পিতৃপক্ষের অবসান, দেবী পক্ষের সূচনায় ঘাটে ঘাটে তর্পণ বাংলায়

পিতৃপক্ষের অবসান, দেবী পক্ষের সূচনায় ঘাটে ঘাটে তর্পণ বাংলায়

কলকাতা: আজ মহালয়া৷ পিতৃ পক্ষের অবসান৷ দেবী পক্ষের শুভ সূচনা। দীর্ঘকাল ধরে কোটি কোটি মানুষ মহালয়ার পূন্যপ্রভাতে মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে জল অঞ্জলি দিয়ে স্মরন করে চলেছেন তাঁদের বিদেহী পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে। এবার করোনার আবহে কিছুটা হলেও ফিকে হয়ে পড়েছে ঘাটে ঘাটে মহালয়ায় পিতৃতর্পণ। উত্তর দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন নদীর ঘাটে পূর্বপূরুষদের স্মরণে তর্পণ করে। এমনি চিত্র দেখা গেল মালদহ থেকে হাওড়া সর্বত্র৷

কালিয়াগঞ্জের শ্রীমতি নদীর ঘাটে বেশকিছু মানুষ পূর্বপূরষদের স্মরণে তর্পণ করে। তবে প্রতিবারের মতো এবছর পিতৃ তর্পণের ভিড় সেভাবে দেখা গেল না নদীর ঘাটগুলিতে। এমনিতেই করোনার কারনে পুজোর গন্ধ অনেকটাই হারিয়ে গেছে। তবুও কালিয়াগঞ্জের শ্রীমতি নদীর ঘাটে বেশকিছু পূন্যার্থীর সমাগম ঘটে। পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে পিতৃতর্পণ করতে দেখা গিয়েছে।

বুধবার মহালয়ার ভোর থেকে হাওড়াতেও তর্পণ করতে মানুষ আসেন গঙ্গার ঘাটে। দুর্ঘটনা এড়াতে গঙ্গাবক্ষে নজরদারি ছিল পুলিশের। পিতৃপক্ষের অবসান দেবীপক্ষের সূচনায় এদিন মহালয়ার ভোরে তর্পণ চলে হাওড়ার বিভিন্ন ঘাটে। সকাল থেকেই তর্পণের জন্য প্রচুর মানুষ ভিড় জমান গঙ্গার ঘাটগুলিতে। রামকৃষ্ণপুর ঘাট, শিবপুর ঘাট, বাঁধাঘাট সহ বালির বিভিন্ন ঘাটেও তর্পণের জন্য ভোর থেকেই মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। সকাল থেকেই গঙ্গার ঘাটগুলিতে দেখা যায় মানুষের উপচে পড়া ভিড়। রীতি মেনে সকলেই মহালয়ার ভোরেই পিতৃপুরুষকে তর্পণ করার জন্য তাঁরা হাজির হন।

মহালয়ার ভোরে পিতৃপক্ষের অবসান ঘটিয়ে মাতৃ পক্ষের শুভারম্ভের মুহূর্তে নদীয়ার তীর্থভূমি শান্তিপুর ভাগীরথী নদীর বড়বাজার ঘাট সহ বিভিন্ন ঘাটে অসংখ্য মানুষজনকে দেখা গেল ধর্মীয় রীতি তর্পণ পদ্ধতির মধ্য দিয়ে পূর্বপুরুষদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে। বিশেষ এই ক্ষণে শান্তিপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে কাতারে কাতারে মানুষ ছুটে এসেছেন ভাগীরথী নদীর বিভিন্ন ঘাটে। যদিও মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রভাবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এই বছর ধর্মপ্রাণ মানুষজনের সমাগম কিছুটা কম হলেও দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষ এইদিন তর্পণ করতে ছুটে এসেছেন শান্তিপুরে।

তবে ব্যতিক্রমী চিত্র ধরা পড়ল দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের গঙ্গার ঘাটে। করোনা আতিমারির জন্য এই বছর মহালয়ার সকালে খুললো না দক্ষিণেশ্বর মন্দির। সকাল থেকেই বন্ধ রাখা হয় দক্ষিণেশ্বর মা ভবতারিণীর কালি মন্দির। ফলে মহালয়ার পূণ্য লগ্নে দক্ষিণেশ্বরে পুজো দিতে এসে ও তর্পণ করতে এসে ভক্তরা দেখেন তালা ঝুলছে মন্দিরের মূল ফটকে। সেই সঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয় আজ ৩ টে তে খোলা হবে মন্দির। তবে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের ঘাটে তর্পণ না হলেও মন্দিরে পার্শ্ববর্তী ঘাটগুলিতে তর্পণ হয়। এদিন মায়ের দর্শন না পেয়ে দূর দুরন্ত থেকে আসা ভক্তদের খালি হাতে ফিরে যেতে হয়। কোন অগ্রিম নোটিশ না দিয়ে মহালয়াতে মন্দির বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে নিরাশ হন ভক্তরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 + thirteen =