কলকাতা: বেসরকারি স্কুলগুলির বেলাগাম ফি বৃদ্ধি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই অভিভাবকদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে৷ এক শ্রেণির বেসরকারি স্কুল যে ভাবে মাত্রাতিরিক্ত ফি আদায় করছে, তা নিয়ে কদিন আগেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল কলকাতা হাই কোর্ট। ফি নিয়ে রাজ্য সরকারের ঘরেও অভিযোগ পড়েছে ভূরি ভূরি। এহেন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য কমিশনের ধাঁচে শিক্ষা কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার৷
সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এ সংক্রান্ত প্রস্তাব আনলে, তাতে সম্মতি জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ শিক্ষা কমিশন ঠিক কী কাজ করবে সে বিষয়ে বিস্তারিত খসড়া প্রস্তুত করেছিল শিক্ষা দফতর। সেই প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছে মন্ত্রিসভা৷ যার মধ্যে অন্যতম, বেসরকারি স্কুলের ফি বা বেতন কাঠামো। শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে-
প্রস্তাবিত শিক্ষা কমিশন বেসরকারি স্কুলগুলির ফি কাঠামো নির্ধারণ করবে। তার পর সুপারিশ করবে রাজ্য সরকারকে। কোনও বেসরকারি স্কুল অযৌক্তিক ভাবে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে ফি আদায় করলে সে ব্যাপারে জমা পড়া অভিযোগের শুনানিও হবে কমিশনে৷ ছাত্র ছাত্রীদের স্বার্থে সরকারের তরফে কী কী পদক্ষেপ করা যেতে পারে, নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর সে ব্যাপারেও সুপারিশ করবে কমিশন৷
সরকারের এই পদক্ষেপ নিয়ে বেসরকারি স্কুলগুলির একাংশ উষ্মা প্রকাশ করতেই পারে। তবে শিক্ষা দফতরের অনেকেই মনে করেন, ফি-র নামে এক শ্রেণির বেসরকারি স্কুল মুনাফাভোগী ব্যবসায়ী হয়ে উঠেছে। তারা সরকারের কাছ থেকে নানা সুবিধা নিলেও সাধারণ মানুষের কাছে সেই সুবিধা প্রসারিত করছে না। সেই সমস্যার একটা বিহিত হওয়া উচিত।
জানা গিয়েছে, এই কমিশনের মাথায় থাকবেন একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। থাকবেন স্কুল শিক্ষা দফতরের কমিশনার, এসসিইআরটি-র ডিরেক্টর, মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি এবং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি। এ ছাড়া দু’জন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদকে কমিটির সদস্য হিসাবে মনোনীত করবেন খোদ শিক্ষা মন্ত্রী।
এদিনের বৈঠকে আরও একটি বিষয় উঠে এসেছে৷ বেসরকারি ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলগুলিতে দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে বাংলাকে বাধ্যতামূলক করার ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে। তৃতীয় ভাষা হিসেবে সাঁওতালি, উর্দু বা অন্য কোনও ভাষার ব্যবহার করা যেতে পারে। ইংরেজি মিডিয়াম ছাড়া অন্য কোনও মিডিয়ামের ক্ষেত্রে কিন্তু এই নিয়ম প্রযোজ্য় হবে না।