নয়াদিল্লি: সাধারণ বাজেটে যে বিষয়ের সবচেয়ে বেশি নজর সেই আয়কর নিয়েই দেশের মানুষের মধ্যে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, দেশের কোন আয়কর কাঠামোকে পছন্দ করবে মানুষ, নতুন না পুরনো? সেই নিয়েই ধন্দ বেড়ে চলেছে। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরমের কথায়, নির্মলা সীতারমণের আয়কর ছাড়ের ঘোষণা আসলে জনবিরোধী। এই নিয়ে চিদাম্বরমের ট্যুইট-
• পুরনো ও নতুন আয়কর কাঠামোর মাঝে দেশবাসীকে ঠকাচ্ছে নির্মলার বাজেট
• রাষ্ট্র দ্বারা সুরক্ষিত অর্থনীতি যে কোনও উন্নয়নশীল দেশের জন্য জরুরি
• সেখানে দেশবাসীর ব্যক্তিগত সঞ্চয়ের উপর নজরই দেওয়া হল না সাধারণ বাজেটে
চিদাম্বরমের এই কটাক্ষকে অনেকটাই সঠিক বলছেন অধিকাংশ অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। যেখানে আয়কর ছাড় ঘিরে একটা কঠিন জ্যামিতি তৈরি করা হয়েছে, যা বুঝতে গিয়েই হিমশিম অবস্থা হবে দেশবাসীর-
• নির্মলা সীতারমণ বললেন, নয়া কর কাঠামোয় বছরের ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে কর মকুব
• পাশাপাশি বললেন, বেতনভোগীরা নয়া কাঠামোর পাশাপাশি পুরনো কাঠামো মেনে আয়কর জমা দিতে পারেন
আর এই ঘোষণার পরই জটিলতা শুরু। বিশদ ব্যাখ্যায় গেলে চিদাম্বরম। যিনি স্পষ্ট করতে চাইলেন, আয়কর ছাড়ের ঘোষণা মারাত্মক গা ছাড়া। চিদাম্বরম সহ বিভিন্ন অর্থনীতিবিদদের ব্যখ্যা বলছে-
• নয়া কর কাঠামোয় সাত লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে কর মকুবের কথা ঘোষণা হলেও কিছু হিসেব লুকিয়ে আছে
• সাত লক্ষ টাকা পর্যন্ত বার্ষিক আয় কর না দিতে হলেও, সেই অঙ্ক সাত লক্ষ এক টাকা হলেও তাকে দ্বিস্তরীয় কর দিতে হবে
• আগেও ৫ লক্ষ ১ টাকা হলেই তাঁকে ৩ থেকে ৬ লক্ষের হিসাবে ৫ শতাংশ কর দিতে হত
• পাশাপাশি বাড়ির ঋণ ও অন্যান্য নিয়োগেও মিলত ছাড়
• নয়া কর কাঠামোয় ব্যক্তিগত বিনিয়োগে আলাদা করে কোনও ছাড় দেওয়া হবে না
• অর্থাত্, একজন বেতনভোগী কোথায় কত টাকা রাখছেন তা সরকারের ভাবনার বিষয় নয়
• মোট বার্ষিক আয় যত তার উপরই ছাড়, বিনিয়োগে আলাদা ছাড় নেই
এখানেই প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। অনেকেই মনে করছেন, যাঁদের সাত লক্ষের বেশি আয় তাদের পুরনো কাঠামোতেই কর দেওয়া উচিত। তবে, চিদাম্বরমের যুক্তি, দেশের মানুষকে বিনিয়োগমুখী হতে দিতে চাইছে না সরকার। বিনিয়োগের পথে মূল কাঁটা নয়া কর কাঠামোর নিয়ম। যা দেশের অর্থ গতিকেই থামিয়ে দেবে। তাই পি চিদাম্বরমের মতে, আয়করের মারপ্যাঁচে মধ্যবিত্ত পুরোপুরি বিদ্ধ। আয়কর ছাড় আসলে জট। মত চিদাম্বরমের।