চিকেনস নেক ঘিরে ছায়াযুদ্ধ! লালমনিরহাটে চিন-বাংলাদেশ বিমানঘাঁটি?

Siliguri Corridor Geopolitics কলকাতা: ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির ছায়াতেও উপমহাদেশের ভূ-রাজনৈতিক উত্তাপ কমছে না। সাম্প্রতিক সময়ে ভারত-চিন-পাকিস্তান সম্পর্কের টানাপোড়েনের মাঝে নতুন করে উদ্বেগের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে ‘চিকেনস…

Siliguri Corridor Geopolitics

Siliguri Corridor Geopolitics

কলকাতা: ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির ছায়াতেও উপমহাদেশের ভূ-রাজনৈতিক উত্তাপ কমছে না। সাম্প্রতিক সময়ে ভারত-চিন-পাকিস্তান সম্পর্কের টানাপোড়েনের মাঝে নতুন করে উদ্বেগের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে ‘চিকেনস নেক’ তথা শিলিগুড়ি করিডর।

এই করিডর ভারতের জন্য কেবল ভূখণ্ডগতই নয়, কৌশলগত দিক থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব ভারতের একমাত্র স্থল সংযোগরেখা। একে কেন্দ্র করেই এখন শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক স্নায়ুযুদ্ধের সম্ভাব্য নতুন অধ্যায়—যেখানে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশও।

লালমনিরহাটে বিমানঘাঁটি! চিন-বাংলাদেশের যৌথ তৎপরতায় অস্বস্তি

দিল্লির গোয়েন্দা রিপোর্টে উঠে এসেছে বিস্ফোরক তথ্য। জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের লালমনিরহাটে চিনের সহায়তায় একটি নতুন বিমানঘাঁটি গড়ে তোলার পরিকল্পনা চলছে। যার অবস্থান ভারতের সীমান্ত থেকে মাত্র ২০ কিমি দূরে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এই ঘাঁটি ভবিষ্যতে চিন বা পাকিস্তানের নজরদারি, এমনকি সামরিক ব্যবহারের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।

লালমনিরহাটে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার পুরনো বিমানঘাঁটি পুনরায় সক্রিয় করার উদ্যোগ নিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার, আর তাতে অংশ নিচ্ছে চিনা আধিকারিকরা। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ ইউনূসের আমলে ঢাকার সঙ্গে দিল্লির দূরত্ব চোখে পড়ার মতো বেড়েছে। বিপরীতে, ঢাকার সঙ্গে বেজিং ও ইসলামাবাদের ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে উল্লেখজনক ভাবে।

“বাংলাদেশ ভূখণ্ড অভিভাবকের ভূমিকা পালন করছে” — ইউনূসের বিতর্কিত মন্তব্য

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ ইউনূস সম্প্রতি জানান, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি সমুদ্র থেকে বিচ্ছিন্ন, আর তাদের জন্য ‘সমুদ্রপথে প্রবেশের দরজা’ বাংলাদেশ। সেই নিরিখে বাংলাদেশ অভিভাবকের ভূমিকা পালন করছে। এমন মন্তব্যকে ভারত বিরোধিতার সূক্ষ্ম কূটনৈতিক বার্তা হিসেবেই দেখছে ওয়াকিবহাল মহল।

‘চিকেনস নেক’ ঘিরে সেনার ত্রিমাত্রিক মহড়া: বার্তা স্পষ্ট Siliguri Corridor Geopolitics

এই আন্তর্জাতিক উত্তেজনার আবহেই সেনাবাহিনী সম্প্রতি তিনদিনের (৮-১০ মে) ব্যাপক সামরিক মহড়া চালিয়েছে শিলিগুড়ির তিস্তা ফিল্ড ফায়ারিং রেঞ্জে। যুদ্ধের সম্ভাব্য পরিস্থিতিতে স্থল, জল ও আকাশ—তিনটি ক্ষেত্রেই অভিযানের মহড়া হয়েছে। এতে সেনার আটটি শাখা অংশ নেয়, যার মধ্যে ছিল প্যারা স্পেশাল ফোর্স, কামান বাহিনী, ট্যাঙ্ক কর্পস, আর্মি এভিয়েশন, সিগন্যাল ইঞ্জিনিয়ারস, এমনকি রোবোটিক অস্ত্র ব্যবস্থাও।

এই মহড়ার উদ্দেশ্য স্পষ্ট—শত্রু পক্ষের নজরদারির সম্ভাবনা ও আক্রমণ প্রতিহত করার প্রস্তুতি। শিলিগুড়ির কাছে এমন উচ্চমাত্রার মহড়ার একটাই বার্তা- ভারত কোনওরকম নিরাপত্তা হানিকে হালকাভাবে নেবে না।

বিশ্লেষণ: উপমহাদেশে নতুন ‘স্ট্র্যাটেজিক ত্রিভুজ’?

চিন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে গোপন সমঝোতা ভারতের সীমান্ত নিরাপত্তা ও কৌশলগত ভারসাম্যের পক্ষে বিপজ্জনক হতে পারে। বিশেষ করে যখন এই ত্রয়ী ভারতের ‘জিওস্ট্র্যাটেজিক উইন্ডপাইপ’—চিকেনস নেকের কাছাকাছি সক্রিয় হয়, তখন তা শুধুই সীমান্ত নয়, পুরো উত্তর-পূর্ব ভারতের নিরাপত্তার প্রশ্ন।

চিন ইতিমধ্যেই ডোকলাম, অরুণাচল ও লাদাখ ঘিরে আগ্রাসী নীতি গ্রহণ করেছে। তার সঙ্গে যদি বাংলাদেশের ভূখণ্ডও চিনের সামরিক ও নজরদারি ব্যবস্থার অংশ হয়ে ওঠে, তবে তা ভারতের জন্য বড় হুমকি।

 শীতল যুদ্ধের ছায়ায় গরম হচ্ছে উত্তরের আকাশ

বর্তমানে ‘চিকেনস নেক’ ও লালমনিরহাটে শুরু হওয়া জটিল সমীকরণ ভারতকে সতর্ক থাকতে বাধ্য করছে। কূটনীতি ও সামরিক প্রস্তুতি—দুই দিকেই দিল্লিকে একই সঙ্গে শক্ত অবস্থান নিতে হবে। নতুবা শত্রুর কাছে একপাশে খোলা দরজা রেখেই চলতে হতে পারে ভারতকে।

Bengal: Amidst India-China-Pakistan tensions and a fragile ceasefire with Pakistan, the Siliguri Corridor (‘Chicken’s Neck’) becomes a new geopolitical hotspot. Concerns rise over China’s potential involvement in developing an airbase in Lalmonirhat, Bangladesh, near the Indian border.