কলকাতা: বিপুল প্রত্যাশা জাগিয়ে শেয়ার বাজারে প্রথম পা রাখতে চলেছে টাটা টেকনোলজিস৷ ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং বা আইপিও বিক্রি শুরু থেকেই বিটার সাফল্য পেয়েছে টাটার এই সংস্থা৷ আইপিও বিক্রির পাট চুকিয়ে ইতিমধ্যেই শুধু হয়ে গিয়েছে শেয়ার বণ্টনের প্রক্রিয়া৷ সিংহভাগ ট্রেডারকে নিরাশ করে টাটা টেকনোলজিসের শেয়ার জুড়ে গিয়েছে হাতে গোনা কিছু ট্রেডারের পোর্টফোলিওতে৷ হাতে গোটা কয়েকজন পেয়েছেন৷ বাকিরা এযাত্রায় বঞ্চিত হয়েছে৷ তবে, এখন প্রশ্ন, যাঁরা টাটা টেকনোলজিসের আইপিও আবেদন করেও পেলেন না, তাঁদের জন্য কী কোনও বড় উপহার দিতে চলেছে বাজার? নাকি যাঁরা আইপিও কিনে শুরুতেই বাজিমাত করলেন, আগামী দিনে তাঁদের কি লাফিয়ে লাফিয়ে লক্ষ্মীলাভ হবে? আসুন, তাহলে দেখে নেওয়া যাক কিছু পরিসংখ্যান৷
আইপিও কিনে টাকা দ্বিগুণ করা যায়, এই প্রবাদ আছে বাজারে৷ কিছুকিছু ক্ষেত্রে এই প্রবাদ খেটে গিয়েছে বটে, কিন্তু অনেক অংশেই উল্টে লস হয়েছে৷ যেমন-
Reliance Power৷ এই শেয়ারের আইপিওর দাম ছিল ৪০৫ থেকে ৪৫০টাকার মধ্যে৷ এই আইপিও কেনার জন্য ৪৮ লাখ আবেদনও জমা পড়ে৷ শেয়ার বাজারে এললিস্টেড হওয়ার সময় Reliance Power-এর দাম ছিল ৩৩৩টাকা৷ শুরুতেই লস৷ ২০০৮ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত এই স্টক ডাহা ফেল৷ এই মুহূর্তে Reliance Power-এর দাম মাত্র ২১.৬০ টাকা৷
LIC, আইপিও বিক্রির শুরুতে বিপুল সাড়া পড়েছিল বাজারে৷ LIC-র আইপিওর দাম রাখা হয়েছিল ৯০২ থেকে ৯৪৯টাকার মধ্যে৷ জমা পড়েছিল ৭৩.৪লাখ আবেদন৷ শেয়ার বাজারে এললিস্টেড হওয়ার সময় এলআইসির দাম ছিল ৯২০টাকা৷ শুরুতেই অনেকেই লস করেছিলেন৷ আর সেই লস দিনে দিনে বাড়ছেই৷ এখন LIC-র দাম ৬৭৮টাকা৷
Nykaa৷ এই শেয়ারের আইপিওর দাম ছিল ১০৮৫ থেকে ১১২৫ টাকার মধ্যে৷ এই আইপিও কেনার জন্য ৩৫.৭ লাখ আবেদনও জমা পড়ে৷ শেয়ার বাজারে এললিস্টেড হওয়ার সময় Nykaa-এর দাম ছিল ৪৩১টাকা৷ শুরুতেই ডাহা লস৷ এই মুহূর্তে Nykaa-এর দাম মাত্র ১৭২টাকা৷
তবে, মুদ্রার উল্টো দিকও আছে৷ Bandhan Bank, RBL Bank Ltd, JSW Infrastructure, Senco Gold Limited-র মতো কিছু সংস্থা অন্তত প্রথম দিনেই কিছু লাভ দিয়েছে৷
কিন্তু এখন প্রশ্ন, টাটা টেকনোলজিসের আইপিও কী করবে? বাজার বিশেষজ্ঞদের অনুমান, শুরুর দিন থেকেই লক্ষ্মীলাভ হতে পারে৷ তবে, সেই লক্ষ্মীলাভের প্রক্রিয়া ধারাবাহিক ভাবে চলবে কি না৷ এক্ষেত্রে টাটা নিজেই একটি বড় নাম৷
‘If it’s a choice between investing in a good company in a great industry, or a great company in a lousy industry, I’ll take the great company in the lousy industry any day.’’-Peter Lynch
পরিসংখ্যান বলছে, বাজারে আসা সমস্ত আইপিওতে যদি কেউ বিনিয়োগ করেন, তাহলে দেখা যাবে, বছর শেষে তিনি লাভের মুখ দেখতে পারবেন৷ তবে, কোন আইপিও মুনাফা দেবে, কোনটি দেবে না, তা সেই সংস্থার ইতিহাস ঘাঁটলেই কিছুটা অনুমান করা যায়৷
তবে, এখন প্রশ্ন, আইপিও কেনার জন্য আদৌও কি কোনও কৌশল আছে বাজারে? বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত, দু’টি পদ্ধতি মানলে আইপিও থেকে মুনাফা পাওয়া সম্ভব৷ প্রথম, আইপিও কেনার পর ১০ বছরের জন্য টার্গেট করে রাখা যেতে পারে৷ তাতেই বড় লাভের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি৷ দ্বিতীয়- আইপিও কেনার পরই শেয়ার বাজারে ওই স্টক এললিস্টেড হওয়ার ১৫ মিনিটের মধ্যে বেচে লাভ বা লস বুক করে নেওয়া যেতে পারে৷ তাতে লিস্টিং গেন হলে মুনাফা, আর তা না হলে লস৷ তবে, সিদ্ধান্ত একান্ত ব্যক্তিগত৷ বাজারের চলতি প্রথা যাই হোক না কেন, টাটা টেকনোলজিসের এই আইপিওকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রও তৈরি করতে শুরু করে দিয়েছেন বিনিয়োগকারীদের একাংশ৷ এছাড়া, যারা আবেদন করেও আইপিও পাননি, তাঁরা চাইলেও পরবর্তী সময়ে এই স্টক কিনতে পারেন৷ তবে, শুরুতেই কতটা লিস্টিং গেন হয়, তার উপর নির্ভর করছে এই স্টক কেনার ভাবনা৷
এক্ষেত্রে মনে রাখা জরুরি, শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে গেলে অবশ্যই টেকনিক্যাল, ফান্ডামেন্টাল এবং ঝুঁকির দিক বিবেচনা করেই হবে৷ ট্রেডিং করার আগে প্রয়োজনে স্টক মার্কেট বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিন৷ LIVE শেয়ার বাজারে শিক্ষামূলক টেলিগ্রাম চ্যানেলে যুক্ত হতে পারেন আপনিও৷ ট্রেডিং দক্ষতা বাড়াতে যুক্ত হতে পারেন Options Calls – Nifty & Bank Nifty Calls – Index Options Trading— এই টেলিগ্রাম চ্যানেলে৷ https://t.me/NiftyBankNiftyIndexOptionsCalls