কলকাতা: আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তির অভিযোগে দিন কয়েক আগে গ্রেফতার করা হয়েছিল রাজ্য পুলিশের এক কনস্টেবলকে৷ তিনি বোলপুর থানায় কর্মরচ ছিলেন৷ গত ১৬ সেপ্টেম্বর বীরভূমের রামপুরহাট থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখা। তাঁর বিরুদ্ধে শুরু হয় পুলিশের বিভাগীয় তদন্ত৷ সেই তদন্তেই উঠে এল বিস্ফোরক তথ্য।
জানা গিয়েছে, পুলিশের উপর মহল থেকে শুরু করে প্রভাবশালী অফিসার, সবার কাছেই অবাধ যাতায়াত ছিল ‘কোটিপতি কনস্টেবল’ মনোজিৎ বাগীশের৷ কার্যসিদ্ধি করতে তিনি সবার আগে প্রভাবশালী উপরওয়ালার পা ছুঁয়ে প্রণাম করতেন৷ তার পর পকেট থেকে বার করে সামনে রাখতেন ‘প্রণামী’! সেই প্রণামীর পরিমাণ ছিল কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকার! তারপরে শুরু হতো সংশ্লিষ্ট অফিসারের সম্পর্কে স্তুতিবাক্য৷ সব শেষে পাড়তেন আসল কথা৷ কারও নির্দিষ্ট পোস্টিংয়ের জন্য তদ্বির, কারও বদলি বা সাসপেনশন আটকানো কিংবা কোনও অভিযুক্তকে তদন্তের হাত থেকে বাঁচানোর আবদার৷ তবে এর জন্য অনেক সময় তাঁকে ধমকও খেতে হয়েছে৷ কেউ কেউ আবার ‘গেট আউট’ বলে ঘর থেকে বার করেও দিয়েছেন৷ তবে এসব ব্যাপারে মনোজিতের ‘হাতযশ’ যে বেশ ভালই ছিল, সে বিষয়ে নিশ্চিত গোয়েন্দারা৷
বিভিন্ন খাতে মনোজিত এক কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন বলে হদিশ মিলেছে। এই বিপুল টাকা ও সম্পত্তিকী ভাবে এল, তার উৎস খুঁজছেন তদন্তকারী অফিসাররা। তিনি যে বিভিন্ন ভাবে প্রভাব খাটাতেন, তা এখন প্রকাশ্যে। পুলিশ সূত্রে খবর, মনোজিৎ হাওড়ায় কর্তব্যরত থাকাকালীন এক মন্ত্রীর আপ্ত সহায়কের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। অভিযোগ, মন্ত্রীঘনিষ্ঠ ওই ব্যক্তিকে দিয়ে বিভিন্ন পুলিশকর্তাকে ফোন করানো হচ্ছে৷ তাঁর বিরুদ্ধে যাতে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, সেই আর্জিও জানিয়েছেন মনোজিৎ৷ তবে তদন্তকারী অফিসাররা তাঁক কীর্তি দেখে তাজ্জব৷ কোনও সুপারিশেই কর্ণপাত করছেন না তাঁরা৷