কলকাতা: ওড়িশার বালেশ্বরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় শিহরিত গোটা দেশ৷ করমণ্ডল দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস৷ বালেশ্বরে করমণ্ডল-বিপর্যয়ের পরই সেখানে ছুটে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ আজ আবার ওড়িশায় যাচ্ছেন তিনি। এবার করমণ্ডল এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারের কাছে রাজ্যপাল।
ধান রোয়ার কাজে ভিনরাজ্যে যাচ্ছিলেন বাসন্তীর ছড়ানেখালি গ্রামের গায়েন পরিবারের তিন ভাই। সেই যাত্রাই কাল হল তাঁদের। করমণ্ডল দুর্ঘটনায় এক সঙ্গে তিন ভাইয়ের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা পরিবার। গায়েন পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলার পর, মঙ্গলবার সকালে ছড়ানেখালি গ্রামে যান রাজ্যপাল। ওই গ্রামেরই আরও দু’জনের মৃত্যু হয়েছে করমণ্ডল দুর্ঘটনায়। তাঁদের পরিবারের সঙ্গেও কথা বললেন রাজ্যপাল বোস।
এদিন প্রথমেই সুভদ্রা গায়েনের বাড়িতে যান রাজ্যপাল। করণ্ডল দুর্ঘটনায় একসঙ্গে তিন ছেলেকে হারিয়েছেন তিনি৷ রাজ্যপালকে দেখেই কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের মানুষ। গায়েন পরিবারের পাশাপাশি স্থানীয় মানুষজনের অভাব অভিযোগের কথাও শোনেন তিনি। নিহতদের পরিবারদের পাশে দাঁড়াতে আগামী ৬ মাস তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ২ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন রাজ্যপাল। তাছাড়াও পারলৌকিক কাজের জন্য এককালীন ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেন তিনি। এদিন সঙ্গে করে ফলমূল, জামাকাপড় ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন রাজ্যপাল৷ সেগুলি নিহতদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বাসন্তীর বিডিওর মাধ্যমে সেগুলো পৌঁছে দেওয়া হয়। রাজ্যপাল জানান, নিহতদের শ্রাদ্ধের সমস্ত খরচ বহন করবে রাজভবন। যাঁদের জনধন অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তাদের ১০ হাজার টাকা করে দেওয়ার হবে।
রাজ্যপালকে সামনে পেয়ে নিজেদের অভাব অভিযোগের কথা জানান স্থানীয় মানুষ৷ জানান, তাঁদের কাছে জব কার্য থাকলেও, কাজ নেই৷ বাধ্য হয়েই ভিন রাজ্যে পাড়ি দিতে হয়৷ দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বিভিন্ন গ্রাম থেকে এই সময় ধান রোয়ার কাছে অন্ধ্রপ্রদেশ যান বহু মানুষ। সেই রোজগারের টাকায় চলে তাঁদের সংসার৷ কিন্তু, আচমকা নেমে আসা এই মহা-বিপর্যয় এতগুলো পরিবারের ভবিষ্যতকে অনিশ্চিত করে দিল।
রবিবার বাসন্তীর ছড়ানেখালি গ্রামে পৌঁছায় ৫ জনের মৃতদেহ। তিন ভাই হারান গায়েন, নিশিকান্ত গায়েন ও দিবাকর গায়েন ছাড়াও ছিল বিকাশ হালদার ও সঞ্জয় হালদারের মৃতদেহও। বালেশ্বরে করমণ্ডল এক্সপ্রেস বিপর্যয়ে একই গ্রামের ৫ জনের মৃত্যুতে হাহাকার পড়ে যায়৷ মঙ্গলবার রাজ্যপালকে দেখেই কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের মানুষ। শোকে পাথর গোটা গ্রাম।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>
