নয়াদিল্লি: কামদুনি মামলায় ফাঁসির সাজা রদ এবং যাবজ্জীবন সাজা প্রাপ্ত চার জনকে অব্যাহতি দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। ১০ বছর অপেক্ষার পর কামদুনি গণধর্ষণকাণ্ডের রায় দেয় উচ্চ আদালত৷ এই ঘটনায় অভিযুক্ত সইফুল আলি, আনসার আলির ফাঁসির সাজা রদ করল আদালত৷ ফাঁসির বদলে তাদের আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা শোনায় বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ। নিম্ন আদালতে অপর এক ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আসামী আমিন আলিকে বেকসুর খালাস করে আদালত। অন্য দিকে, নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত ইমানুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম এবং ভোলানাথ নস্কর ১০ বছর জেল খাটার কারণে তাদের খালাস করা হয়েছে। এর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য৷ আবেদন জানায় কামদুনিকাণ্ডের আন্দোলনকারীরাও৷ সুপ্রিম কোর্ট কামদুনি কাণ্ডে অভিযুক্তদের উপর বেশকিছু বিধিনিষেধ আরোপ করল।
হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকারের তরফে যে মামলা করা হয়েছিল, বৃহস্পতিবার ছিল সেই মামলার শুনানি৷ দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, মুক্তি পাওয়া অভিযুক্তদের আপাতত বেশ কিছু শর্ত মেনে চলতে হবে৷ বৃহস্পতিবার কামদুনিকাণ্ডে একটি অন্তর্বর্তী নির্দেশে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিআর গভাই এবং বিচারপতি পি কে মিশ্রের বেঞ্চ বলে-
১) এই মামলায় কলকাতা হাই কোর্ট যাঁদের মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে, তাঁদের প্রতি মাসে সোম এবং শুক্রবার থানায় হাজিরা দিতে হবে।
২) প্রত্যেকের পাসপোর্ট জমা থাকবে পুলিশের কাছে।
৩) প্রত্যেককে তাঁদের মোবাইল নম্বর থানায় জমা দিতে হবে। মোবাইল তথ্য থানায় জানাতে হবে।
৪) কোথাও যাওয়ার ৪৮ ঘণ্টা আগে থানায় জানাতে হবে। কোথায় যাচ্ছেন, কেন যাচ্ছেন সব তথ্যই জানাতে হবে। ফিরে এসে আবারও রিপোর্ট করতে হবে থানায়।
৫) তাঁরা কোনও ভাবেই বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের অধীনে রাজারহাট থানার নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকা ছাড়তে পারবেন না৷
৬) নিজেদের বাড়ির ঠিকানা, বা অস্থায়ী ঠিকানা পুলিশকে জানাতে হবে। কোনও ভাবে থাকার জায়গার বদল ঘটলে, সেটাও পুলিশকে জানাতে হবে৷
৭) কোনও ভাবেই তাঁরা কামদুনির নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন না৷
৮) একই ধরনের কোনও অপরাধ করবেন না। বা এই ধরনের অপরাধের সঙ্গে যাতে তাদের নামও না জড়ায়৷