চাপে পড়ে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকল কমিশন! কতটা শান্তিপূর্ণ হবে নির্বাচন?

চাপে পড়ে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকল কমিশন! কতটা শান্তিপূর্ণ হবে নির্বাচন?

নিজস্ব প্রতিনিধি: পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণার পর মনোনয়নপত্র পেশ শুরু হতেই অশান্তির আগুনে জ্বলছে বেশ কয়েকটি জেলা। ইতিমধ্যেই দুষ্কৃতীদের গুলিতে মুর্শিদাবাদ জেলায় মৃত্যু হয়েছে এক কংগ্রেসকর্মীর। মনোনয়নপত্র পেশকে ঘিরে দফায় দফায় অশান্ত হয়েছে মুর্শিদাবাদের ডোমকল।

 

এছাড়া বাঁকুড়া, বীরভূম, কাটোয়া, ভাঙড়-সহ বিভিন্ন জায়গায় অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার সর্বদলীয় বৈঠক ডাকল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কিন্তু নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার সময় যখন সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার প্রসঙ্গ উঠেছিল তখন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা জানিয়েছিলেন  সর্বদলীয় বৈঠক না ডেকেও নির্বাচনে দিনক্ষণ ঘোষণা করা যায়। তবে কী এখন পরিস্থিতি প্রতিকূল বুঝেই সর্বদলীয় বৈঠক ডাকতে বাধ্য হলেন তিনি? যেভাবে পরিস্থিতি এখন থেকেই নাগালের বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে তা সামাল দেওয়ার লক্ষ্যেই মত পরিবর্তন করেছেন নির্বাচন কমিশনার? তবে কি চাপের মুখে পড়ে মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিন বাড়াবে কমিশন? এই প্রশ্ন তুলছেন সমালোচকরা।

 

যেভাবে মনোনয়ন পেশের শুরু থেকেই ব্যাপক অশান্তি শুরু হয়ে গিয়েছে জেলায় জেলায়, তাতে নির্বাচন কতটা শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হবে সেই সংশয় থেকেই যাচ্ছে। তবে প্রশ্ন উঠছে, সর্বদলীয় বৈঠক তো ডাকা হয়েছে। কিন্তু সেখানে বিরোধীদের বক্তব্য কতটা শোনা হবে? সেখানে শাসক দল যা বলবে মূলত তাতেই মান্যতা দেওয়া হবে বলে রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করছেন।  

গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৩৪ শতাংশ আসনে বিরোধীরা মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি। কিন্তু এবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক  বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার আশ্বাস দিয়ে বলেছেন বিরোধীরা যাতে সমস্ত আসনে মনোনয়ন জমা করতে পারেন তা সুনিশ্চিত করা হবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। তৃণমূলের বিভিন্ন স্তরের নেতাদেরও একই কথা বলতে শোনা গিয়েছে। কিন্তু সেই আশ্বাসের সঙ্গে বাস্তবের ছবিটা মিলছে না। মনোনয়নের ফর্ম তুলতে গেলে বিরোধী প্রার্থীদের মারধর করা হচ্ছে বলে চতুর্দিক থেকে অভিযোগ আসছে।

রাজনৈতিক মহলের আশঙ্কা নির্বাচনের দিন যত এগিয়ে আসবে ততই এমন ঘটনার সংখ্যা আরও বাড়বে। ঠিক সেই জায়গা থেকে রাজ্য নির্বাচন কমিশন যে সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছে তাতে কতটা ফল মিলবে সেটা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। কারণ শাসক দলে নীচুতলার নেতাকর্মীদের কন্ট্রোল করা না গেলে পরিস্থিতি যে স্বাভাবিক হবে না সেটা স্পষ্ট। শীর্ষ নেতৃত্ব বারবার বলার পরেও কেন তাঁদের একাংশ এমন আচরণ করছেন তার জবাব দেবেন কে? এবারের নির্বাচনেও কি গতবারের পুনরাবৃত্তি হবে? হাজার হাজার আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে যাবেন শাসক দলের প্রার্থীরা? তাই শুধু সর্বদলীয় বৈঠক করলেই যে সমস্যার সমাধান হবে তা কিন্তু নয়। প্রয়োজন প্রশাসনের তরফে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া। তবেই মোটের উপর নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four + twenty =