নয়াদিল্লি: বড় হয়ে প্রতিষ্ঠা হওয়ার স্বপ্ন তো অনেকেই দেখেন৷ কিন্তু, লক্ষ্য স্থির রেখে কতজন পারেন এগিয়ে যেতে? যাঁরা পারেন, তাঁরাই তো ‘বাজিগর’৷ এমনই এক স্বপ্নের উড়ান ভরার কাহিনি লেখা রয়েছে উত্তরাখণ্ডের বুকে৷ যিনি কিনা শুধু স্বপ্নের পিছনে দৌড়ননি, তা পূরণও করেছেন। পরিশ্রমের সামনে মাথা নুইয়েছিল সাফল্য৷
আরও পড়ুন- ২২ তারিখ পর্যন্ত মেয়াদ! ‘ছেড়ে দেব’, বাংলো খালির নির্দেশে পাল্টা জবাব রাহুলের
ছোট থেকেই আইপিএস অফিসার হতে চেয়েছিলেন তৃপ্তি। আইপিএস হওয়ার লক্ষ্যে একের পর এক আকর্ষণীয় চাকরির প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছিলেন নিদ্বিধায়৷ তবে এর জন্য অবশ্য কোনও আফসোস নেই তাঁর। বরং সেই হাতছানিতে সাড়া না দিয়েই করতে পেরেছিলেন লক্ষ্যপূরণ!
উত্তরাখণ্ডের আলমোরার বাসিন্দা তৃপ্তি ছোট থেকেই পড়াশোনার পরিবেশে বেড়ে ওঠেন। পরিবারের অধিকাংশ সদস্যই শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত। তাই পড়াশোনার প্রতি আলাদা ঝোঁক ছিল তাঁরও। ৪ ভাইবোনের মধ্যে তৃপ্তিই সবচেয়ে বড়৷ প্রথমে বীরশেবা স্কুল ও পরে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় থেকে স্কুলের পাঠ শেষ করেন৷ দ্বাদশ শ্রেণির পাশ করার পর পন্তনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিটেক পাশ করেন তৃপ্তি। বিটেক নিয়ে পড়লেও, প্রথম থেকেই তাঁর লক্ষ্য ছিল আইপিএস অফিসার হওয়া।
শুরু হয় আইপিএস হওয়ার প্রস্তুতি৷ পাশাপাশি একই সঙ্গে বিভিন্ন সরকারি পরীক্ষাতেও অংশ নিতে থাকেন তিনি। তাতে সাফল্যও আসতে থাকে ধারাবাহিক ভাবে। পর পর ৬টি সরকারি চাকরির পরীক্ষায় পাশ করেছিলেন তৃপ্তি। এর মধ্যে ছিল ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর চাকরিরও৷ কিন্তু কোনও চাকরিই তিনি গ্রহণ করেননি। কারণ আইপিএস হওয়ার স্বপ্ন পূরণে তিনি ছিলেন অবিচল৷ তাই, নিঃসঙ্কোচে ফিরিয়ে দেন সব চাকরির প্রস্তাব৷
শুধু সরকারি চাকরিই নয়, একাধিক নামী বেসরকারি সংস্থার তরফেও চাকরির প্রস্তাব এসেছিল তৃপ্তির কাছে। তবে কোনও প্রস্তাবই তাঁর মন বদলাতে পারেনি৷
সেই সময় দেশে রাষ্ট্রপতির পদে ছিলেন এপিজে আব্দুল কালাম। তদানীন্তন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে একবার দেখা করার সুযোগ আসে তৃপ্তির কাছে। ওই সাক্ষাতে তাঁকে হাতে লেখা একটি চিঠি দিয়েছিলেন কালাম। ওই চিঠিতে লেখা ছিল নানা অনুপ্রেরণামূলক কথা৷ রাষ্ট্রপতির সেই চিঠি আরও বেশি করে অনুপ্রাণিত করেছিল তৃপ্তিকে৷ ২০১৩ সালে প্রথম বার পরীক্ষায় বসেই ইউপিএসসি-তে সফল হন তিনি। তাঁর ব়্যাঙ্ক ছিল ১৬৫।
পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধূলাতেও পটু ছিলেন তৃপ্তি। জাতীয় স্তরে ১৬ এবং ১৪ কিমি ম্যারাথনে স্বর্ণপদক রয়েছে তাঁর ঝুলিতে৷ এখানেই শেষ নয়, তাইকোন্ডো এবং ক্যারাটেতেও প্রশিক্ষণ রয়েছে তাঁর। তৃপ্তির এই সাফল্য অনেককেই অনুপ্রাণিত করে।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>