কলকাতা: অভাবের সংসার৷ অনটন সেখানে নিত্যদিনের সঙ্গী৷ অন্ধকার এই জীবনে আশার আলো হয়ে আসেন উমা৷ কৈলাস ছেড়ে মায়ের মর্তে আগমনের সঙ্গে সঙ্গে কিছুটা হলেও পাল্টে যায় ওঁদের জীবন৷ ঢাক কাঁধে নিয়ে শহরের পথে রাওনা দেয় ঢাকির দল৷
আরও পড়ুন- কার্নিভাল চলাকালীন বলদের ধাক্কায় মৃত্যু, প্রশাসনকে কাঠগড়ায় তুললেন নিহতের মেয়ে
বছরভর প্রতীক্ষার পর পুজোর এই কটা দিন ঘিরে যত উন্মাদনা বাঙালির৷ ঢাকের বোল জানান দিয়ে যায় পুজো এসে গিয়েছে৷ পুজোর এই কটা দিনের অপেক্ষায় থাকে ঢাকীরাও৷ বায়না পেলে দুটো রোজগার হয়৷ এই পুঁজিই তো গোটা বছরের সম্বল৷ কিন্তু, পুজোয় যখন সকলে পরিবার-পরিজন, আত্মীয় কিংবা বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে নিয়ে মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে বেড়ায়, তখন পরিবার ছেড়ে অনেক দূরে কোনও এক মণ্ডপে ঢাকের বোল তোলে তাঁরা৷ নিরুপায় হয়েই আদরের সন্তানদের ছেড়ে রোজগারের আশায় ঢাক কাঁধে নিয়ে বেরিয়ে পড়েন তাঁরা৷ মায়ের বিসর্জনের পরই মেলে ছুটি৷ ঢাক বাজিয়ে কিছু অর্থ আর ধনীদের বাতিল করা জামা-কাপড় পুটলিতে বেঁধে গ্রামে ফেরে ঢাকিরা৷ অন্যদিকে, তাঁদের ফেরার আশায় প্রহর গুনতে থাকে পরিবার৷
বাড়ি ফেরার গলিপথ চেয়ে অপেক্ষায় বসেছিল ছোট্ট ছেলেটা৷ বাবা আসতেই ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরে তাঁকে৷ কোলে উঠে আদরে ভরিয়ে দেয় সে৷ আদো আদো গলায় তাঁর প্রশ্ন, আমার জন্য কটা জামা এনেছ? বাবাকে ছাড়াই গোটা পুজো কেটেছে তাদের৷ এবার বাবাকে আকড়ে ধরার পালা৷
টানা এক মাস প্রস্তুতির পর কলকাতার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল বাঁকুড়া জেলার ইন্দাস ব্লকের গোবিন্দপুর গ্রামের ঢাকিরা। করোনা সংক্রমবণের জেরে গত দুই বছর সে ভাবে উপার্জন হয়নি৷ সেই ভাটার টান কাটিয়ে নতুন উদ্যমে বেরিয়ে পড়েছিলেন তাঁরা৷ এই কটা দিন যা রোজগার হয়েছে তা ঝুলিতে পুরে গ্ৰামে ফিরে এল হাসিমুখে। এদিকে, এতদিন পর বাবা, দাদুদের ফিরে পেয়ে আনন্দে মাতোয়ারা কচিকাঁচার দল৷ কেউ কোলে উঠল লাফিয়ে, কেউ এঁকে দিল চুমু৷
এক খুদে জানায়, কলকাতায় ঢাক বাজাতে গিয়েছিল তার বাবা৷ সেখান থেকে জামা-কাপড়, খাবার নিয়ে এসেছে৷ তাই এখন বেজায় খুশি সে৷ এমনটা শুধু বাঁকুড়ায় নয়৷ এ ছবি গোটা বঙ্গের৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>