বিশ্ব দুর্নীতি সূচকে ৮৫ নম্বরে ভারত! অস্বস্তিতে মোদী সরকার

বিশ্ব দুর্নীতি সূচকে ৮৫ নম্বরে ভারত! অস্বস্তিতে মোদী সরকার

কলকাতা: দুর্নীতির কবল থেকে দেশকে রক্ষা করতে একাধিক পদক্ষেপ করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার৷ যার মধ্যে অন্যতম অবশ্যই ডিমানিটাইজেশন৷ অন্তত তেমনটাই দাবি করে থাকে গেরুয়া শিবির৷ কিন্তু এর পরেও দুর্নীতি কমেছে কি? তেমনটা হয়তো জোর দিয়ে বলা যায় না৷ কারণ, বিশ্ব দু্র্নীতি সূচকে (Corruption Perception Index) ১৮০টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ৮৫ নম্বরে।

আরও পড়ুন- শিঙাড়ার লেচি বেললেন, জানলেন পান তৈরির খুঁটিনাটি, ত্রিপুরায় নিজস্ব কায়দায় জনসংযোগ মমতার

‘বিশ্ব দুর্নীতি সূচকের’ সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, দুর্নীতির তালিকায় স্থান পাওয়া ১৮০টি দেশের মধ্যে ৪০ পয়েন্ট নিয়ে ভারতের অবস্থান ৮৫-তে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দেওয়া তথ্য অনুসারে, ৯৫ শতাংশ দেশই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে ব্যর্থ। একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের এই বার্ষিক সূচক তৈরি করে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দেশগুলির কাজের ভিত্তিতে নম্বর দিয়ে থাকেন তারা। সরকারি খাতের দুর্নীতির ধারণার ওপর ভিত্তি করে বিশ্বের ১৮০টি দেশ ও অঞ্চলকে এই সূচকে স্থান দেওয়া হয়েছে। এর জন্য ১৩টি বহিরাগত উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে৷ যার মধ্যে রয়েছে বিশ্বব্যাঙ্ক, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম, প্রাইভেট রিস্ক ও কনসাল্টিং কোম্পানি৷ 

তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে বিশেষজ্ঞ এবং শিল্প-বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের থেকেও৷ সেই সকল তথ্যের ভিত্তিতেই ১৮০টি দেশ ও অঞ্চলকে সূচক ০ থেকে ১০০-এর স্কেল ব্যবহার করে এই তালিকা তৈরি হয়। এ ক্ষেত্রে শূন্য বলতে বোঝানো হয় অত্যন্ত দুর্নীতিগ্রস্ত। ১০০ অত্যন্ত স্বচ্ছ। সেই হিসাবে ভারতের স্কোর ৪০। 

এই তালিকায় সর্বোচ্চ স্কোর নিয়ে স্বচ্ছ্বতার শীর্ষে রয়েছে ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও নরওয়ে। এ ছাড়া ৪৫ নম্বরে রয়েছে চিন, ৩৮ নম্বরে ইন্দোনেশিয়া, ২৮ নম্বরে পাকিস্তান এবং ২৬ নম্বরে রয়েছে বাংলাদেশ৷ সূচক অনুসারে, ভুটান বাদে ভারতের সব প্রতিবেশীই তাদের চেয়ে নিচে রয়েছে। অন্যদিকে ১৬ ধাপ নেমে দুর্নীতি সূচকে ১৪০ নম্বরে অবস্থান করছে পাকিস্তান৷ 

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল-এর বার্ষিক রিপোর্ট বলছে, দুর্নীতিমুক্ত দেশগুলির ধারেকাছে নেই ভারত। সূচকে ভারতের এই অবস্থান বিশেষভাবে উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক দশকে ভারকের স্কোর স্থবির হয়ে পড়েছে।

টিআই রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারতের গণতান্ত্রিক মর্যাদা নিয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। নাগরিকের মৌলিক অধিকার এবং প্রাতিষ্ঠানিক ভারসাম্য ক্রমশ নষ্ট হচ্ছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, পুলিশ, রাজনৈতিক দলগুলির মদতপুষ্ট গুণ্ডা, দুষ্কৃতী ও দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারি কর্মীদের আগ্রাসনে দেশের সুশীল সমাজের সংগঠনগুলো, যারা সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলে তাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে।  তাদের মানহানি, রাষ্ট্রদ্রোহ, হিংসাত্মক বক্তব্য, আদালত অবমাননার অভিযোগে ও বিদেশি তহবিল সংক্রান্ত মামলায় জড়ানো হচ্ছে।