‘গণতন্ত্রের মৃত্যু ঘণ্টা বেজে গিয়েছে’ ভোট পরবর্তী হিংসার চূড়ান্ত রিপোর্টে বলল NHRC

‘গণতন্ত্রের মৃত্যু ঘণ্টা বেজে গিয়েছে’ ভোট পরবর্তী হিংসার চূড়ান্ত রিপোর্টে বলল NHRC

কলকাতা:  ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে চূড়ান্ত রিপোর্ট পেশ করল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন৷ গতকাল কলকাতা হাইকোর্টে ৫০ পাতার চূড়ান্ত রিপোর্ট পেশ করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন৷ এই মামলার সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকে আজ এই কপি হাতে পেয়ে গিয়েছেন৷ এই রিপোর্টে রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগকে চূড়ান্ত ভাবে মান্যতা দিয়ে বলা হয়েছে, রাজ্যে গণতন্ত্রের মৃত্যু ঘণ্টা বেজে গিয়েছে৷ 

আরও পড়ুন- উপনির্বাচনে জোর দিচ্ছে তৃণমূল, দিল্লিতে প্রতিনিধি দল

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট শুরু হয়েছে কবিগুরুর কবিতার লাইনে৷ এখানে রাজ্যকে ছত্রে ছত্রে আক্রমণ করা হয়েছে৷ ‘চিত্ত যেথা ভয় শূন্য উচ্চ যেথা শিড়, জ্ঞান যেথা মুক্ত, যেথা গৃহের প্রাচীর’-এই তুলে বলা হয়েছে, গত দু’মাসে রবীন্দ্রনাথের মাটিতে খুন, অস্বাভাবিক মৃত্যু, ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটেছে৷ ভিটেছাড়া হয়েছে মানুষ৷ অবিলম্বে ভোট পরবর্তী হিংসা বন্ধ করতে হবে৷ এই ধরনের উদ্বেগজনক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে ছোঁয়াছে রোগের মতো হিংসা ছড়িয়ে পড়বে অন্য রাজ্যেও৷ ভারতের মতো গণতান্ত্রিক দেশে মৃত্যু ঘণ্টা বেজে যাবে৷ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের বিশেষ টিম বেশ কিছু পরামর্শও কলকাতা হাইকোর্টের সামনে রেখেছে৷ 

তাঁদের প্রথম পরামর্শ-সিবিআই এর মতো কোনও নিরপক্ষে সংস্থাকে দিয়ে ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা তদন্ত করার প্রয়োজন রয়েছে৷  খুন, অস্বাভাবিক মৃত্যু বা ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য অপরাধের মমলা অবিলম্বে সিবিআই-এর হাতে তুলে দিতে হবে৷ সেই সঙ্গে রাজ্যের বাইরে এই সকল মামলার ট্রায়াল করা উচিত সিবিআই-এর৷ এ রাজ্যে মামলা হলে আক্রান্তরা বা সাক্ষীরা ভয় পেতে পারেন৷ 

এছাড়া নন্দীগ্রামের কথাও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে৷ গত ১৩ মে দেবব্রত মাইতির মৃত্যু হয়৷ এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে৷ বলা হয়েছে, যে ঘটনাগুলি সিবিআই-এর পক্ষে হস্তক্ষেপ করা সম্ভব নয়, সেক্ষেত্রে রাজ্যের শীর্ষ পদে থাকা আইপিএস বা শীর্ষ পুলিশ কর্তাদের নিয়ে সিট গঠন করতে হবে৷ সিটের কাজ হবে সমস্ত অভিযোগ নথিভুক্ত করা৷ আদালতের পর্যবেক্ষণে তদন্ত চালিয়ে নিয়ে যাবে সিট৷  

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আরও জানিয়েছে, অনেক ক্ষেত্রে মামলা শুরু হলেও নিষ্পত্তি হতে অনেক দেরী হয়৷ তাই দ্রুত বিচারে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট গঠন করতে হবে৷ এই মামলার জন্য বিশেষ সরকারি আইনজীবী নিয়োগ করত হবে৷ হিংসার ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে৷ পুলিশ ও আমলাদের পুর্বিন্যাসের প্রয়োজন রয়েছে বলেও সুপারিশ করা হয়েছে৷ আক্রান্তদের ঘরবাড়ি পুর্নির্মাণ ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করার কথাও বলা হয়েছে৷  

আরও পড়ুন – মঙ্গলকোটে তৃণমূল নেতা খুন, অনুব্রতর ঘোষণার পরই গ্রেফতার ২

 রিপোর্ভোটে বলা হয়েছে, ভোটের ফল প্রকাশের পর ২ মাস কেটে গেলেও বিভিন্ন জায়গা থেকে হিংসা হচ্ছে৷ সেই সকল জায়গায় স্থায়ী ভাবে পিকেটিং-এর ব্যবস্থা করতে হবে৷ সাক্ষীদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে৷ তাঁদের খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থাও করতে হবে৷ নিহতদের পরিবারের একজনকে চাকরি দিতে হবে৷ এই মর্মে আদালত নির্দেশ দিক, এটাও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে৷ 
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × four =