সুপ্রিম রায়ে স্কুলের চাকরি গিয়েছে, পেট চালাতে চপের দোকান খুললেন মালদার দম্পতি

teachers start chop shop মালদা: দুর্গাপুজো কেটে গিয়েছে৷ তবে বর্ষা এখনও বিদায় নেয়নি বঙ্গ থেকে৷ আর বৃষ্টি ভেজা সোদা মাটির গন্ধের সঙ্গে যে জিনিসটি সবচেয়ে…

teachers start chop shop

teachers start chop shop

মালদা: দুর্গাপুজো কেটে গিয়েছে৷ তবে বর্ষা এখনও বিদায় নেয়নি বঙ্গ থেকে৷ আর বৃষ্টি ভেজা সোদা মাটির গন্ধের সঙ্গে যে জিনিসটি সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করে, সেটি হল তেলেভাজা৷ সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি গিয়েছে শিক্ষাকর্মী দম্পতির৷  শিল্পায়নের ‘সুপ্রিম’ পরামর্শ মেনে চপের দোকান দিয়েছেন বিজয় সিংহ ও তনুশ্রী সাহা সিংহ৷ আজ এক বাস্তব সংকটের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে মালদার এই দম্পতির জীবন৷ একসঙ্গে চাকরিতে নিয়োগ পাওয়া তনুশ্রী এবং তাঁর স্বামী বিজয় এখন কর্মহীন। এই কঠিন পরিস্থিতিতে ভরসা চপের দোকান৷

ক্রেতারা অবশ্য চপ খেয়ে খুশি৷ তাঁরা বলছেন, ‘ওঁরা খুবই সুস্বাদু চপ বানাচ্ছেন৷ চপ খেয়ে ভালো লেগেছে৷’  এক সময় চপ শিল্পের কথা বলেছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চাকরি হারিয়ে সেই পথই বেছে নিয়েছেন এই দম্পতি।

চাকরি বাতিল

২০১৮ সালে মালদার রতুয়ায় সম্বলপুর হাই স্কুলে নিয়োগ পান তনুশ্রী সাহা সিংহ৷ একই স্কুলে শিক্ষাকর্মী হিসাবে নিয়োগ পান তাঁর স্বামী বিজয়৷ কিন্তু নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ে যে ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকা ও শিক্ষাকর্মী চাকরি হারান তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বিজয় এবং তনুশ্রীও৷ তাঁরা আন্দোলন করেছেন৷ তবে চাকরি বাঁচাতে পারেননি৷ এদিকে ক্রমেই সঞ্চয় ফুরিয়েছে৷ ছেলেমেয়ের লেখাপড়া, বাড়ি ভাড়ার খরচ জুগিয়ে পেটের জ্বালা মেটাতে বেগ পেতে হয়েছে তাঁদের৷ অগত্যা বেছে নেন চপ শিল্পকে৷  কেন চপের দোকান খুললেন?

চপের দোকানই বাঁচার পথ teachers start chop shop

জবাবে তনুশ্রী বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন চপ শিল্পের কথা৷ তাই ভাবলাম এটাই করি৷ তাঁর পরমর্শে গোটা রাজ্য চলছে৷ তাই আমরাও তাঁর দেখানো পথ বেছে নিয়েছি৷’  সংকটের মধ্যে সংসার চালাতে চপের দোকান খুলেছেন তনুশ্রী। জেলা তৃণমূল পার্টি অফিস থেকে মাত্র ১০০ মিটারের দূরত্বে মালদা শহরের ব্যস্ততম রথবাড়ি এলাকায় ছোট্ট গুমটি ঘরে শুরু করেছেন চপের ব্যবসা। কখনো মুড়ি ও ঘুড়িও বিক্রি করেন। দোকানে রেখেছেন চিপস, সিগারেট ইত্যাদিও, তবে মূলত চপই প্রধান। দোকানে সাহায্য করতে ছুটির দিনে শহরের লোলিত মোহন হাই স্কুলের ছাত্র বিশাল সিংহও আসে, যিনি তনুশ্রীর সহায়ক হিসেবে দায়িত্ব নিচ্ছেন। এদিকে, চাকরি চলে যাওয়ায় বিজয় গাড়ি চালিয়ে সংসারের হাল ধরছেন।

স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, “সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি চলে গিয়েছে, তাই সংসার চালাতে যে পথ ঠিক মনে হয়েছে, সেটাই অবলম্বন করেছে। আমরা নিয়মিত এখানে আসি খাওয়া দাওয়া করতে।”

রাজনৈটিক টানাপোড়েন

এদিকে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগ বাতিলের ঘটনায় রাজনৈতিক জলঘোলা শুরু হয়েছে। শাসক ও বিরোধীরা একে অপরের দিকে দোষ চাপাচ্ছেন, এবং এই নিয়োগ বাতিলের বিষয়টি রাজনীতির নতুন ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। তৃণমূল নেতারা বলছেন, এই অবস্থার জন্য দায়ী বিজেপি ও সিপিএম৷ তারা যৌথ ভাবে মামলা করেছে৷ প্রশ্ন করতে হবে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে, সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারীদের৷ আবার মালদার সিপিএম নেতা অম্বর মিত্র বলেন, সামনে কোনও রাস্তা না পেয়ে ওরা এই কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন চপ ভাজা, কাশফুল দিয়ে বালিশ তৈরি করার কথা৷ সেই কথাই ওরা শুনেছেন৷

নেতারা যাই বলুন না কেন, রাজনীতির চোরাবালিতে ডুবতে চান না তনুশ্রী-বিজয়৷ তাই আর ধরনা নয়৷ চপ বেচেই বাঁচার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এই দম্পতি৷

সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিযোগ

যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিযোগ, এই দম্পতি ‘অযোগ্য’৷ সম্প্রতি স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মালদার শিক্ষক দম্পতি বিজয় ও তনুশ্রীর চাকরির বিস্তারিত চিত্রও উঠে এসেছে।

বিজয় সাহা সিংহ গ্রুপ সি ক্যাটাগরিতে নিয়োগ পেয়েছিলেন। তাংর রোল নম্বর 46081617030639। SSC-এর তথ্যানুযায়ী বিজয়ের প্রাপ্ত নম্বর এক৷ সেই নম্বরের সঙ্গে ৫৩ নম্বর যোগ করে ৫৪ করা হয় এবং সেই অনুযায়ী তিনি টেলামি হাই স্কুলে নিয়োগ পান।

অন্যদিকে, তনুশ্রী সাহা সিংহ গ্রুপ ডি ক্যাটাগরিতে নিয়োগ পেয়েছিলেন। তার রোল নম্বর 260916070270284। এই সত্যতা যাচাই করে দেখেনি আজবিকেল.কম৷

 

 

 Bengal: Fired from teaching jobs after a Supreme Court verdict, Malda couple Bijoy & Tanushree start a thriving ‘chop’ (fritter/telebhaja) business, echoing the CM’s advice. This inspirational story highlights resilience & the po