১২২ বছরে সবচেয়ে উষ্ণ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, আগামীর ভয়ঙ্কর ইঙ্গিত দিচ্ছে না তো?

১২২ বছরে সবচেয়ে উষ্ণ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, আগামীর ভয়ঙ্কর ইঙ্গিত দিচ্ছে না তো?

কলকাতা: গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা বিশ্ব উষ্ণায়নের দাপটে উদ্বেগ বাড়ছে বিশ্বজুড়ে৷ ধীরে ধীরে গলে যাচ্ছে আলাস্কার বরফ, গলছে হিমালয়ের চূড়া। নির্বিচারে গাছ কাটা আর মানুষের বিলাসবহুল জীবনযাত্রাই বিশ্ব উষ্ণায়নের নেপথ্য কারণ। এর প্রভাব থেকে নিস্তার নেই ভারতেরও৷ বিজ্ঞানীরা বলছেন, ক্রমাগত জলবায়ুর পরিবর্তন গাঙ্গেয় স্থলভূমিতেও প্রভাব ফেলবে। বাড়বে দিনের তাপমাত্রা। ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই যে ভাবে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে, তাতে গোটা গ্রীষ্মে সূর্যের তেজ কতটা প্রখর হবে, তা সহজেই অনুমেয়৷ 

আরও পড়ুন- নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে কমিটি গঠন সুপ্রিম কোর্টের, ভূমিকা থাকবে প্রধানমন্ত্রীরও

ভারতের মৌসম ভবন বলছে, ১২২ বছরে সবচেয়ে উত্তপ্ত ফেব্রুয়ারি মাসের সাক্ষী থাকল ভারত। ১৯০১ সালের পর ফেব্রুয়ারি মাসে তাপমাত্রার পারদ এতটা চড়েনি৷ একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে হাওয়া অফিসের তরফে জানানো হয়েছে, গত ফেব্রুয়ারিতে উত্তর ভারত, উত্তর-পশ্চিম ভারত এবং মধ্য ভারতের বেশ কিছু অংশে তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটাই বেশি৷ ফেব্রুয়ারি মাসে এমন আবহাওয়া, আগামী দিনে ভয়ঙ্কর গরমেরই ইঙ্গিত দিচ্ছে৷ 

আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, চলতি মাস থেকে থেকে মে মাস পর্যন্ত উত্তর-পূর্ব ভারত, পূর্ব ও মধ্য ভারত এবং উত্তর-পশ্চিম ভারতের কিছু অংশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকার উচ্চ সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও আগামী তিন মাসে মধ্য ও পার্শ্ববর্তী উত্তর-পশ্চিম ভারতের একাধিক অঞ্চলে তাপপ্রবাহেরও সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। অতিরিক্ত গরমে ফসলের ক্ষতি হবে৷ 
 

হাওয়া অফিস আরও জানাচ্ছে, চলতি বছর সারা দেশের গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ স্বাভাবিক থাকলেও উত্তর-পশ্চিম ভারত, পশ্চিম মধ্য ভারত এবং পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের বেশ কিছু অংশে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনাই বেশি। আবার ভারতের উপকূলবর্তী অঞ্চলে বেশির ভাগ অংশে, পূর্ব-মধ্য ভারত এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের কিছু বিচ্ছিন্ন স্থানে স্বাভাবিক থেকে স্বাভাবিকের বেশি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে৷ 

১৯৫১ থেকে ’৭৫ আর ১৯৭৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত জলবায়ুর গড় পরিবর্তনের হিসেব কষে একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ১৯৫১ থেকে ’৭৫-এর মধ্যে গ্রীষ্মকালে বৃষ্টির আধিক্য লক্ষণীয় ছিল। গাঙ্গেয় ভারতের বাইরের অংশ সেই বৃষ্টি অনুভব করত। কিন্তু ১৯৭৬ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে মে-জুনের মধ্যে তাপমাত্রা অত্যাধিক বেড়ে যায়। গড়ে প্রায় ১০ দিন এই দাবদাহ চলেছে। যা বিগত ১৫ বছর তুলনায় অর্থাৎ ১৯৫১-৭৫-এর হিসেবে প্রায় ২৫% বেশি তাপমাত্রা। সেই গবেষণায় দাবি, ‘‘১৯৭৬ সালে যে ব্যাপক জলবায়ুর পরিবর্তন লক্ষ্য করা গিয়েছিল, তা ভারতের দক্ষিণ ও পশ্চিম অংশে প্রভাব ফেলেছিল। সেই সময় গরমের সময় বেশ ভালো বৃষ্টি হতো। কিন্তু সেই পরিস্থিতি ধীরে ধীরে পাল্টাতে শুরু করে। এরপর উত্তর-পশ্চিম ও পশ্চিম অংশের তাপমাত্রা একধাক্কায় অনেকটা বেড়ে যায়। দীর্ঘস্থায়ী হয় তাপপ্রবাহও।” এই দীর্ঘস্থায়ী তাপপ্রবাহই ভারতের তাপমাত্রা বাড়ার ইঙ্গিত, তেমনটাই জানানো হয় ওই গবেষণায়৷