’কে ফোন করতে চেয়েছিলেন পার্থ, বার তিনেক চেষ্টা, ধরলেন না তিনি

কলকাতা: শুক্রবার রাত৷ ঘড়ির কাঁটায় তখন ১টা ৩০৷ নাকতলার বাড়িতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ঘিরে রেখেছেন ইডি-আধিকারিকরা৷ ঘণ্টা চারেক আগে দিল্লি থেকে এসে পৌঁছেছেন ইডি-র এক কর্তা৷ চলছে জিজ্ঞাসাবাদ৷ এমন সময় দিল্লি থেকে ফোনে নির্দেশ, গ্রেফতার করতে হবে রাজ্যের শিল্পমন্ত্রীকে৷ গ্রেফতার করার ঠিক আগে নিময় মাফিক ইডি-র কর্তারা পার্থকে বলেন, কোনও এক নিকট আত্মীয়কে ফোন করে বিষয়টি জানাতে হবে৷ পার্থ জানান, তাঁর স্ত্রী প্রয়াত৷ মেয়ে বিদেশে থাকে৷ দাদা আছেন৷ তবে এত রাতে ফোন করে তাঁকে পাওয়া যাবে না৷ তাহলে উপায়? ইডি-র অফিসাররা জানান, তখন সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর নাম নেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী৷ 

পার্থর মুখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম শুনে ইডি-র অফিসাররা তাঁর কাছে জানতে চান, ‘আপনি কি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কথা বলছেন?’’ পার্থ মাথা নাড়াতেই ইডি-র অফিসাররা ফের জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘এত রাতে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী কি আপনার ফোন ধরবেন?’’ জবাবে পার্থ বলেন, ‘‘যত রাতই হোক মুখ্যমন্ত্রী আমার ফোন ধরবেন৷ তিনি আমার পরমআত্মীয়৷’’ তিনি আরও জানান, সেই কারণেই তিনি মুখ্যমন্ত্রীকেই গোটা বিষয়টি জানাতে চান৷ পার্থর মুখে পরমআত্মীয় কথাটা শোনার পর কলকাতাক অফিসারদের কাছ থেকে তার অর্থ জানতে চান দিল্লি থেকে আসা ইডি-র কর্তা৷ এর পরেই তাঁকে ফোন করার অনুমতি দেওয়া হয়৷ 

এর পরেই ফোন করতে শুরু করেন পার্থ৷ এক ঘণ্টার মধ্যে তিনবার ফোন করেন৷ রিং হয়ে গেলেও ফোন তোলেননি মুখ্যমন্ত্রী৷ ইডি সূত্রে খবর, রাত ঠিক ১টা বেজে ৫৫ মিনিট৷ নিজের মোবাইল থেকে মমতার মোবাইলে ফোন করেন পার্থ। সাড়া মেলেনি৷ রাত ২টা ১০ নাগাদ তাঁখে গ্রেফতার করে ইডি৷ এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, যত রাতই হোক, মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ফোন ধরবেন বলে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন পার্থ৷ কিন্তু ফোন বেজে যাওয়ার পরেও তিনি রিসিভ না করায় হতাশ হয়ে পড়েন৷ এর পর অবশ্য নিজের দাদা ও আইনজীবীকে ফোন করেন৷ এর পর পাশের ঘরে বিশ্রাম নিতে চলে যান৷ 

ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রেফতার হওয়ার খবর শোনার পরই সবার আগে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিষয়টি জানাতে বলেছিলেন৷ সেই কারণেই অ্যারেস্ট মেমোয় তাঁর ‘পরমআত্মীয়’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম রাখা হয়েছে৷ জানা গিয়েছে, রবিবার বাড়ি থেকে বেরনোর সময়ও মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করার চেষ্টা করেছিলেন৷ কিন্তু ফোনে পাননি৷