কলকাতা: আরজিকর কাণ্ডেও হিন্দুত্ববাদের ধ্বজা উড়িয়ে প্রতিবাদ?নির্যাতিতার বিচার চাইতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ‘কৃষ্ণ’ মাস্টারপ্ল্যান!মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে কোণঠাসা,‘ব্র্যান্ড হিন্দুত্ব’-র ধ্বজাধারী নরেন্দ্র মোদীর প্রোমোশন?এক ঢিলে দুই পাখি মারার ছক কষলো নাকি বিজেপি?
আরজিকর কাণ্ডে নির্যাতিতার সুবিচারের দাবিকে সামনে রেখে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ব্যানারে বঙ্গ-বিজেপি কী বাংলায় জন্মাষ্টমী উপলক্ষে হিন্দুত্ববাদকে হাতিয়ার করলো? সোমবার জন্মাষ্টমী। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস। এই দিনটাকেই আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদের জন্য বেছেছে পরিষদ। শুধু বাংলা নয়, গোটা দেশের জন্যই এই দিনটাকেই ধার্য করা হয়েছে। না, সাধারণ প্রতিবাদ নয়। বাংলায় এই মুহূর্তে যে ‘প্রতিবাদের আবহ’, তাতে সাংগঠনিক প্রচারের কর্মসূচির পরিবর্তে অন্যধরনের মিছিলের পরিকল্পনা ছিল পরিষদের। বরং এই দিনে ‘বিচার চাই’ দাবি নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ছোটদের ‘কৃষ্ণ’ সাজিয়ে মিছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদের। মোদ্দা কথা, শ্রীকৃষ্ণের আহ্বান। ধর্মরক্ষার জন্য এখন তাঁকেই দরকার।এমনটাই মনে করছে এই ধর্মীয় সংগঠন।
এক্ষেত্রে একটা কথা মনে পড়ে যায়। মিশন ২০২৪-এ চড়া হিন্দুত্বের লাইনেই বাংলায় বাজিমাত করার পরিকল্পনা করেছিল বিজেপি। এমনকি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ব্যানারে বঙ্গ-বিজেপি গত বছরের শেষে বাংলায় রামমন্দিরের হাওয়া তুলতে চেয়েছিল। তারপরেও লোকসভা নির্বাচনের ফলে বাংলায় বিজেপির ফলাফল কী বা কেমন হয়েছে, তা আর নতুন করে বলার দরকার নেই। এবার জন্মাষ্টমী। এরইমধ্যে আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে বাংলা জুড়ে তোলপাড়। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনাতেও লেগেছে রাজনীতির রং। বিজেপি গোটা ঘটনাকে হাতিয়ার করে রাজ্য সরকারকে কোণঠাসা করতে উঠে পড়ে লেগেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর পদত্যাগ এর দাবি জানাচ্ছে। তার মাঝে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের এই পরিকল্পনা। তাহলে কী এবার নির্যাতিতার সুবিচারের দাবিকে সামনে রেখে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ব্যানারে বঙ্গ-বিজেপি জন্মাষ্টমীর হাওয়ায় সেই হিন্দুত্ববাদকেই হাইলাইট করতে চাইল?
এপ্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, বাঙালি শক্তির তুলনায় ভক্তিতে বেশি আশ্বাস রাখে। সেটা জেনেবুঝেই তাহলে বিজেপির ঘুরপথে এই মাস্টারস্ট্রোক?
এখানেও ধর্মীয় সেন্টিমেন্টকেই কাজে লাগানো হচ্ছে?
যদিও কৃষ্ণের সঙ্গে রাধা নয়।
বরং কী ভাবে সারদা মায়ের বাংলা এক মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর আমলে নারী নির্যাতনের নরক হয়ে উঠেছে, তা গোটা দেশকে জানাতে এই পরিকল্পনা বিশ্ব হিন্দু পরিষদের। মোদ্দা কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কোণঠাসা করাই উদ্দেশ্য। ‘নারী সশক্তিকরণের প্রচার’ এর মধ্যে দিয়ে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণে শান দেওয়ার জন্যই এতো তোড়জোড় বলে ধারণা ওয়াকিবহালদের একাংশের। কিন্তু এই হিন্দুত্বের প্রচারে জোর, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ভুরি ভুরি অভিযোগ তুলে ব্যালটে আদৌ কোনও ডিভিডেন্ড পাবে তো বিজেপি? বলা ভালো, অতদিন অপেক্ষা করবে তো?