নিজস্ব প্রতিনিধি: চার রাজ্যের ভোটে শুধু তেলেঙ্গানায় কংগ্রেস জয়লাভ, করেছে। হিন্দি বলয়ের তিনটি রাজ্য মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় ও রাজস্থানে ধরাশায়ী হয়েছে হাত শিবির। যেভাবে কংগ্রেস কোনও দলের সঙ্গে জোট না করে একা লড়ে পর্যুদস্ত হয়েছে তা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অবিলম্বে কংগ্রেসের ‘দাদাগিরি’ বন্ধ করতে হবে, এই আওয়াজ তুলছে বিজেপি বিরোধী দলগুলি।
এই পরিস্থিতিতে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে রুখতে পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস, তৃণমূল ও সিপিএমের মহাজোট হবে কিনা তা নিয়ে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে। রাজ্য রাজনীতির প্রেক্ষাপট বলছে কোনও ভাবেই তৃণমূলের সঙ্গে জোটে যাবে না সিপিএম তথা বামেরা। তবে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের জোট হলেও হতে পারে। সেই সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। আর যদি তর্কের খাতিরে ধরে নেওয়া হয় যে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল, সিপিএম ও কংগ্রেসের মহাজোট হল, তাতে কিন্তু লাভ হবে বিজেপির।
কিন্তু কেন? আসলে তৃণমূল বিরোধী ভোটাররা সব সময় চাইবেন তৃণমূলকে হারাতে। সেক্ষেত্রে বিজেপির থেকেও তারা আগে তৃণমূলকে হারাতে চাইবেন, এটাই বাংলার প্রকৃত বাস্তব ছবি। সেক্ষেত্রে নির্বাচনে বামেদের প্রার্থী থাকলে কিছুটা হলেও ভোট তিনি পাবেন প্রবল বাম মনস্ক ভোটারদের কাছ থেকে। তাঁদের বলা হয় ‘ক্যাপটিভ ভোটার’। পৃথিবী উল্টে গেলেও এই ভোটটা বামেরা পাবে। একই কথা প্রযোজ্য কংগ্রেসের ক্ষেত্রেও। শতাংশের নিরিখে খুব কম হলেও এটা বাম-কংগ্রেসের বাঁধা ভোট। সেই জায়গায় মহাজোট হলে তখন কি বাম বা কংগ্রেসের ‘ক্যাপটিভ’ ভোটাররা তৃণমূলকে ভোট দেবেন?
একমাত্র সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাম-কংগ্রেসের ভোটাররা তৃণমূলকে হয়ত ভোট দিতে পারেন। কিন্তু বাম-কংগ্রেসের হিন্দু ভোটারদের সবাই তৃণমূলকে ভোট দেবেন বিজেপিকে হারাতে, এটা না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। সেই জায়গায় বাংলায় মহাজোট হলে অলিখিতভাবে অধিকাংশ আসনে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে একের বিরুদ্ধে এক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। অর্থাৎ হয় তৃণমূল, নয়ত বিজেপি। আর একমাত্র একের বিরুদ্ধে এক পরিস্থিতি তৈরি হলেই শাসকের হারার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়। যে বিষয়টি সদ্য দেখা গিয়েছে মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় ও রাজস্থানের নির্বাচনে। সেখানে বহু বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট ভাগ হয়ে যাওয়ায় সুবিধা পেয়েছে বিজেপি। তাই লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে শেষ পর্যন্ত আসন রফা কোন দিকে গড়ায়, বা আদৌ আসন রফা হয় কিনা সেটাই দেখার।