স্টার লিঙ্ক নিয়ে মাস্ক-মুকেশের ‘কোল্ড ওয়ার’

স্টার লিঙ্ক নিয়ে মাস্ক-মুকেশের ‘কোল্ড ওয়ার’

 কলকাতা: বেশ কিছুদিন ধরেই ভারতের বাজারে তাঁর স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড পরিষেবা সংস্থা স্টারলিঙ্ককে নিয়ে আসতে আগ্রহী মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক৷ আমেরিকায় সফররত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে গত মঙ্গলবার নিউইয়র্কে বৈঠকও হয় তাঁর৷ সেই সময় নমোর সামনে নিজের ইচ্ছার কথা জাহিরও করেন স্টারলিঙ্কের কর্ণধার৷ এখন স্টারলিঙ্ক যদি ভারতে আসে, তাহলে তার সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হবে মুকেশ আম্বানির রিলায়েন্স জিয়ো৷ ব্রডব্যান্ড দুনিয়ার হবে জোরাল টক্কর৷ খুব স্বভাবতই মুকেশের সংস্থা চায় না ভারতে স্টারলিঙ্ক আসুক৷ মাস্কের সংস্থাকে আটকাতে তাই বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে রিলায়েন্স জিয়ো৷  

ভারতে স্যাটেলাইট ব্রডব্র্যান্ড পরিষেবা আনতে চেয়ে ইলন মাস্ক বলেন, ‘‘ইন্টারনেট পরিষেবা নেই বা থাকলেও খুব জোরে চলে না সেই সকল প্রত্যন্ত গ্রামগুলির পক্ষে সহায়ক হতে পারে তার সংস্থা৷’’ ভারতে পরিষেরা পৌঁছে দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও, ভারত সরকারের স্পেকট্রাম বন্টন প্রক্রিয়া নিয়ে মুকেশ আম্বানির সংস্থার সঙ্গে যে তাদের মতপার্থক্য রয়েছে, সে কথা উল্লেখ করেননি টেসলা-কর্তা৷ স্যাটেলাইট পরিষেবা নিয়ে বিশ্বের দুই ধনকুবেরের মধ্যে এখানেই মূল বিবাদ৷ কেন্দ্রের কাছে স্টারলিঙ্কের দাবি, স্পেকট্রাম নিলামের পরিবর্তে গোটা বিশ্বে যে ভাবে সংস্থাগুলির মধ্যে তা বন্টন করা হয়, সেই পন্থা অনুসরণ করা হোক৷ টুইটার কর্তা মনে করেন, স্পেকট্রামের মতো প্রাকৃতিক সম্পদ বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে ভাগ করে দেওয়া প্রয়োজন৷ কারণ যখনই স্পেকট্রাম নিলাম হবে, তখনই সংস্থাগুলিকে নির্দিষ্ট অঞ্চলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে হবে৷ এতে আদতে পরিষেবার খরচ বাড়বে৷ 

এ প্রসঙ্গে স্টারলিঙ্কের উল্টো সুর আম্বানির জিয়োর৷ স্পেকট্রাম বন্টন নয়, নিলামের পক্ষে সওয়াল করেছেন তাঁরা৷ এপ্রসঙ্গে সরকারের কাছে নিজেদের মতও জানিয়েছে জিয়ো৷ ভারতীয় সংস্থার মতে, বিদেশি স্যাটেলাইট পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলি ভয়েস এবং ডেটা পরিষেবা দিয়ে চিরাচরিত টেলিকম পরিষেবা সংস্থাগুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামতে পারে৷ সেই কারণেই স্পেকট্রান নিলাম হওয়াটা জরুরি৷ 

ভারতের বাজারে জিয়ো যে স্টারলিঙ্ককে একচুল জমিও সহজে ছাড়বে না, সে সম্পর্কে ওয়াকিবহাল অনেকেই৷ এক কেন্দ্রীয় আধিকারিক বলেন, ‘কেন্দ্র যাতে বিদেশি সংস্থাগুলির দাবি মেনে না নেয়, তার জন্য চাপ বহাল রাখবে রিলায়েন্স৷’ তবে ইলন মাস্কের পাল্লা যে ক্রমেই ভারী হচ্ছেস সে কথাও স্বীকার করেন তিনি৷ 

২০২১ সালে ভারতে প্রথম স্টারলিঙ্ককে লঞ্চ করার চেষ্টা করেন মাস্ক৷ এর দু’বছর পর তাঁরা ফের ভারতে ব্যবসা ফাঁদতে উদ্যোগী হয়েছেন৷ ২০২১ সালে তাদের কাছে লাইসেন্স ছিল না৷ তাসত্ত্বেও পরিষেবা দিতে বুকিং নেওয়া শুরু করেছিল৷ ইলনের সংস্থা৷ তবে পরিস্থিতি অনেকটাই পাল্টেছে৷ স্টার লিঙ্কের পাশাপাশি টেসলার বৈদ্যুতিন গাড়ি কারখানা নিয়েও আশ্বাস দিয়েছেন মাস্ক৷ অন্যদিকে, স্পেকট্রান নিলাম নিয়ে স্টারলিঙ্কের সঙ্গে একমত অ্যামাজনের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট উদ্যোগ, প্রোজেক্ট কুইপার ও ইউকে সরকারের ওয়ানওয়ে৷  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − 9 =