কলকাতা: আসানসোল থেকে কলকাতা, কলকাতা থেকে দিল্লি, মঙ্গলবার দিনভর অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে চলল টানাটানি৷ মঙ্গলবার রাতে দিল্লি পৌঁছনোর পর মধ্যরাতে ঘটল চরম নাটক৷ গভীর রাতে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতের বিচারক নির্দেশ দিলেন, আগামী ১০ মার্চ পর্যন্ত এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর হেফাজতেই থাকবেন বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি। ফলে আপাতত দিল্লিতে ইডির দফতরই বীরভূমের কেষ্টর ঠিকানা৷ সেখানেই জেরা করা হবে তৃণমূলের এই দাপুটে নেতাকে৷ অনুব্রতকে জেরা করার জন্য তৈরি ৬ সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল৷ এই দলের নেতৃত্বে রয়েছেন দুঁদে আইপিএস অফিসার এবং ইডি-র স্পেশাল ডিরেক্টর সোনিয়া নারং৷ তেমনটাই সূত্রের খবর৷
আরও পড়ুন-ভারতীয় বায়ুসেনায় এই প্রথম, সীমান্তে আকাশযুদ্ধের নেতৃত্বে মহিলা অফিসার
কে এই সোনিয়া নারাং?
জানা গিয়েছে, সোনিয়া একজন জাঁদরেল আইপিএস অফিসার। ক্যারাটেতে ব্ল্যাক বেল্ট। চণ্ডীগড়ের মেয়ে সোনিয়া ১৯৯৯ সালে পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাশ করেন। সমাজবিজ্ঞানে স্বর্ণপদক রয়েছে তাঁর৷ সোনিয়ার অনুপ্রেরণা তাঁর বাবা এএন নারং৷ অবসর গ্রহণের সময় তিনি ছিলেন ডেপুটি সুপার৷ বাবাকে দেখেই আইপিএস হওয়ার স্বপ্ন দেখা শুরু সোনিয়ার৷ পুলিশ কর্তাদের হাতে সমাজ বদলানোর যে শক্তি রয়েছে তা আকৃষ্ট করেছিল চণ্ডীগড়ের আয়রন লেডিকে। সমাজের চোখে পুলিশ কর্তাদের সম্মান তাঁকে শক্তি জুগিয়েছিল৷ তাই উচ্চমাধ্যমিক দিয়েই শুরু হয়ে যায় তাঁর আইপিএস হওয়ার প্রস্তুতি৷
২০০৪ সালে পুলিশের চাকরিতে যোগ দেওয়ার পরেই তাঁকে পাঠানো হয় কর্ণাটকের গুলবার্গে৷ অপরাধমূলক কাজের জন্য কুখ্যাত ছিল এই জেলা৷ সেখানে ভোট পরিচালনার দায়িত্ব শক্ত হাতে সামলেছিলেন ২৫ বছরের অফিসার৷ যা পুলিশ মহলের প্রশংসা কোড়ায়৷ এর ঠিক দুই বছর পর ২০০৬ সালে দাভাঙ্গিড়িতে পাঠানো হয় তাঁকে। সেই সময় বিজেপি বিধায়ক এমপি. রেণুকাচারিয়াকে থাপ্পড় মারার জন্য শিরোনামে উঠে আসেন এই লেডি অফিসার। সেদিন বিরোধী এবং বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে বিবাদ বেঁধেছিল। পরিস্থিতি সামাল দিতে ওই বিধায়ককে সরতে বলেন সোনিায়া৷ তিনি রাজি হননি। তার পরেই তাঁকে থাপ্পড় মেরে গাড়িতে বসিয়েছিলেন এই জেদি আইপিএস অফিসার। এই নিয়ে রাজনৈতিক মহলে সমালোচনার ঝড় উঠলেও, তাঁর সাহসিকতাকে কুর্নিশ জানিয়েছিলেন নেটিজেনরা। এই ঘটনার পর গোটা দেশে চর্চার কেন্দ্রে উঠে এসেছিলেন আয়রন লেডি৷ এবার সেই দুঁদে অফিসারের মুখোমুখি হতে পারেন অনুব্রত৷
জানা যাচ্ছে, অনুব্রতকাণ্ডে মানি ট্রেইল খোঁজার জন্য এবার ‘প্যান ইন্ডিয়া ‘ জাল বিস্তার করছে ইডি৷ রিয়েল এস্টেট, সিনেমা, বড় ক্রিকেট ইভেন্টে কি বিনিয়োগ করেছেন অনুব্রত? সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একইসঙ্গে বিদেশ যোগের বিষয়টিও নজরে রাখা হয়েছে৷ দিল্লির চিত্তরঞ্জন পার্কের ফ্ল্যাট ও গাজিয়াবাদের জমি নিয়ে এর আগেই প্রশ্ন তুলেছিল ইডি। এবার দেশজুড়ে খোঁজ চালানো হচ্ছে৷ কাজে লাগানো হচ্ছে ইডির বিভিন্ন জোনাল অফিস ও শীর্ষ আধিকারিকদের৷ গরু পাচারের কালো টাকা লটারির মাধ্যমে সাদা হত কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>