প্রশ্নপত্রেও জিপিএস ট্র্যাকিং! অনিয়ম রুখতে নয়া পদক্ষেপ কলেজ সার্ভিস কমিশনের

প্রশ্নপত্রেও জিপিএস ট্র্যাকিং! অনিয়ম রুখতে নয়া পদক্ষেপ কলেজ সার্ভিস কমিশনের

gps

নিজস্ব প্রতিনিধি:  চাকরির পরীক্ষা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বহু অনিয়মের ঘটনা সামনে এসেছে। যা নিয়ে এখনও তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। তবে গত বছরের ডিসেম্বরে ‘টেট’ কড়া নিরাপত্তায় নির্বিঘ্নেই শেষ হয়েছে। নিশ্চিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছিল পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিকে। তবে এবার স্টেট এলিজিবিলিটি টেস্ট (সেট) নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিল কর্তৃপক্ষ। প্রশ্নপত্রে গোপনীয়তা যাতে বজায় থাকে সেই লক্ষ্যে এবার প্রশ্নপত্রেও জিপিএস ট্র্যাকিং সিস্টেম চালু করা হচ্ছে। যা যথেষ্ট অভিনব এবং নজিরবিহীন বলেই মনে করছে ওয়াকিবহন মহল। কলেজ সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান দীপক কর এ খবর জানিয়েছেন। মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে জিপিএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা হবে বলে জানা গিয়েছে।

১৭ ডিসেম্বর রাজ্যের ডিগ্রি কলেজগুলিতে সহকারি অধ্যাপক নিয়োগের জন্য যোগ্যতম নির্ণায়ক ‘সেট’ পরীক্ষা হতে চলেছে। সেদিন সকাল সাড়ে দশটা থেকে সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত হবে প্রথম পত্রের পরীক্ষা। এরপর বেলা বারোটা থেকে দুপুর দু’টো পর্যন্ত হবে দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা। প্রায় ৮০ হাজার পরীক্ষার্থী রাজ্যের ১১০টি পরীক্ষা কেন্দ্রে সেদিন ‘সেট’ দেবেন। আর সেই পরীক্ষায় গোপনীয়তা বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর কলেজ সার্ভিস কমিশন। এ প্রসঙ্গে কলেজ সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান দীপক কর জানিয়েছেন,”পরীক্ষা সংক্রান্ত সামগ্রীর গতিবিধি বোঝার জন্য আমরা মোবাইল অ্যাপ ভিত্তিক জিপিএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে ট্র্যাকিং করব। এই সামগ্রীগুলি বিতরণ কেন্দ্র থেকে পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে পৌঁছনোর পর সেখানে গোটা গতিবিধির উপর নজরদারি করা হবে। পরীক্ষা সংক্রান্ত গোপনীয়তা বজায় রাখতে এবং যে কোনও রকমের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানোর জন্য প্রস্তুত থাকতেই এই ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে।” সেই সঙ্গে বলেন, “সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের কাছে যে সমস্ত নতুন প্রযুক্তি উঠে আসে পরীক্ষা পরিচালনা করতে সেই প্রযুক্তি ব্যবহার করাই হল আধুনিকতম পন্থা। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা হয়নি বলেই যে ভবিষ্যতে হবে না তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। তাই আমরা সহজলভ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা পরিচালনা করতে চাই”। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী সপ্তাহ থেকে সেট-এর অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া শুরু হবে। কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে রেজিস্ট্রেশন আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ-ইন এর মাধ্যমে অ্যাডমিট কার্ড ডাউনলোড করে নিতে পারবেন ‘সেট’ পরীক্ষার্থীরা। জানা গিয়েছে আবেদনকারীরা যে জেলার বাসিন্দা সেখানেই তাঁরা পরীক্ষা দিতে পারবেন। অর্থাৎ পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে অসুবিধা হবে না তাঁদের।

এদিকে পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে কমিশন। প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে কমিশনের তরফে দু’জন করে অবজার্ভার থাকবেন। এছাড়া যে ২৩টি জেলায় পরীক্ষা হচ্ছে  সেখানে মোট ছাব্বিশ জন নোডাল অফিসার থাকবেন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্টার, ডিন সেই দায়িত্ব পালন করবেন। আর সুষ্ঠুভাবে যাতে পরীক্ষা হয় তার জন্য জেলা পুলিশ ও প্রশাসনকে কমিশনের তরফে আবেদন জানানো হয়েছে। এর পাশাপাশি রেল, বিদ্যুৎ-সহ অন্যান্য জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত দফতরের কাছেও কমিশনের তরফে এ ব্যাপারে আবেদন জানানো হয়েছে। আর পরীক্ষা যাতে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয় সেটা নিয়ে কিছুদিনের মধ্যেই বিশেষ  বৈঠকে বসতে চলেছেন কলেজ সার্ভিস কমিশনের কর্তাব্যক্তিরা। কর্তৃপক্ষের আশা যেভাবে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে পরীক্ষা হতে চলেছে তাতে বিঘ্ন ঘটবে না এটা ধরে নেওয়াই যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × two =