কলকাতা: ধীরে ধীরে খুলছে রহস্যের জট৷ উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য৷ এবার খোঁজ মিলল নিয়োগ দুর্নীতি মামলার অন্যতম সাক্ষী গোপাল দলপতির কোচিং সেন্টারের৷ দমদম ক্যান্টনমেন্ট এলাকার পোস্ট অফিস রোডে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে কোচিং ক্লাস খুলেছিলেন তাপস মণ্ডল ঘনিষ্ঠ গোপাল৷ তা প্রায় বছর ১৫ আগের কথা৷ ২০০৪-০৫ সালে এই কোচিং ক্লাস শুরু হয়েছিল৷ এলাকাতে গোপাল স্যার হিসাবে পরিচিত ছিলেন নিয়োগ দুর্নীতির অন্যতম সাক্ষী গোপাল দলপতি। শিক্ষক হিসাবে সুনামও কুড়িয়েছিলেন তিনি। একসঙ্গে অনেকগুলি বিষয় পড়াতে পাড়তে। ফলে কোচিং সেন্টারে পড়ুয়াদের ভিড় লেগেই থাকত। তাঁর কোচিংয়েই পড়তে আসতেন গোপালের প্রথমপক্ষের স্ত্রী। সেখান থেকেই দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে৷ তারপর প্রেম ও বিয়ে। এমনটাই দাবি গোপালের প্রথম পক্ষের শ্বশুরমশাইয়ের। তবে তিনি সাফ বলেন, “বিশ্বাসঘাতকতা করেছে গোপাল। ভুল বুঝিয়ে আমার মেয়েকে বিয়ে করে ঠকিয়েছে। এখন ওঁদের মধ্যে আর কোনও সম্পর্ক নেই। ১২ বছর আগেই ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে।’’
আরও পড়ুন- ভিনরাজ্যে গিয়ে মর্মান্তিক পরিণতি বাংলার ৭ জনের, ফিরছে নিথর দেহ
শিক্ষক হিসাবে যে গোপাল যোগ্য ছিলেন, সে কথা এক বাক্যে স্বীকার করে নিয়েছেন তাঁর কোচিংয়ে পড়া পড়ুয়ারাও। তবে একদা তাঁদের প্রিয় শিক্ষকের কীর্তিকলাপ জানতে পেরে তাঁরা ব্যথিতও৷ গোপাল দলপতির কোচিংয়ের ছাত্র অর্ঘ্য কুন্ডু। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল কেমন ছিলেন গোপাল স্যার? প্রশ্ন শুনেই তিনি বলেন, ‘‘আমি একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় ওঁর কাছে দু’বার মক টেস্ট দিতে এসেছিলাম। শিক্ষক হিসাবেই ওঁকে চিনতাম। শিক্ষক হিসাবে উনি ভালই ছিলেন। ছাত্রদের ভালই পড়াতেন। কিন্তু, উনি যে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত সেটা ভাবতেই পারছি না। এটা জেনে খুবই খারাপ লাগছে।’’
এদিকে গোপালের প্রথমপক্ষের শাশুড়ির কথায়, গোপল যে অসৎ পথে চলতে শুরু করেছিলেন, সেই আঁচ তাঁরা অনেক আগেই পেয়েছিলেন৷ তাঁর কর্মকাণ্ড নিয়েও সন্দেহ বাড়ছিল৷ তিনি বলেন, “ও যে সৎ নয়, সেটা আমরা বুঝতে পেরেছিলাম। গোপাল যখন প্রথম আমাদের বাড়িতে আসে, তখন আমার মেয়ে ক্লাস ওয়ানে পড়ে। আমার মেয়ে ওকে কাকার মতো দেখতো।” প্রায় একই সুর তাঁর স্বামীর গলাতেও। গোপালের প্রথমপক্ষের শ্বশুর বলেন, “গোপাল আমাকে দাদা বলে ডাকত। আমিও ওকে ভাই বলেই ভাবতাম। ওকে ভালও বাসতাম। সব বিষয়ে ও পারদর্শী ছিল। অঙ্ক, বাংলা, ইংরাজি, ভূগোল, বিজ্ঞান, এমনকী দর্শনেও গোপাল খুব তুখোড় ছিল। খুবই ব্রিলিয়ান্ট ছেলে। কিন্তু, শেষে ওই আমাদের পরিবারের সর্বনাশ করে চলে গেল। আমরা যখন ওর এসব কুকর্মের কথা জানতে পারছি, তার অনেক আগেই আমার মেয়ের সঙ্গে ওর ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে।”
এদিকে, হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে ক্রমেই সরগরম হচ্ছে পরিস্থিতি। হৈমন্তী হলেন তাপসের দ্বিতীয় স্ত্রী৷ হৈমন্তীর পৈতৃক বাড়ি হাওড়ার সাঁতরাগাছির উত্তর বাকসাড়ায়। কুন্তল বর্ণিত রহস্যময়ী নারী চরিত্র তিনি। বৃহস্পতিবার আদালত থেকে জেলের পথে যাওয়ার সময় কুন্তল চিৎকার করে বলেছিলেন, সব জানতেন গোপাল দলপতি ওরফে আরমান গঙ্গোপাধ্যায়ের স্ত্রী হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়। ওঁর কাছেই সব টাকা আছে৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>