কোভিড আক্রান্ত ছিল না শুভ্রজিৎ, ১ বছর পর রিপোর্ট পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ল বাবা-মা

কোভিড আক্রান্ত ছিল না শুভ্রজিৎ, ১ বছর পর রিপোর্ট পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ল বাবা-মা

কলকাতা:  ছেলের মৃত্যুর পর এক বছর অতিক্রান্ত৷ মঙ্গলবার অবশেষে মৃত ছেলের কোভিড রিপোর্ট হাতে পেলেন বেলঘড়িয়ার বাসিন্দা বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়৷ একমাত্র ছেলে শুভ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর সুবিচার চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টে গিয়েছিলেন তাঁরা৷ আজ ছেলের করোনা রিপোর্ট হাতে পেয়েই কান্নায় ভেঙে পড়েন শুভ্রজিতের বাবা বিশ্বজিৎ ও মা সর্বানী চট্টোপাধ্যায়। 

আরও পড়ুন- কর্মজীবন নিয়ে হতাশা, বদলির জের! আত্মঘাতী সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক

কেন সেদিন ভুল রিপোর্ট দিল বেসরকারি হাসপাতাল? যাঁদের জন্য অসময়ে চলে যেতে হল শুভ্রজিৎকে, তাঁদের শাস্তির দাবি চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ তাঁর বাবা-মা। ইছাপুরের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র শুভ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যু হয়  ২০২০ সালের ১০ জুলাই৷ এদিন রিপোর্ট হাতে পেয়ে শুভ্রজিতের বাবা-মা বলেন, আমরা বলেছিলাম ওর কোভিড হয়নি৷ তার পরেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কী ভাবে জানিয়ে দিল ও কোভিড আক্রান্ত?

করোনা আতঙ্কের মধ্যে সে দিন এক হাসপাতাল থেকে আর এক হাসপাতালে ছেলেকে নিয়ে ছুটে বেরিয়েছিলেন তাঁরা৷ ওই দিন শারীরিক অসুস্থতার কারণে প্রথমে কামারহাটি ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল শুভ্রজিৎকে। সেখানে কোভিড পরিকাঠামো না থাকায় তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বেলঘরিয়ার একটি নার্সিংহোমে৷ সেখানে গিয়েও দীর্ঘ প্রতীক্ষা করতে হয় তাঁদের৷ পরে শুভ্রজিতের বাবা থানায় ফোন করেন৷ এর পরেই শুভ্রজিতের রক্ত পরীক্ষা করা হয়৷ তাঁর করোনা রিপোর্ট আসে পজেটিভ৷ পাঠিয়ে দেওয়া হয় সাগর দত্ত মেডিক্যালে৷ সেখানে বলা হয় বেড নেই৷ সেখান থেকে ছেলেকে নিয়ে বিশ্বজিৎবাবুরা পৌঁছন মেডিক্যালে৷ সেখানে গিয়েও অপেক্ষা করতে হয় তাঁদের৷ পরে বিকেল ৪টে নাগাদ শুভ্রজিৎকে ভর্তি নেওয়া হয়৷ ওই দিনই রাত পৌনে দশটায় মারা যান শুভ্রজিৎ৷ এর পরেই গাফিলতির জেরে ছেলের মৃত্যুর অভিযোগ তুলে এই চার হাসপাতালের বিরুদ্ধে থানায় যান বিশ্বজিৎবাবু৷ 

আরও পড়ুন- ‘আগামী দিনে নোবেল পাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়’, তৃণমূল নেতার মন্তব্যে তুঙ্গে চর্চা

এখানেই হয়রানির শেষ ছিল না৷ মৃত্যুর পর ছেলের মুখটাও ভালো ভাবে দেখা হয়নি বাবা-মায়ের। ছেলের দেহ দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেয় হাসপাতাল কতৃপক্ষ। কারণ শুভ্রজিৎ-এর করোনা রিপোর্ট পজেটিভ এসেছিল। ছেলের মুখটা শেষ বারের জন্য দেখতে পাবেন না তাঁরা? আইনের দ্বারস্থ হন নিরুপায় মা-বাবা। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে ছেলের মুখ শেষ বারের মতো তাঁরা দেখতে পান। ময়না তদন্তের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে শুভ্রজিতের ভিসেরা, আরটিপিসিআর টেস্টের নির্দেশও দেওয়া হয়৷  মঙ্গলবার আরটিপিসিআর রিপোর্ট হাতে আসে তাঁদের৷ যা দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন শুভ্রজিতের বাবা-মা৷ রিপোর্ট এল নেগেটিভ৷ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × 3 =